পৃথিবীতে একটাই সত্য ধর্ম ছিল তা হল এক স্রষ্টার ইবাদাত করা। তাহলে এখন পৃথিবীতে এত ভিন্ন ধর্মমত কেন? আল্লাহ জ্বীন ও মানবজাতিকে পরীক্ষা করার জন্য বিতাড়িত জ্বীন-শয়তানদের কেয়ামতের আগ পর্যন্ত কিছু ক্ষমতা দিয়েছেন এবং এই শয়তানরাই পৃথিবীবাসী জ্বীন ও মানবজাতিকে ক্ষমতা দেখিয়ে এক আল্লাহর ইবাদাত করার সরল পথ থেকে সরিয়ে তাদের ও তাদের বংশধরদের “দেবদেবী” হিসেবে পূজা করিয়ে পথভ্রষ্ট করেছে। ইদানীং কিছু আধুনিক পন্ডিত পাগান-পৌওলিকদের সাথে ইসলামের সাদৃশ্য খুঁজে বেড়ায়। কিন্তু রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তাদের সাথে ইসলাম ধর্মের সাদৃশ্য খুঁজেননি বরং তাদের সাথে মুসলমানদের পার্থক্য বুঝলেই ধর্মকে আরো ভালোভাবে বোঝা সম্ভব। বর্তমানের মানুষের ধর্মমত অনুযায়ী তিন ভাগে ভাগ করা যায়- ১) মুসলমান- যারা প্রকৃত স্রষ্টার প্রতি বিশ্বাসী; ২) নাস্তিক - যারা স্রষ্টায় বিশ্বাসী নয়, এবং ৩) বাকি সবাই অবাধ্য জ্বীন-শয়তানদের উপাসক যাদের দেবদেবী হল আল্লাহর অবাধ্য জ্বীন-শয়তানরা।
পাগান ও পৌওোলিক হল যারা আল্লাহর বদলে জ্বীন-শয়তানদের দেবদেবী ও মূর্তি হিসেবে পূজা করে। হিন্দুধর্ম, চীনা ঐতিহ্যগত ধর্ম, জাপানী শিন্টো ইত্যাদি পৌওোলিক ধর্মের অন্তর্ভুক্ত। আর পাগান ধর্ম হল প্রাচীন গ্রীক ধর্ম Hellenism, Wicca, প্রাচীন মিশরীয় ধর্ম Kemetism, প্রাচীন আরবের পাগান ধর্ম, প্রাচীন ইনকার ধর্ম, প্রাচীন মায়ান সভ্যতার ধর্ম ইত্যাদি। ত্রছাড়াও আছে জৈন, শিক ও বৌদ্ধ ধর্ম যারা জ্বীন-শয়তানদের থেকে জ্ঞানপ্রাপ্ত। এখন আলোচনা করছি ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে জ্বীন-শয়তানদের উপাসক পাগান ও পৌওোলিকদের ধর্মমত সম্পর্কেঃ
বহু অবাধ্য সম্প্রদায়ে আল্লাহ সর্তককারী হিসেবে নবী পাঠিয়েছিলেন যেন তারা বিপথগামী হয়ে জ্বীন-শয়তানদের উপাসনায় নিয়োজিত না হয় কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই সেসব জ্বীন উপাসকরা নবী আর সর্তককারীদের অনেক অত্যাচার কিংবা হত্যা করেছিল। ইদানীং কিছু আধুনিক পন্ডিতরা বলে হিন্দুদের রাম বা গৌতম বুদ্ধ নাকি মুসলমানদের নবী ছিল যা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। পৃথিবীতে সমস্ত নবী একটাই ধর্ম (ইসলাম=শান্তি) এবং একই তাওহীদ (প্রকৃত স্রষ্টা একমাত্র আল্লাহর ইবাদত) প্রচার করতে এসেছিলেন; যা সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেনঃ “তাদের কাছে তাদের প্রতিপালকের নিদর্শনাবলী থেকে কোন নিদর্শন আসেনি; যার প্রতি তারা বিমুখ হয় না। অতএব, অবশ্য তারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে যখন তা তাদের কাছে এসেছে। বস্তুতঃ অচিরেই তাদের কাছে ঐ বিষয়ের সংবাদ আসবে, যার সাথে তারা উপহাস করত।”(সূরা আল আন-আম) “আল্লাহ তাঁর রসূলকে পথ নির্দেশ ও সত্যধর্ম নিয়ে প্রেরণ করেছেন, যাতে একে সব ধর্মের উপর প্রবল করে দেন যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।” [সূরা আছ-ছফ, আয়াতঃ ৯] “তাদেরকে যখন বলা হয়, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তোমরা তার অনুসরণ কর, তখন তারা বলে, বরং আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যে বিষয়ের উপর পেয়েছি, তারই অনুসরণ করব। শয়তান যদি তাদেরকে জাহান্নামের শাস্তির দিকে দাওয়াত দেয়, তবুও কি?” (Luqman: 21) যারা শয়তানের আরাধনা করেছে, তারাই মর্যাদার দিক দিয়ে নিকৃষ্টতর এবং সত্যপথ থেকেও অনেক দূরে। (Al-Maaida: 60) সুতরাং আপনার পালনকর্তার কসম, আমি অবশ্যই তাদেরকে এবং শয়তানদেরকে একত্রে সমবেত করব, অতঃপর অবশ্যই তাদেরকে নতজানু অবস্থায় জাহান্নামের চারপাশে উপস্থিত করব। (Maryam: 68)
সব ধর্মই যদি আগে এক ছিল তাহলে ইসলাম ধর্মে শয়তানের কথা উল্লেখ আছে কিন্তু পৌওোলিকদের শাস্ত্রে নেই কেন? পাগান-পৌওলিকরা ও জাদুকররা জ্বীন-শয়তানদের নানা নামের দেবদেবী হিসেবে অভিহিত করে। কিছু জ্বীন সাপের (বিশেষত Cobra, viper) বেশ ধারন করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, জ্বীনদেরকে প্রাচীন মিশরীয়রা Apep, প্রাচীন সুমেরীয়রা Ningizzida, হিন্দুরা Pāli সাপদেবী হিসেবে পূজা করে। আল্লাহ তাআলা বলেন, “এগুলো কতগুলো নাম বৈ নয়, যা তোমরা এবং তোমদের পূর্ব-পুরুষেরা রেখেছ। এর সমর্থনে আল্লাহ কোন দলীল নাযিল করেন নি। তারা অনুমান এবং প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে। অথচ তাদের কাছে তাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে নির্দেশ এসছে” (সূরা নাজমঃ ২৩)। মূর্তিপূজারী জ্বীন উপাসক সম্পর্কে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। আল্লাহর ইরশাদঃ "তারা যাদেরকে (জ্বীনদেরকে) আহবান করে তারাই (জ্বীনরা) তো তাদের প্রতিপালকের নৈকট্য লাভের উপায় সন্ধান করে" এর ব্যাখ্যায় বলেন, একদা একদল জ্বীন মুসলমান হলো। তাদের পূজা করা হতো। কিন্তু পূজাকারী এ লোকগুলো তাদের পূজাই আকড়ে থাকলো। অথচ জ্বীনের দলটি ইসলাম গ্রহণ করেছে। [ সহীহ মুসলিম , হাদিস নাম্বার: ৭২৭৩]
হিন্দুধর্মে তাদের দেবতা Shivs আর কালী হল আল্লাহর অবাধ্য জ্বীন-শয়তান যারা পৃথিবীতে এসেছিল অন্য জগত থেকে বিশেষ ধরনের যান (UFO) ব্যবহার করে। জ্বীন-শয়তানের UFO যান হিন্দুদের সংস্কৃত মহাকাব্যে “flying vimanas” (flying wheeled chariots) হিসেবে উল্লেখিত আছে। জ্বীন-শয়তানরা যে তাদের যাতায়তকারী যান (mechanical birds) দিয়ে তাদের সম্প্রদায়ে এসেছিল তা হিন্দুদের মহাভারতেও উল্লেখ করা আছেঃ 1.164.47-48:47. “kṛṣṇáṃ niyânaṃ hárayaḥ suparṇâ / apó vásānā dívam út patantitá âvavṛtran sádanād ṛtásyâd / íd ghṛténa pṛthivî vy ùdyate48. dvâdaśa pradháyaś cakrám ékaṃ / trîṇi nábhyāni ká u tác ciketatásmin sākáṃ triśatâ ná śaṅkávo / 'rpitâḥ ṣaṣṭír ná calācalâsaḥ” -এর মানে (Swami Dayananda Saraswati অনুবাদ)"jumping into space speedily with a craft using fire and water ... containing twelve stamghas (pillars), one wheel, three machines, 300 pivots, and 60 instruments”. হিন্দু সম্প্রদায়ে আসা জ্বীন-শয়তানের যান Vimana (Winged flying machine) থেকে বর্তমানের “বিমান” শব্দের উৎপওি আর সেই Vimana (Winged flying machine) এর নকশার আকৃতিতে নির্মাণ করা হয় তাদের অনেক মন্দির।মহাভারত ও হিন্দুদের নানা গ্রন্থে ত্রই জ্বীন-শয়তানের যানকে (chariots) নানা ভাবে বর্ণনা দেয়া হয়েছে যেমনঃ “They roar like off into the sky until they appear like comets”... “powered by winged lighting…it was a ship that soared into the air, flying to both the solar and stellar regions.” হিন্দুরা জ্বীনদের জগতকে “স্বর্গ” বলে বিবেচনা করে যেই স্বর্গ থেকে তাদের জ্বীন দেবতারা পৃথিবীতে আসাযাওয়া করে। Tantyua ও Kantyua ত্রর তিব্বতীয় গ্রন্থেও ত্রমন জ্বীনদের যানের কথা উল্লেখ করা হয়েছে “pearls in the sky” হিসেবে।প্রাচীন মিশরীয় Tulli Papyrus ত্র লেখা আছে ত্রকটি অদ্ভুত Fiery Disk ত্রসেছিল জ্বীনউপাসক Thutmose III সময়ে। ত্রছাড়াও প্রাচীন ইউরোপীয়দের গুহায় অঙ্কন করা হয়েছিল বহু জ্বীনদের যান।ত্রর ত্রকটি উদাহরণ হল অস্ট্রেলিয়ার Kimberley ত্রর native Aborigines প্রায় ৫০০০ বছর পূর্বে ত্রঁকেছিল তাদের দেবতা Wandijina (sky beings) যারা ছিল জ্বীন-শয়তান। আল্লাহ তাআলা বলেন, “তারা জ্বীনদেরকে আল্লাহর অংশীদার স্থির করে; অথচ তাদেরকে তিনিই সৃস্টি করেছেন।” ( সূরা আল আন-আম)
জ্বীনদের গায়ের রং একেকজনের একেক রকম। যেমনঃ কালো, নীলচে, সবুজ, সাদা ইত্যাদি। হিন্দু দেবতা কৃষ্ণকে কালো এবং যখন শিবকে সাদা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। হিন্দুদের মূর্তি আর ছবিতে তাদের দেবতা কৃষ্ণ, রাম শিবকে বেশির ভাগ সময় নীলচে ত্বক দেখানো হয়। এর আরেকটি অন্যতম কারন হতে পারে বেশিরভাগ সময় যখন জ্বীনদের চলাচলকারী যানগুলো থেকে তাদের দেবতারা যখন নামত তখন electromagnetic energy বিকিরনের কারনে তাদের দেবতাদের শরীরে নীল ও বিভিন্ন রংয়ের আভা দেখা যেত। আমরা জানি জ্বীনরা ধোয়াহীন শিখা থেকে তৈরি এবং জ্বীন এর শরীরের বর্ণালী এর ইনফ্রারেড অংশ থেকে শক্তি বিকিরণ করে। আর এই নীল আভা বিকিরণকারী জ্বীনরা হিন্দুদের দেবতা। হিন্দুদের দেবতারা মাথায় kiritas পড়ত যা বর্তমানের হেলমেটের (head gear) মত কারন আল্লাহর আদেশে ফেরেশতাদের নিয়ন্ত্রিত বজ্রপাত, বৃষ্টি ও সূর্যের অতিরিক্ত তাপবিকরণ থেকে বাচারঁ জন্য জ্বীন-শয়তানরা alien হেলমেটের ন্যায় kiritas ব্যবহার করত। কেন হিন্দু দেবদেবী (জ্বীন-শয়তান) বহু মস্তক কিংবা বহু হাত-পা বিশিষ্ট? কারন তাদের বহু মস্তক দিয়ে বুঝানো হয় তাদের বুদ্ধিমওা ছিল সাধারন মানুষের চেয়ে বহু গুণ। আর বহু অঙ্গ প্রত্যঙ্গ দিয়ে বুঝানো হয় সাধারন মানুষের চেয়ে তারা বহু গুণ শক্তিশালী। তাদের দেবদেবীরা (জ্বীন-শয়তানরা) সৃজনশীল ছিল যেমনঃ তাদের দেবতা কৃষ্ণ বাশিঁ বাঁজাত মানবজাতিকে আল্লাহর স্মরণের বদলে গানবাজনায় ব্যস্ত রাখার জন্য । তাদের দেবতাদের (জ্বীন-শয়তান) ছিল আল্লাহর বান্দাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য পদাতিক বাহিনী আর ফেরেশতাদের সাথে যুদ্ধের জন্য আধুনিক nuclear weapons ও atomic bomb ত্রর মত অস্ত্র। পুরাতত্ত্ববিদরা ভারতের রাজস্থানে (পশ্চিম যোধপুর) খুঁজে পেয়েছে radioactive ash যা প্রমাণ দেয় কয়েক হাজার বছর আগে সেখানকার প্রাচীন সভ্যতা ফেরেশতাদের সাথে যুদ্ধে atomic blast এর কারণে ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পাও ধ্বংস হয়েছিল ত্রমন nuclear explosion এর কারণে। “কতক মানুষ অজ্ঞানতাবশতঃ আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে এবং প্রত্যেক অবাধ্য শয়তানের অনুসরণ করে।শয়তান সম্পর্কে লিখে দেয়া হয়েছে যে, যে কেউ তার সাথী হবে, সে তাকে বিভ্রান্ত করবে এবং দোযখের আযাবের দিকে পরিচালিত করবে।”(সূরা হাজ্জ্ব)
হিন্দু দেবতা কৃষ্ণের ৮ জন স্ত্রী ছিল। আট স্ত্রী ছাড়াও তাদের দেবতা বিষ্ণুর অবতার এবং Dwarka রাজা হিসেবে প্রায় ১৬০০০ এর চেয়েও বেশি নামহীন স্ত্রীর কথা উল্লেখ আছে তাদের বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে। হিন্দুরা বিশ্বাস করে তাদের কিছু দেবতা (ফেরেশতা) ভালো আর কিছু দেবতা মন্দ (জ্বীন-শয়তান)। তারা তাদের ত্রকদল দেবতাকে (জ্বীন-শয়তানকে) মন্দরূপে অভিহিত করায় আল্লাহ বলেছেনঃ “আর আল্লাহর জন্য রয়েছে সব উত্তম নাম। কাজেই সে নাম ধরেই তাঁকে ডাক। আর তাদেরকে বর্জন কর, যারা তাঁর নামের ব্যাপারে বাঁকা পথে চলে। তারা নিজেদের কৃতকর্মের ফল শীঘ্রই পাবে”। (সূরা আল আ’রাফ)
অনেকেই “yoga” কে শুধুমাত্র শরীরচর্চা বলেই মনে করে কিন্তু yoga শুধুমাত্র শরীরচর্চাই নয় বরং এটি গভীর ধ্যানের সাথে জড়িত। আর বৌদ্ধ ও হিন্দুদের গভীর ধ্যান, প্রাচীন চীনের qigong অনুশীলন, মুদ্রা, মন্ত্র ইত্যাদি পাগান-পৌওলিকদের তাদের দেবতাদের (জ্বীন-শয়তানের) সাথে জ্বীনদের জগতে যোগাযোগ করার মাধ্যম।এই ধরনের চর্চা মুসলমানদের জন্য নিষিদ্ধ। তাদের চক্র সাধনা অনেকটা ouija board এর মত যা জ্বীনের জগতে নিজের আত্মাকে নিয়ে বিপজ্জনক খেলায় মেতে উঠার মত। যখন সালাতে “সূরা ফাতিহা”য় মুসলিমরা এক আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করে তখন হিন্দু আর পাগানরা পূজা ও তাদের উপাসনার সময় শয়তানদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে। হিন্দু মন্ত্রের একটি হল “Om namah shivaya (“I bow to Shiva”—Shiva being the inner Self, or true reality)” যার মানে তারা শিব (ক্বারিন জ্বীনের) কাছে মাথা নত করতে চায়। আল্লাহ বলেছেনঃ “অনেক মানুষ অনেক জ্বীনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা জ্বীনদের আত্নম্ভরিতা বাড়িয়ে দিত।” [সূরা আল জিন, আয়াতঃ ৬] “সে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে ডাকে, যে তার অপকার করতে পারে না এবং উপকারও করতে পারে না। এটাই চরম পথভ্রষ্টতা।সে এমন কিছুকে ডাকে, যার অপকার উপকারের আগে পৌছে। কত মন্দ এই বন্ধু (জ্বীন-শয়তান) এবং কত মন্দ এই সঙ্গী।” (সূরা হাজ্জ্ব) মুসলমানরা সালাতে “সূরা ফাতিহা”য় বলে “সকল প্রশংসা এক আল্লাহর” অন্যদিকে “ওম” একটি হিন্দু সংস্কৃত মন্ত্র যা শয়তানকে প্রশংসা করার মন্ত্র। আল্লাহ বলেছেনঃ “বল, তোমরা আল্লাহর ব্যতিত যাদের পূজা কর, তাদের বিষয়ে ভেবে দেখেছ কি?” “তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে যাদের পূজা কর, তারা কখনও একটি মাছি সৃষ্টি করতে পারবে না, যদিও তারা সকলে একত্রিত হয়। আর মাছি যদি তাদের কাছ থেকে কোন কিছু ছিনিয়ে নেয়, তবে তারা তার কাছ থেকে তা উদ্ধার করতে পারবে না, প্রার্থনাকারী ও যার কাছে প্রার্থনা করা হয়, উভয়েই শক্তিহীন।” (সূরা হাজ্জ্ব)
মানুষের সাথে নিয়োজিত ক্বারিন জ্বীনের সাথে যোগাযোগ করাকে হিন্দুরা তাদের রীতিনীতির অংশ হিসেবে চর্চা করে। তারা বিশ্বাস করে “পরমাত্মা”(ক্বারিন জ্বীনের সত্ত্বা) হল তাদের ভগবানের এক বিশেষ রূপ । প্রতিটি জীবের হৃদয়ে জীবাত্মা ও পরমাত্মা (ক্বারিন জ্বীনের সত্ত্বা) উভয়ই বতর্মান। হিন্দু ধর্মের Decimal System, hind numerals, গণিত, ভারতনট্টম আর শিবার ধ্বংসযজ্ঞের নাচের মুদ্রা ইত্যাদি আসলে জ্বীন-শয়তানের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম। বর্তমানে এলিয়েনবিশেষজ্ঞরা এ ধরনের চিহ্ন, ভঙ্গি, প্রতীক আর সংখ্যা ব্যবহার করে জ্বীনদের সাথে যোগাযোগ করে। নৃত্য শুধুমাত্র নৃত্য নয় তা বহন করে গুপ্ত ম্যাসেজ তাই নৃত্য মুসলিমদের জন্য নিষিদ্ধ যদিও না জেনে বর্তমানে কিছু মুসলিমরা তাদের স্কুলে নাচগান শেখে। অনেক ধর্মাবলম্বী বিশ্বাস করে নাচগানের মাধ্যমে তাদের স্রষ্টার কাছাকাছি আত্মাকে নিয়ে যাওয়া যায়। তারা আল্লাহ সম্পর্কে এমন ধারণা করছে যার সাথে আল্লাহর কোন সংযোগ নেই। “তারা আল্লাহর যথাযোগ্য মর্যাদা বোঝেনি। নিশ্চয় আল্লাহ শক্তিধর, মহাপরাক্রমশীল”।(সূরা হাজ্জ্ব) হিন্দুদের ভারতনট্টম নাচ শরীরের কেন্দ্রের অক্ষ থেকে জ্যামিতিক কোণীয় সম্পর্ক বর্ণনা করে যে অঙ্গভঙ্গিতে তারা দেবতাদের (জ্বীন-শয়তানের) সাথে সংযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে (geometric angular relationships from the axis of the body's center) তাই নৃত্য চলাকালে সেখানে ফেরেশতারা আসতে পারে না।
প্রাচীন হিন্দু ধর্মালম্বীরা গণিতে দক্ষ ছিল কারন সংখ্যা ছিল তাদের দেবতা জ্বীন-শয়তানদের সাথে যোগাযোগের একটি মাধ্যম যা mātrāmeru নামে পরিচিত ছিল। Chandahśāstra গ্রন্থে হিন্দুদের পন্ডিত Pingala binary number system এর কথা উল্লেখ করেছিল। Chakravala ছিল তাদের ব্যবহৃত algorithm। Aryabhatiya বইয়ে প্রাচীন হিন্দুদের জ্যোর্তিবিদ্যা সম্পর্কিত জ্ঞান প্রমাণ দেয় যে সেসময় তাদের দেবতারা (জ্বীন-শয়তান) মানুষের জগত ছাড়াও অন্য জগতে (জ্বীন জগতে) আসা-যাওয়া করত। জ্বীন থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান প্রাচীন হিন্দুদের চিকিৎসাবিদ্যা Ayurveda, agada-veda, sasya-veda (কৃষিবিদ্যা), sarpa-veda, vaimanika shastra (বিমান সম্বন্ধীয় জ্ঞান) হিসাবে পরিচিত ছিল। জ্বীন-শয়তান থেকে তারা পেয়েছিল nanotechnology এর মত নানান প্রযুক্তি।
কেন হিন্দুরা গরুকে পূজা করে? কারন গরু হল “ক্লোনিং” প্রযুক্তি ব্যবহার করে পৃথিবীতে মৃত্যুর পর জীবিত হওয়ার সূএ যা ছিল জ্বীন-শয়তান থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান। বিতাড়িত শয়তান আল্লাহকে বললঃ “তাদেরকে পথভ্রষ্ট করব, তাদেরকে আশ্বাস দেব; তাদেরকে পশুদের কর্ণ ছেদন করতে বলব এবং তাদেরকে আল্লাহর সৃষ্ট আকৃতি পরিবর্তন করতে আদেশ দেব। যে কেউ আল্লাহকে ছেড়ে শয়তানকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করে, সে প্রকাশ্য ক্ষতিতে পতিত হয়।” [সূরা আন নিসা, আয়াতঃ ১১৯] প্রাচীনকাল থেকে জ্বীন-শয়তানরা গরু অপহরণ করে তাদের যাতায়াতকারী যানে নিয়ে যেত। ত্রমনকি ১৯৭০ সালের বিদেশী পত্রিকাগুলোতেও ত্রমন গরুর নিখোঁজ সংবাদগুলো প্রকাশিত হত। কারন মানব এবং গরুর ভ্রূণ কোষকে সংমিশ্রিত করে হাইব্রিড কোষ তৈরি করতে পারে। হাইব্রিড কোষটি থেকে নতুন ক্লোন জ্বীন-মানবের সৃষ্টি হতে পারে। মানুষের মা যেমন পৃথিবীতে নতুন মানুষ নিয়ে আসে তেমনি গরু মাতাকে ব্যবহার করে নতুন জীবন পৃথিবীতে পাওয়া সম্ভব ক্লোনিং এর মাধ্যমে আর হয়তো এ কারনেই বোধহয় হিন্দুরা গরুকে মা ডাকে।
যা কিছু হারাম, অপবিত্র, কৃত্রিম ত্রবং যা কিছুতে আল্লাহর নাম নেয়া হয় না তাতেই জ্বীন-শয়তানরা শরীক হয়। যখন জ্বীন উপাসক (মূর্তিপূজারী ও দেবদেবীপূজারীরা) নানা ধরনের খাদ্য তাদের দেবদেবীর মূর্তিকে প্রদান করে তখন জ্বীন-শয়তানেরা মূর্তিতে প্রবেশ করে প্রসাদ ও উৎসর্গ করা খাদ্য যা কিছুতে আল্লাহর নাম নেয়া হয়নি। তাদের দেবতারা জ্বীন-শয়তানরা হল মুসলমানদের শত্রু। আল্লাহ বলেছেনঃ “নিশ্চয় শয়তান তোমাদের শত্রু সুতরাং তাকে দুশমন হিসেবেই গ্রহণ কর।' (সুরা ফাতির : ৬) কাফের-মুশরিকরা (জ্বীনসাধক, জাদুকর, মূর্তিপূজারী, দেবদেবী/ পাগান-পৌওোলিক) মুসলমানদের শত্রু কারন তারা মানবজাতির শত্রু জ্বীন-শয়তানদের বেচেঁ থাকতে ও শক্তিশালী হতে সহায়তা করে। আল্লাহ বলেছেনঃ “তারা আল্লাহর পরিবর্তে অনেক উপাস্য (জ্বীন-শয়তানদের) গ্রহণ করেছে যাতে তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হতে পারে। অথচ এসব উপাস্য তাদেরকে সাহায্য করতে সক্ষম হবে না এবং এগুলো তাদের বাহিনী রূপে ধৃত হয়ে আসবে।' (সূরা ইয়াসীন) তেমনি ইবলিসের সহযোগী বিতাড়িত জ্বীন-শয়তানরাও কাফের, জ্বীন-শয়তান ও মানুষ-শয়তানদের আল্লাহর বান্দা মুসলমানদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী হতে সহযোগীতা করে। আল্লাহ বলেছেনঃ “হে ঈমানদারগণ! আমার শত্রুদের এবং আপনার শত্রুদের (কাফের/ জাদুচর্চা ও মুশরিকদের/দেবদেবী পূজারী/মূর্তি পূজারী/ জ্বীন-শয়তান উপাসক) বন্ধু হিসাবে গ্রহণ করো না এবং তাদের প্রতি স্নেহ প্রদর্শন করো না "[আল মুমতাহানাহ, ৬0: ১] আমি শয়তানদেরকে তাদের বন্ধু করে দিয়েছি, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না। (Al-A'raaf: 27) আল্লাহ তাআলা নানা নিয়ামত দিয়ে মানুষকে বাঁচিয়ে রাখেন আর মুশরিকরা তা ভোগ করে ইবাদাত করে আর ধন্যবাদ দেয় জ্বীন-শয়তানদের।আল্লাহ তাই বলেছেনঃ “মানুষ বড়ই অকৃতজ্ঞ।”(সুরা বনি ইসরাইল : ৬৭) “যাদেরকে তোমরা আল্লাহর সাথে শরীক করে রেখেছ, তাদেরকে কিরূপে ভয় কর, অথচ তোমরা ভয় কর না যে, তোমরা আল্লাহর সাথে এমন বস্তুকে শরীক করছ, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ তোমাদের প্রতি কোন প্রমাণ অবতীর্ণ করেননি।”(সূরা আল আন-আম)
"ধর্ম যার যার, উৎসব সবার "- ত্রমন অমুসলিমদের মতবাদ ইসলামে গ্রহণযোগ্য না। হিন্দুরা কি মুসলমানদের কুরবানী ঈদের উৎসব পালন করে? তাহলে মুসলমানরা কেন তাদের দেবতা (জ্বীন-শয়তানদের) নামে অনুষ্ঠিত উৎসব পালন করবে? ইসলামে পাগানদের মূর্তিপূজায ও তাদের অন্যান্য উৎসবে অংশগ্রহণ বা উৎযাপন করা কিংবা তাদের রীতিনীতিতে উৎসাহিত করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। আল্লাহ সব পাপ তওবা করলে ক্ষমা করেন কিন্তু তার সাথে কাউকে শরীক করলে তা মাফ করেন না।হিন্দুদের প্রসাদ তাদের শয়তানের উদ্দেশ্যে দেয়া তাই মুসলমানদের জন্য তা নিষিদ্ধ।আল্লাহ বলেছেনঃ “আর কোন লোক এমনও রয়েছে যারা অন্যান্যকে আল্লাহর সমকক্ষ সাব্যস্ত করে এবং তাদের প্রতি তেমনি ভালবাসা পোষণ করে, যেমন আল্লাহর প্রতি ভালবাসা হয়ে থাকে। কিন্তু যারা আল্লাহর প্রতি ঈমানদার তাদের ভালবাসা ওদের তুলনায় বহুগুণ বেশী। আর কতইনা উত্তম হ’ত যদি এ জালেমরা পার্থিব কোন কোন আযাব প্রত্যক্ষ করেই উপলব্ধি করে নিত যে, যাবতীয় ক্ষমতা শুধুমাত্র আল্লাহরই জন্য এবং আল্লাহর আযাবই সবচেয়ে কঠিনতর।” (সূরা আল বাক্বারাহ, আয়াতঃ ১৬৫) মুসলিমদের জন্য মুশরিকের উৎসব এবং পূজাতে অংশগ্রহণ করা এবং তাদের ধর্মীয় উৎসবকে সহায়তা করা বা সহানুভূতি দেখানো বড় গুনাহের কাজ কারন এতে আল্লাহ ব্যতীত অন্য উপাস্যকে গ্রহণ করাকে উৎসাহিত করা হয় যা শিরক। আবদুল্লাহ ইবনে আল আসস বলেনঃ “যে ব্যক্তি মুশরিকের জমিতে বসবাস করে এবং তার নওরোজ (নববর্ষ) এবং তাদের উৎসব উদযাপন করে, এবং তাদের মৃত্যু পর্যন্ত তাদের অনুকরণ করে, কেয়ামতের দিনে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।” যদিও ইসলাম জোরপূর্বক অমুসলিমকে ধর্ম পরিবর্তন করতে উৎসাহিত করে না তবে মুসলিমদের অমুসলিমদের সাথে বন্ধুত্ব নিষেধ। কেননা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন মানুষ তার বন্ধুর ধর্মই পালন করে। আজকের ধর্মহীন স্কুল কলেজগুলোতে পাগান আর মুসলিমরা একসাথে পড়াশোনা করে তাই তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) সর্তক করেছিলেন যে কেয়ামতের আগে মুসলমানদের ধর্ম সম্পর্কিত সত্যিকারের জ্ঞান কমে যাবে আর মূর্তিপূজারীদের সাথে মুসলিমরা শিরক শুরু করবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এ কথাও উল্লেখ করেছিলেন যে তারঁ উম্মতের একটি দল বুঝবে না মূর্তিপূজারীদের সাথে তাদের পার্থক্য!
ত্রলিয়েনবিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করে অজন্তা আর ইলোরা গুহার উপাসনালয়গুলো জ্বীন-শয়তানদের (aliens) তৈরি। হিন্দুদের মন্দিরগুলোতে মাঝে মাঝে নানা রহস্যময় ঘটনা ঘটে কারন সেখানে থাকে জ্বীন-শয়তানদের বিচরণ। কিছু জাদুকর জ্বীন-শয়তান মৃত মানুষের হাড় আর রক্তপান করে। এই জ্বীন-শয়তানকে উপাসনা করে হিন্দুরা তাই তারা তাদের দেবী কালীকে খুশি করার জন্য মাংস আর রক্ত দেয়। ভারতবর্ষে Barha নামক গ্রামটিতে এখনও হিন্দুরা তাদের সন্তানদের উৎসর্গ করে। ২0১৪ সালে The National Crime Records Bureau (NCRB) রিপোর্ট করেছে যে ভারতে মূর্তিপূজারীরা বহুসংখ্যক শিশু ত্ত মানুষ বলি দিয়েছে। আল্লাহ বলেছেনঃ “এমনিভাবে অনেক মুশরিকের দৃষ্টিতে তাদের উপাস্যরা সন্তান হত্যাকে সুশোভিত করে দিয়েছে যেন তারা তাদেরকে বিনষ্ট করে দেয় এবং তাদের ধর্মমতকে তাদের কাছে বিভ্রান্ত করে দেয়। যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে তারা এ কাজ করত না। অতএব, আপনি তাদেরকে এবং তাদের মনগড়া বুলিকে পরিত্যাগ করুন।” [সূরা আল আন-আম, আয়াত ১৩৭] প্রকৃত স্রষ্টার খাদ্য গ্রহণের প্রয়োজন হয় না বরং আল্লাহ পবিত্র ফল ও পশুপাখিকে মানবজাতির খাদ্য করেছেন যেন তার দ্বারা আহার করে মানুষ বেঁচে থাকে। আল্লাহ তাঁর উপর নির্ভরশীল হিসাবে সব প্রাণীকে সৃষ্টি করেছেন। ইব্রাহীম (আলাইহি-আস-সালাম) ত্রর সময় আল্লাহর অবাধ্য শাসক নিমরুদ রাজ্যে প্রতিমা পূজা এবং মানুষ বলিদানের প্রথা চালু করেছিল। ইব্রাহীম বললেন, “পার্থিব জীবনে তোমাদের পারস্পরিক ভালবাসা রক্ষার জন্যে তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে প্রতিমাগুলোকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছ। এরপর কেয়ামতের দিন তোমরা একে অপরকে অস্বীকার করবে এবং একে অপরকে লানত করবে। তোমাদের ঠিকানা জাহান্নাম এবং তোমাদের কোন সাহায্যকারী নেই।” (সূরা আল আনকাবুত) আর তাই পাগান আর মূর্তিপূজারীদের সাথে আমাদের ধর্মের পার্থক্য বুঝানোর জন্য নবী ইব্রাহীম (আলাইহি-আস-সালাম) ত্রর পুত্রকে কুরবানীর বদলে পশু বলি দেয়ার ঘটনাটি ছিল মুসলমানদের জন্য শিক্ষামূলক। ইব্রাহীম (আলাইহি-আস-সালাম) একবার স্বপ্ন দেখে স্রষ্টাকে খুশি করার জন্য তাঁর নিজ পুত্রকে কুরবানী দিতে হবে। ত্রই ঘটনাটি ইব্রাহীম (আলাইহি-আস-সালাম) ত্রর জন্য ছিল ত্রকটি পরীক্ষা। আল্লাহরকে খুশি করার জন্য “আল্লাহর নামে” তিনি নিজ পুত্রকে কুরবানী দেয়ার সময় আল্লাহ তার পুত্রের স্থানে ত্রকটি পশু পাঠালেন যেন মুসলমানরা বুঝতে পারে “আল্লাহর নামে” (বিসমিল্লাহ) পশু জবেহ করে আহার করলে তাতে জ্বীন-শয়তানরা শরীক হয় না। আর মুসলমানদের জন্য মানুষ বলি দেয়া নিষিদ্ধ। কুরবানীর মাংস যেন তাঁর ধনী