চলমান সূর্যের গতি রোধ করার তিনটি ঘটনা:


 


ঘটনা-১ (ইউশা বিন নুন):

সময় গণনার মাধ্যম সূর্যকে থামিয়ে দিয়ে সময়ের গতি থামিয়ে দেওয়া হয়েছিল ইউশা ইবনে নুন (.)-এর সময় আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.) বলেন, ‘... তারা অভিযান পরিচালনা করল, তারা আসরের সময় বা তার নিকটবর্তী সময়ের জনপদের নিকটবর্তী হলো তিনি (ইউশা ইবনে নুন) সূর্যের উদ্দেশে বললেন, নিশ্চয়ই তুমি আদিষ্ট এবং আমি আদিষ্ট হে আল্লাহ! আপনি একে (সূর্য) আমাদের ওপর স্থির রাখুন তাকে স্থির রাখা হলো যতক্ষণ না আল্লাহ তাদের বিজয় দান করেছিলেন’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৩১২৪)

অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘মানুষের ওপর সূর্যকে কখনো স্থির রাখা হয়নি, তবে ইউশা (.)-এর জন্য রাখা হয় যে রাতে তিনি বায়তুল মোকাদ্দাসে সফর করেন’ (ইবনুল কায়্যিম জাওজি, ফাদায়িলুল কুদস, পৃষ্ঠা. ১১৩)

সূর্যের গতি থেমে যাওয়ার ঘটনা
মুসা ইবনে নুন ইব্রাহিম ইবনে ইউসুফ ইয়াকুব ইবনে ইসহাক ইবনে ইব্রাহিম খলিলুল্লাহ হযরত মুসা আঃ এর পরবর্তী একজন নবী তিনি তীহ ময়দানে থেকে বনী ইসরাঈলদেরকে বের করে আনেন এবং যুদ্ধ অবরোধের পরে তাদেরকে নিয়ে বায়তুল মোকাদ্দাসে প্রবেশ করেন বিজয় যখন আসন্ন তখন সময় ছিল শুক্রবার আসরের শেষ সময় একটু পরেই সূর্য ডুবে গেলে শনিবার এসে পড়বে এবং তখন আর যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না কারণ শনিবারে যুদ্ধ করা তাদের ধর্মে নিষিদ্ধ ছিল তিনি সূর্যের দিকে তাকালেন এবং বললেন, হে সূর্য, তুমি আল্লাহর আদেশক্রমে অগ্রসর হচ্ছো, আর আমিও আল্লাহর নির্দেশ ক্রমে শত্রুর সাথে যুদ্ধ করছি তারপর বললেন, হে আল্লাহ, আমার জন্য সূর্যকে থামিয়ে দিন সূর্য কে আটকে রাখুন সুতরাং আল্লাহ সূর্যকে আটকে রাখেন এবং শহর পূর্ণভাবে জয় হওয়ার পর তা অস্ত যায় মুসলিম শরীফ এই আব্দুর রাজ্জাক সূত্রে আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সা বলেছেন, অতীতকালে একজন নবী একটি যুদ্ধ পরিচালনা করেন আসর নামাজ পড়ার পরেই বা তার কাছাকাছি সময়ে তিনি শহরের নিকটবর্তী হয়ে যান তখন তিনি সুর্যকে লক্ষ্য করে বললেন, হে সূর্য, আল্লাহ হুকুম পালন করছ, আমিও আল্লাহর নির্দেশ পালন করছি হে আল্লাহ, একে তুমি আমার জন্য কিছুক্ষণ আটকে রাখো সুতরাং আল্লাহ সূর্যকে আটকে রাখেন এবং তিনি শহর দখল করে নেন এই নবী হলেন ইউশা ইবনে নুন ইমাম আহমেদ আবু হুরায়রা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সা বলেছেন, কোন মানুষের খাতিরে সূর্যকে আটক রাখা হয়নি, কেবলমাত্র ইউশা ইবনে নুন এর ব্যতিক্রম তিনি যখন বাইতুল মোকাদ্দাসে অভিযানে যান তখন সূর্যকে অস্ত যেতে দেয়া হয়নি

ঘটনা- (আলী রা:):

একদা রাসূলুল্লাহ সা এর উপর ওহী আসছিল তখন তার শির মোবারক ছিল হযরত আলী রাঃ এর কোলে সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তিনি আর মাথা উঠালেন না এদিকে আলী রাঃ আসরের সালাত আদায় করেননি রাসূলুল্লাহ সা তখন আল্লাহর নিকট দোয়া করলেন হে আল্লাহ, সে তো আপনার আনুগত্য আপনার রাসূলের আনুগত্য করছিল সুতরাং সূর্যকে কিছুটা পশ্চাতে নির্ধারিত করে দিন আল্লাহ তাই করলেন সূর্যকে প্রত্যাবর্তন করে দিলেন হযরত আলী আসরের সালাত আদায় করার পর সূর্য অস্ত গেল

 

ঘটনা-৩ (রাসুলুল্লাহ সা ):

ঘটনাটি ঘটেছিল রাসুলুল্লাহ সা এর ইসরা রজনীর প্রত্যুষে ঘটেছিল রাসূলুল্লাহ সা ইশরাক রজনীর পরবর্তী সকালের দিকে ঘটনা শোনালেন এবং বললেন, রাত্রে আমি মক্কা থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস পর্যন্ত সফর করে এসেছি কুরাইশরা বায়তুল মুকাদ্দাস সম্পর্কে তাকে প্রশ্ন করল তখন আল্লাহ তাআলা রাসূলকে বায়তুল মোকাদ্দাসকে উদ্ভাসিত করে দেন এবং তা দেখে দেখে তিনি তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন এরপর কুরাইশরা তাদের এক বাণিজ্য কাফেলা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল যারা সিরিয়া থেকে নিয়ে মক্কা অভিমুখে আসছিল রাসূলুল্লাহ সা জানালেন সূর্যের আলো থাকতে থাকতেই তারা মক্কায় পৌঁছে যাবে কিন্তু পথে কাফেলার কোন কারণে দেরি হওয়ায় আসতে বিলম্ব হয় আল্লাহ তাআলা তখন সূর্যের গতি রোধ করে দেন এবং আসরের সময় তারা মক্কায় পৌঁছে যায় এই ঘটনা তারযিয়াদাতগ্রন্থে উল্লেখ করেছেন হযরত আলীর জন্য সূর্য আটক হওয়ার বর্ণনা করেছেন আসমা বিনতে আবু হুরায়রা স্বয়ং হযরত আলী
সূত্র: আল্লামা ইবনে কাসীর প্রণীত আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া কিতাব ষষ্ঠ খন্ড 418 পৃষ্ঠা


N:B: উপরোক্ত তিনটি ঘটনার দ্বারা স্পষ্টই বুঝা যায় যে সূর্য গতিশীল এবং পৃথিবী স্থির। অর্থাৎ পৃথিবীকে কেন্দ্র করে সূর্য আবর্তিত হচ্ছে।  আর এটাই বাস্তব সম্মত, বৈজ্ঞানিক ও যুক্তি সঙ্গত।

Comments

Popular posts from this blog

পোলিও টিকাতে মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় বানরের কিডনি:

আপনার শিশুকে টিকা দিতে চান? তার আগে সত্য জানুন!

ডাইনোসর নিয়ে যত জল্পনা কল্পনা: