৭ম আসমানের বায়তুল মামুর থেকে কিছু পড়লে কাবার উপরে পড়বে:
হযরত আদম আলাইহিস সাল্লাম যখন জান্নাতে থাকতেন তখন উনি ফেরেশতাদের তাওয়াফ করার স্থান বায়তুল মামুর কে লক্ষ্য করেছিলেন। দুনিয়াতে আসার পর হযরত আদমের ইচ্ছা হয় এই পৃথিবীর মাটিতেও এরকম একটা বায়তুল মামুর থাকবে যেখানে উনার সন্তানরা নিয়মিত তাওয়াফ করবে।
মেরাজ রজনীতে রাসূলাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও বায়তুল মামুর কে দেখেছিলেন। -“
এরপর আমাকে বায়তুল মামুরে উঠান হল। বললামঃ হে জিবরাঈল! এ কি? তিনি বললেন, এ হচ্ছে ‘বায়তুল মামুর’। প্রত্যহ এতে সত্তর হাজার ফেরেশতা তাওয়াফের জন্য প্রবেশ করে। তারা একবার তাওয়াফ সেরে বের হলে কখনও আর ফের তাওয়াফের সুযোগ হয় না তাদের। ” গ্রন্থঃ সহীহ মুসলিম,
অধ্যায়ঃ ১/ কিতাবুল ঈমান হাদিস নাম্বার: 313 ] আর কাবা ঘর হল বায়তুল মামুরের ঠিক সোজাসুজি নিচে। কিন্তু দুনিয়ার জীবনে যেহেতু আমরা আল্লাহর আরশকে সামনে পাবো না ও আল্লাহর আরশের সামনে সিজদা দিতে পারবো না তাই আমরা মুসলমানরা এই কাবা ঘরের চতুর্পাশ্বে একসাথে তাওয়াফ করি। কারন কাবাঘর হচ্ছে দুনিয়ায় বায়তুল মামুরের প্রতিনিধি। ফেরেশতাদের মূল ইবাদতের ক্ষেত্র যেমন বায়তুল মামুর ঠিক তেমনি আমাদের জন্য কাবাঘর। ফেরেশতারা যেমন আল্লাহ্র আরশ ও বায়তুল মামুরকে কেন্দ্র করে তাওয়াফ করে ঠিক তেমনি আমরাও কাবাঘর কে কেন্দ্র করে তাওয়াফ করি। কাবা ঘর হচ্ছে আল্লাহর আরশের একদম নিচে। কাবা ঘর হচ্ছে আল্লাহর ঘর। কাবা ঘর হচ্ছে দুনিয়াতে আল্লাহর আরশের প্রতিনিধি। আল্লাহর আরশ কে কেন্দ্র করে যেমন এই মহাবিশ্বের সব গ্রহ নক্ষত্র ঘুরছে ঠিক তেমনি আমরা মুসলমানরা এক সাথে এই কাবা ঘরের চতুর্পাশ্বে ঘুরি। আর এটাকেই তাওয়াফ বলে। আর এই তাওয়াফ করার আমলটা আল্লাহ সুবহানাতায়ালা হযরত ইব্রাহিম কে শিখিয়ে দিয়েছেন।
কাবা ঘরের ইতিহাস
إِنَّ أَوَّلَ بَيْتٍ وُضِعَ لِلنَّاسِ لَلَّذِي بِبَكَّةَ
مُبَارَكًا وَهُدًى لِّلْعَالَمِينَ
(আল ইমরান - ৯৬)
নিঃসন্দেহে সর্বপ্রথম ঘর যা মানুষের জন্যে নির্ধারিত হয়েছে, সেটাই হচ্ছে এ ঘর, যা মক্কায় অবস্থিত এবং সারা জাহানের মানুষের জন্য হেদায়েত ও বরকতময়।
* ফেরেশতাদের কাবা ‘বায়তুল মামুর’এর পরিচয়ঃ
মিরাজের রাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ৭ম আসমানে বায়তুল মামুরে
ঠেস দিয়ে বসাবস্থায় হযরত ইবরাহীম (আঃ) কে দেখেছিলেন।
হযরত কাতাদাহ, রবী ইবনে আনাস ও সুদ্দী (রহ:) বলেন, আমাদের কাছে বর্ণনা করা হয়েছে যে, একদিন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের বলেছেন,
”তোমরা কি জান, বায়তুল মামুর কী? তাঁরা বললেন, মহান আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভালো জানেন। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,
(বায়তুল মামুর) হল- ৭ম আসমানে একটি মসজিদ আছে কা’বা ঘরের সোজাসুজি (উপরে)
তা যদি পড়ে যায়, তাহলে তা কাবারই উপরে পড়বে।
তাতে প্রত্যেক দিন সত্তর হাজার ফেরেশতা নামাজ পড়ে ও তাওয়াফ করে ।
তাঁরা যখন সেখান থেকে একবার বেরিয়ে যায়, তখন তারা আর সেখানে
প্রবেশের সুযোগ পায় না। (তাফসীরে ইবনে কাসীর)
হযরত আলী (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করা হল, ”বায়তুল মামুর কী? তিনি বলেন, ৭ম আকাশের উপর আরশের নিচে একটি ঘর, যাকে যূরাহ বলা হয়। এরই অপর নাম হল বায়তুল মামুর।”
(তাফসীরে কুরতুবী)
N:B: বায়তুল
মামুর থেকে কিছু পড়লে কাবার উপরে পড়বে। এটা
তখনি সম্ভব, যখন পৃথিবী স্থির থাকবে।
ঘূর্ণায়মান
পৃথিবীতে এটা সম্ভব নয়।
Comments
Post a Comment