ও দরিদ্র বান্দারা খেয়ে আল্লাহর শোকর গোজার করে একারনেই কুরবানী দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহ। জ্বীন-শয়তানের সাধনা অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেলে শয়তানের সাধকরা মানুষের রক্তপান করে, মানুষকে বলি দেয় কিংবা মানুষের মাংস খায় যা ইসলামে হারাম। যেমনঃ হিন্দুদের cannibalistic sect aghori মানুষখেকো। ২০ শতাব্দির দিকে ইউরোপের পাগানদের মাঝেও medicinal cannibalism ত্রর প্রচলন দেখা যায় যেখানে চিকিৎসকরা মানুষের রক্ত খেতে প্রেসক্রাইভ করত ওষুধ হিসেবে! আল্লাহ বলছেন: “মুশরিকরা অপবিত্র”। ত্রছাড়াও মুশরিকরা আল্লাহর নামে খাদ্য গ্রহণ করে না তাই তাদের দেহকে রোগজীবাণু বেশি আক্রমন করে ঈমানদারদের চেয়ে।
হিন্দুদের মত অন্যান্য পাগান-পৌওলিকদের ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে নানা মত আছে। অনেক পৌওোলিকরা বিশ্বাস করে তাদের স্রষ্টা নিরাকার। কিন্তু মুসলমানদের “আল্লাহ” কি নিরাকার? না! আল্লাহর আকার আছে তবে তা মানুষের বা কোন পরিচিত কিছুর আকারে নয়।আল্লাহ তাঁর সাক্ষাত কেবলমাত্র তাঁর প্রিয় বান্দাদের দেবেন।কিছু হিন্দু আবার গাছ আর আগুনকে পূজা করে।যারা আল্লাহর পরিবর্তে জ্বীন-শয়তান, মানুষ বা আল্লাহর কোন সৃষ্টিকে ইবাদাত করে বা আল্লাহর সাথে তাদের সমকক্ষ নির্ধারণ করে শির্কে লিপ্ত হয় তারা “মুশরিক” বলে বিবেচিত। মুশরিকের কেউ কেউ বেহেশত ও দোজোখে বিশ্বাসী। আর তাদের মধ্যে ত্রকদল আছে যারা জাদুচর্চাকারী “কাফের”। কাফের ও মুশরিকের মধ্যে পার্থক্য আছে। গভীর সাধনার মাধ্যমে সীমালঙ্ঘনকারী কাফেররা তাদের মস্তিষ্কে অবস্থিত “তৃতীয় চক্ষু” (pineal gland) সক্রিয় করে আধ্যাত্মিক জগতে ক্বারিন জ্বীন-শয়তানের সাথে যোগাযোগ করে জাদুবিদ্যা শেখে ও মানুষকে শেখায়, কাফেররা পরকাল ও বিচারদিবসে বিশ্বাস করে না; তারা পুনর্জন্ম ধারনায় বিশ্বাসী। তারা বিশ্বাস করে সব কিছুই স্রষ্টা, ত্রমনকি তারা নিজেরাও স্রষ্টা! তাদের জীবনের মূল লক্ষ্য হল জ্বীন-শয়তানদের সাথে যোগাযোগ করে ক্ষমতা ও জ্ঞান লাভ করার মাধ্যমে নিজেদের “আলোকিত” করা আর জ্বীন-শয়তানদের কথা অনুযায়ী মানবজাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে পথভ্রষ্ট করা। কারন ইবলিস তাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার আদেশ মেনে চললে তারা পৃথিবীতে লাভ করবে অমরত্ব। প্রাচীন ধ্বংসপ্রাপ্ত সভ্যতার আল্লাহর অবাধ্য সব শাসকরাই তৃতীয় চক্ষু ধারনায় বিশ্বাসী কাফের ছিল যেমন: প্রাচীন মিশরের ফেরাউন, প্রাচীন ব্যাবিলনের নিমরুদ।অন্যান্য অনেক জ্বীন উপাসকদের মত হিন্দুরা কপালে তীলক বা টিপ দেয় “তৃতীয় চক্ষু” ধারণা থেকে। বৌদ্ধ আর হিন্দুধর্ম হল ম্যাজিকের minor ভার্সন যা আফ্রিকান-আমেরিকান hoodoo folk ম্যাজিককে প্রভাবিত করেছিল। এছাড়াও কাফেরদের তালিকাভুক্ত গৌতম বুদ্ধ যে গভীর সাধনার মাধ্যমে ক্বারিন জ্বীনের সাথে যোগাযোগের পথ শেখায় বৌদ্ধদের। হিন্দুদের ব্রাক্ষণ, ইহুদিদের rabbi যারা জাদুচর্চা করে তারা কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত। হিন্দুধর্ম, জৈন ও বৌদ্ধধর্মে কোন বিচার দিবস নেই। প্রাচীন গ্রীকের পাগান ধর্মাবলম্বী, প্রাচীন রোমের পাগান ধর্মাবলম্বী, Tibetan Buddhism, জৈন ধর্ম, চীনা ধর্ম Taoism, খ্রিস্টানদের mystic ইত্যাদি এবং যারা নিজেরদের "Aryans" বলে দাবী করে, তারাও “কাফের” হিসেবে বিবেচিত। কাফের মানুষরা হল “মানুষ-শয়তান” যারা আল্লাহর আদেশের বিরুদ্ধাচান করে পৃথিবীতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ত্রবং ইবলিসের আদেশে মুসলমানদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে।মুসলমানরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের জন্য সালাত কায়েম করে আর কাফেররা নিজেদের দেহকেই মন্দির বানিয়ে গভীর সাধনা করে জ্বীন-শয়তানের নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে। আল্লাহ বলেছেনঃ ‘যে আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা কথা রচনা করে, অথবা তার কাছে সত্য আসার পর তাকে অস্বীকার করে, তার চেয়ে অধিক যালিম আর কে? জাহান্নামই কি এইসব কাফিরের আবাস নয়? [সূরা আনকাবুত, ৬৮] মুসলমান যারা ত্রক আল্লাহর উপর বিশ্বাস স্থাপনের পর জ্বীন-শয়তানের সাহায্য লাভের উদ্দেশ্যে জাদুচর্চা করে তারা কাফের হয়ে যায়। আল্লাহ বলেছেনঃ “এটা এজন্যে যে, তারা ঈমান আনবার পর কুফরী করেছে। ফলে তাদের অন্তরে মোহর মেরে দেয়া হয়েছে। অতএব তারা বুঝে না”। [সূরা মুনাফিকুন, ০৩]
