মেসওয়াক (বিজ্ঞান / সুন্নাহ) VS টুথপেস্ট ও টুথব্রাশ (অপবিজ্ঞান):
ফ্লোরাইড এক ধরনের বিষ এটা হিটলারের বিজ্ঞানীরা নাজি বন্দী শিবিরগুলোতে বন্দীদের উপর প্রয়োগ করে সফলতা লাফ করেছিল। এটা যেটা করে আমাদের মস্তিস্কের পিটুইটারী গ্লান্ড বা আমরা যেটাকে তৃতীয় নয়ন বলে থাকে স্পিরিচুয়াল জগতে ঢোকার পথ যেটা সেটাকে ক্ষতিগ্রস্থ করে।
তারা মেডিকেল এডুকেশনে ডাক্তারদের শেখাল ফ্লোরাইড আসলে দাঁতের সুরক্ষায় ভাল কাজ করে। এবার তাঁরা টুথপেষ্টে ফ্লোরাইড মেশানো শুরু করল। আমাদের দাঁতের সাথে মস্তিস্কের কানেকশন একেবারে সরাসরি। প্রতিটি দাঁতের সাথে সুক্ষ সুতার মত নার্ভগুলো ব্রেইনের সাথে কানেক্টেড। এ কারনে তৃতীয় নয়ন বা পিটুইটারী গ্লান্ডের সাথে দাঁতের খুবই ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে।
১৯৩৮ সালে ড. এইচ ট্রেন্ডলি ডিন নামের এক আমেরিকান দন্ত বিশেষজ্ঞ দাবি করে যে খাবার পানিতে ফ্লোরাইডের উপস্থিতি দাঁতের ক্ষয়রোধে সাহায্য করে। ব্যস, উন্নত দেশগুলো সব পানিতে ফ্লোরাইডযুক্ত করতে থাকে। ব্যবসায়ীরা
টুথপেস্ট, টুথপাউডারে যোগ করতে থাকে ফ্লোরাইড। কিন্তু ধীরে ধীরে এর বিষক্রিয়া টের পাওয়া যেতে থাকে। শুরু হয় গবেষণা। এই বিষয়ে সবচেয়ে বড় গবেষণাটি হয় ১৯৮৬-৮৭ সালে আমেরিকাতে। বেরিয়ে আসে ভয়ানক সব তথ্য।
গবেষণায় দেখা যায় ফ্লোরাইড দাঁতের ক্ষয়রোধে তেমন কোন ভুমিকা তো রাখেই না বরং জন্ম দেয় হাজারটা সমস্যার। ফ্লোরাইডে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় দাঁত ও হাড়।
দাঁতে ফ্লোরোসিস দেখা দেয়। এতে এনামেলের মসৃণ স্তর নষ্ট হয়ে যায়, দাঁতের রং নষ্ট হয়ে যায়, ছোপ ছোপ দাগ দেখা দেয়, সর্বোপরি দাঁত ভঙ্গুর হয়ে যায়। এর মাত্রা বেশি হলে দাঁতে ফ্লোরোসিসের
তীব্রতা বৃদ্ধি পায়।
ফ্লোরাইড প্রজনন ক্ষমতার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। ফ্লোরাইডের উপস্থিতিতে অ্যালুমিনিয়ামের জৈবিক প্রভাব বেড়ে যাওয়ার কারণে মস্তিষ্কে অ্যালুমিনিয়াম
সঞ্চিত হওয়ার পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যায় যা অ্যালযাইমার্স (বিস্মরণ রোগ) রোগটিকে ত্বরান্বিত করে বলে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন। এছাড়া ফ্লোরাইডের মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতির কারণে শরীরের বেশ কিছু এনজাইমের কার্য ক্ষমতায় ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। ফলে দেখা দিতে পারে স্নায়বিক দুর্বলতা।
ফ্লোরাইডের সরাসরি সংস্পর্শে এলে শরীরের কোষকলা ধ্বংস হতে পারে। শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে বা মুখ ও ত্বকের মাধ্যমে বেশিমাত্রায় ফ্লোরাইড গ্রহণ শ্বাসতন্ত্র, পাকস্থলী ও ত্বকে উত্তেজনা সৃষ্টি করে ক্ষতি সাধন করতে পারে। ফলে কালো পায়খানা, রক্তবমি, বেহুঁশ হওয়া, বমি বমি ভাব লাগা, অগভীর শ্বাস-প্রশ্বাস, পাকস্থলীর পেশিতে খিঁচুনি বা ব্যথা, কাঁপুনি, অস্বাভাবিক উত্তেজনা, লালা নিঃসরণ অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়া, দুর্বলতা, কোষ্ঠকাঠিন্য,
ক্ষুধামন্দা, ত্বকে র্যাশ দেখা দেওয়া, মুখে অথবা ঠোঁটে ক্ষত বা অসাড়তা, ওজন কমা ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দিতে পারে।
রাসুল সা: বলেছেন, “আমি দুইটা জিনিস ফরয করলাম না উম্মতের কষ্ট হবে বলে, একটি হল তাহাজজুদের নামায এবং আরেকটি হল মেসওয়াক।“ মেসওয়াক এতই গুরুত্ব রাখে। কেন রাখে সেটা তো বললাম। আপনার নিজেরা চাক্ষুস প্রমান হাতে নাতেই পাবেন যদি আজ থেকে আপনারা টুথপেষ্ট বাদ দিয়ে মেসওয়াক শুরু করেন। ১২০ দিনের মাথায় যে পরিবর্তন আপনারা নিজেদের ভিতর দেখতে পাবেন তার জন্য আপনারা আমাকে পরে ধন্যবাদ দিয়েন।
এজন্য হাদিসে বলা হয়েছে মেসওয়াক করে সালাত পড়লে সে সালাতের মর্তবা ৭০ গুন বৃদ্ধি পায়। মর্তবা বলতে এখানে আপনার সংযোগ বা স্পিরিচুয়াল উচ্চতা বোঝানো হয়েছে। যাদের পড়া মুখস্ত হয় না স্বরন শক্তি কম তারাও জাদুকরী ফল লাভ করবেন এটাতে ১০০ % । কিন্তু শর্ত হল সুন্নত মেনে মেসওয়াক করতে হবে। যারা অবিশ্বাস করছেন তাঁরাও করে দেখতে পারেন ফলাফল হাতে নাতে পেয়ে যাবেন।
মেসওয়াক যেভাবে করতে হয়
>> মুখের ডানদিক থেকে মেসওয়াক শুরু করা।
>> দাঁতের প্রস্থের দিক থেকে মেসওয়াক করা। অর্থাৎ দৈঘ্যের দিক থেকে (উপর-নিচে) নয়।
>> ডান হাতের কনিষ্ঠাঙ্গুলী মেসওয়াকের নিচে রেখে আর তর্জনী, মধ্যমা ও শাহাদাত আঙ্গুল মেসওয়াকের ওপর রেখে বৃদ্ধাঙ্গুলীর পেট দ্বারা ভালভাবে ধরা।
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে এ নিয়মটি বর্ণিত রয়েছে।
মেসওয়াকের উত্তম সময়গুলো হলো-
>> ঘুম থেকে ওঠার পর মেসওয়াক করা।
>> অজুতে কুলি করার আগে মেসওয়াক করা। অনেকে ওজুর শুরু করার আগে মেসওয়াক করার কথা বলেছেন।
>> নামাজ আদায়ের আগে মেসওয়াক করা।
>> কুরআন-হাদিস পড়ার আগে মেসওয়াক করা। কুরআন-হাদিস পড়ার আগে মেসওয়াক করাকে অনেকে মুস্তাহাব বলেছেন।
>> মানুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের আগে মেওয়াক করা।
>> কোনো মজলিসে যাওয়ার আগে মেসওয়াক করা।
>> ঘরের প্রবেশ করে মেসওয়াক করা।
>> মুখে দুর্গন্ধ ছড়ালে মেসওয়াক করা।
>> দাঁতে হলুদ আবরণ বা ময়লাযুক্ত হলে মেসওয়াক করা।
>> ক্ষুধা লাগলে মেসওয়াক করা।
>> জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে মেসওয়াক করা।
পরিশেষে…
মেসওয়াক করার ফলে মানুষের দারিদ্র্যতা দূর হয়ে সচ্ছলতা আসে এবং উপার্জন বাড়ে। পাকস্থলী শক্তিশালী হয়, জ্ঞান ও স্মরণ শক্তি বাড়ে,কুলুষমুক্ত অন্তর তৈরি হয়, ফেরেশতারা মেসওয়াককারীর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে। সর্বোপরি মেসওয়াকের ফলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে উল্লেখিত নিয়মে ও সময়ে মেসওয়াক করার তাওফিক দান করুন। প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রিয় আমলটি বেশি বেশি করার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত ফজিলত ও উপকারিতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
Comments
Post a Comment