প্রাচীনকাল থেকেই পাগান ও পৌওোলিকদের মধ্যে ধারণা ছিল যখন স্রষ্টা মানুষের চেতনার (consciousness) মধ্যে বিরাজ করে তখন তাদের ঈশ্বর তিনটি সত্ত্বার মধ্যে নিজেকে প্রকাশ করে (মানুষের সত্ত্বা+ ক্বারিন জ্বীনের সত্ত্বা + ফেরেশতার সত্ত্বা = trinity)। প্রাচীন আরবের পাগানরা বিশ্বাস করত এই তিন সত্ত্বা মিলে তাদের ঈশ্বরের মাতা দেবী আল-লাত। ত্রই trinity ধারনা বর্তমানের খ্রিস্টানদের মধ্যেও আছে। আল্লাহ বলেছেনঃ “নিশ্চয়ই তারা কাফের, যারা বলেঃ আল্লাহ তিনের এক; অথচ এক উপাস্য ছাড়া কোন উপাস্য নেই।” মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর নবুয়ত লাভের আগে আরবে চন্দ্র দেবতা "আল-ইলাহ" তিনটি কন্যা (আল-লাত, আল উজ্জা ও মানত) রয়েছে বলে বিশ্বাস করা হত। আল্লাহ বলেছেনঃ “এবার তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, তোমার পালনকর্তার জন্যে কি কন্যা সন্তান রয়েছে এবং তাদের জন্যে কি পুত্র-সন্তান। না কি আমি তাদের উপস্থিতিতে ফেরেশতাগণকে নারীরূপে সৃষ্টি করেছি? জেনো, তারা মনগড়া উক্তি করে যে, আল্লাহ সন্তান জন্ম দিয়েছেন। নিশ্চয় তারা মিথ্যাবাদী।” [ সূরা আস-সাফফাত, 149-152] প্রাচীন আরবের পাতালের দেবী “আল-লাত” এর প্রতীক ছিল সূর্য; ভাগ্যের দেবী মানাতের প্রতীক অর্ধচন্দ্র বা ক্রিসেন্ট মুন। আর তাদের দেবতা আল উজ্জার প্রতীক ভেনাস। জ্বীন ও মানব জগতের ভিন্ন চন্দ্র, সূর্য ও তারকাগুলো জাদুচর্চার সাথে জড়িত। আল্লাহ বলেছেনঃ“..... তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সেজদা করছে। শয়তান তাদের দৃষ্টিতে তাদের কার্যাবলী সুশোভিত করে দিয়েছে। অতঃপর তাদেরকে সৎপথ থেকে নিবৃত্ত করেছে। অতএব তারা সৎপথ পায় না।” (An-Naml: 24) “আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে দিবস, রজনী, সূর্য ও চন্দ্র। তোমরা সূর্যকে সেজদা করো না, চন্দ্রকেও না; আল্লাহকে সেজদা কর, যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন, যদি তোমরা নিষ্ঠার সাথে শুধুমাত্র তাঁরই এবাদত কর।”(সূরা হা-মীম সেজদাহ) Old testament এর Asherah বা allat pole প্রতিফলন করে প্রাচীন pyramidion কে যা পাগানদের দেবদেবীর একটি প্রতীক। তাদের মতে আল-লাত উদ্ভব হয়েছে পদ্মফুল থেকে যে ফুলকে “সৃষ্টির ফুল” নামে অভিহিত করে। হিন্দু দেবদেবীর সাথেও পদ্মফুলের প্রতীক থাকতে দেখা যায়। কাফেরদের ধারনা পৃথিবী হঠাৎ করে নিজেই accidentally সৃষ্টি হয়েছিল যা বর্তমানের ধর্মহীন বিজ্ঞানীরাও বিশ্বাস করে। এছাড়া পাগান ও পৌওোলিকরা সাবার রাণী জ্বীনকন্যা বিলকিসকে বিভিন্ন নামে পূজা করত। যেমনঃ আলিলাত। তারা বিশ্বাস করত সাবার রাণী বিলকিস ড্রাগন, সাপ ইত্যাদি জ্বীনদের রাজ্যে ও প্রাচীন Aethiopia (বর্তমানের ভারত, আটলান্টিক সাগরের কিছু অংশ, সাহারা মরুভূমির কিছু অংশ, নীলনদের উপরিভাগে) এর রাণী ছিল। আল্লাহ বলেছেন:"তারা বলেঃ দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন”। (88) “নিশ্চয় তোমরা তো এক অদ্ভুত কান্ড করেছ। হয় তো এর কারণেই এখনই নভোমন্ডল ফেটে পড়বে, পৃথিবী খন্ড-বিখন্ড হবে এবং পর্বতমালা চূর্ণ-বিচুর্ণ হবে। এ কারণে যে, তারা দয়াময় আল্লাহর জন্যে সন্তান আহবান করে। অথচ সন্তান গ্রহণ করা দয়াময়ের জন্য শোভনীয় নয়। নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডলে কেউ নেই যে, দয়াময় আল্লাহর কাছে দাস হয়ে উপস্থিত হবে না।"( সূরা মারইয়াম, 88-95) এই সাবার রাণী বিলকিস পরে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করে মুসলমান হয়ে যায় এবং নবী সুলাইমান (আলাইহি-আস-সালাম)কে বিয়ে করে। একটি হাদিসে উল্লেখ ছিল “ঐ সময়ের কুরাইশ কাফেররা বলত, ফেরেশতা আল্লাহর কন্যা এবং তাদের মা জ্বীননেতাদের কন্যা।” (৩৪১২, আধুনিক প্রকাশনীঃ ৪৪৪০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৪৪৪১) আল্লাহ বলেছেন: “আল্লাহ কি তাঁর সৃষ্টি থেকে কন্যা সন্তান গ্রহণ করেছেন এবং তোমাদের জন্য মনোনীত করেছেন পুত্র সন্তান? তারা রহমান আল্লাহর জন্যে যে, কন্যা-সন্তান বর্ণনা করে, যখন তাদের কাউকে তার সংবাদ দেয়া হয়, তখন তার মুখমন্ডল কালো হয়ে যায় এবং ভীষণ মনস্তাপ ভোগ করে। তারা কি এমন ব্যক্তিকে আল্লাহর জন্যে বর্ণনা করে, যে অলংকারে লালিত-পালিত হয় এবং বিতর্কে কথা বলতে অক্ষম।তারা কি তাদের সৃষ্টি প্রত্যক্ষ করেছে? এখন তাদের দাবী লিপিবদ্ধ করা হবে এবং তাদের জিজ্ঞাসা করা হবে।তারা বলে, রহমান আল্লাহ ইচ্ছা না করলে আমরা ওদের পূজা করতাম না। এ বিষয়ে তারা কিছুই জানে না। তারা কেবল অনুমানে কথা বলে”।(সূরা যুখরুফ) আবার কিছু পৌত্তলিকরা আবার বিশ্বাস করে যে তাদের দেবতাদের (ফেরেশতা এবং জ্বীনদের) সুপারিশ অথবা সাহায্যে স্রষ্টার সঙ্গে সংযুক্ত হত্তয়া যায়। আল্লাহ বলেছেন:“আর উপাসনা করে আল্লাহকে বাদ দিয়ে এমন বস্তুর, যা না তাদের কোন ক্ষতিসাধন করতে পারে, না লাভ এবং বলে, এরা তো আল্লাহর কাছে আমাদের সুপারিশকারী। তুমি বল, তোমরা কি আল্লাহকে এমন বিষয়ে অবহিত করছ, যে সম্পর্কে তিনি অবহিত নন আসমান ও যমীনের মাঝে? তিনি পুতঃপবিত্র ও মহান সে সমস্ত থেকে যাকে তোমরা শরীক করছ”। [সূরা ইউনুস, 18] “জেনে রাখুন, নিষ্ঠাপূর্ণ এবাদত আল্লাহরই নিমিত্ত। যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করে রেখেছে এবং বলে যে, আমরা তাদের এবাদত এ জন্যেই করি, যেন তারা আমাদেরকে আল্লাহর নিকটবর্তী করে দেয়। নিশ্চয় আল্লাহ তাদের মধ্যে তাদের পারস্পরিক বিরোধপূর্ণ বিষয়ের ফয়সালা করে দেবেন। আল্লাহ মিথ্যাবাদী কাফেরকে সৎপথে পরিচালিত করেন না।” (সূরা আল-যুমার)
আল্লাহ আরত্ত বলেছেন:".... আমি তাদের কাছে সত্য পৌঁছিয়েছি, আর তারা তো মিথ্যাবাদী। আল্লাহ কোন সন্তান গ্রহণ করেননি এবং তাঁর সাথে কোন মাবুদ নেই। থাকলে প্রত্যেক মাবুদ নিজ নিজ সৃষ্টি নিয়ে চলে যেত এবং একজন অন্যজনের উপর প্রবল হয়ে যেত। তারা যা বলে, তা থেকে আল্লাহ পবিত্র। তিনি দৃশ্য ও অদৃশ্যের জ্ঞানী। তারা শরীক করে, তিনি তা থেকে উর্ধ্বে। বলুনঃ হে আমার পালনকর্তা! যে বিষয়ে তাদেরকে ওয়াদা দেয়া হয়েছে তা যদি আমাকে দেখান, হে আমার পালনকর্তা! তবে আপনি আমাকে গোনাহগার সম্প্রদায়ের অন্তর্ভূক্ত করবেন না।" (সূরা আল মু’মিনূন, 84-94)
পাগানদের দেবতারা(বিতাড়িত শয়তানরা) হল মুসলমানদের শত্রু। ইহুদি ও খ্রিস্টানরাও বিতাড়িত শয়তানকে তাদের বন্ধু “ফেরেশতা” (fallen angels) হিসেবে ভাবে। অথচ আল্লাহ বলেছেন: “শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।” আর এ কারনেই নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন (বিজয়ীর বেশে) মক্কায় প্রবেশ করেন, তখন কা‘বা শরীফের চারপাশে তিনশ’ ষাটটি মূর্তি ছিল। নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের হাতের লাঠি দিয়ে মূর্তিগুলোকে আঘাত করতে থাকেন আর বলতে থাকেনঃ “সত্য (ধর্ম) এসেছে এবং মিথ্যা (ধর্ম) বিলুপ্ত হয়েছে...”- (বনী ইসরাঈল/ইসরা : ৮১)। -- সহিহ বুখারী: 2478
প্রাচীন আরব পাগানদের মত ভাগ্য নির্ধারনকারী তীরযুক্ত হিন্দুদের দেবী Lakshmi। রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) মক্কায় আগমন করার পর তৎক্ষনাৎ বাইতুল্লাহ্র ভিতরে প্রবেশ করা থেকে বিরত রইলেন, কেননা সে সময় বাইতুল্লাহর ভিতরে অনেক প্রতিমা স্থাপিত ছিল। প্রতিমাগুলো বের করে ফেলা হল। তখন ইব্রাহিম ও ইসমাঈল (আলাইহি-আস-সালাম)-এর মূর্তিও বেরিয়ে আসল। তাদের উভয়ের হাতে ছিল মুশরিকদের ভাগ্য নির্ণয়ের কয়েকটি তীর। তখন নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেন, আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করুন। তারা অবশ্যই জানত যে, ইব্রাহিম (আলাইহি-আস-সালাম) ও ইসমাঈল (আলাইহি-আস-সালাম) কক্ষনো তীর দিয়ে ভাগ্য নির্ণয় করেননি। এরপর তিনি বাইতুল্লাহ্র ভিতরে প্রবেশ করলেন। আর প্রত্যেক কোণায় কোণায় গিয়ে আল্লাহু আকবার ধ্বনি দিলেন এবং বেরিয়ে আসলেন। আর সেখানে সলাত আদায় করেননি। মা'মার (রহঃ) আইয়ুব (রহঃ) সূত্রে এবং ওয়াহায়ব (রহঃ) আইয়ুব (রহঃ)-এর মাধ্যমে 'ইকরামাহ (রাঃ) সূত্রে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) থেকে অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। [সহিহ বুখারী: হাদিস ৪২৮৮] ইব্রাহীম (আলাইহি-আস-সালাম) নিজেই ধ্বংস করেছিলেন মূর্তি।
জারীর হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বললেনঃ “তুমি কি যুল-খালাসাহকে ধ্বংস করে আমাকে চিন্তামুক্ত করবে? সেটা ছিল এক মূর্তি। লোকেরা এর পূজা করতো। সেটাকে বলা হতো ইয়ামানী কা'বা। আমি বললামঃ হে আল্লাহ্র রসূল! আমি অশ্ব পৃষ্ঠে স্থির থাকতে পারি না। তখন তিনি আমাকে বুকে জোরে একটা থাবা মারলেন এবং বললেনঃ হে আল্লাহ! আপনি তাকে স্থির রাখুন এবং তাকে হিদায়াতকারী ও হিদায়াতপ্রাপ্ত বানিয়ে দিন। তখন আমি আমারই গোত্র আহমাসের পঞ্চাশ জন যোদ্ধাসহ বের হলাম। সুফ্ইয়ান (রহঃ) বলেন, তিনি কোন কোন সময় বলেছেনঃ আমি তোমার গোত্রের একদল যোদ্ধার মধ্যে গেলাম। তারপর আমি সেই মূর্তিটার কাছে গিয়ে সেটা জ্বালিয়ে ফেললাম। এরপর আমি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) -এর কাছে এসে বললামঃ হে আল্লাহ্র রসূল! আল্লাহ্র কসম! আমি যুল-খালাসাহ্কে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে পাঁচড়াযুক্ত উটের মত করে আপনার কাছে এসেছি। তখন তিনি আহমাস গোত্র ও তার যোদ্ধাদের জন্য দু'আ করলেন”।[সহিহ বুখারী: ৬৩৩৩]
যখন 'Uzza নামক মূর্তিটি ধ্বংস করা হয়েছিল, তখন মূর্তির ভেতর থেকে একটি জ্বীন এক কালো মহিলার আকারে বেরিয়ে এসেছিল। খালিদ তার তলোয়ার দিয়ে দুই ভাগে তাকে ভাগ করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "তারা এই জ্বীনকে Uzza হিসেবে এবাদত করত। এখন আর তারা জ্বীনকে পূজা করবে না। " (Qadi Iyad, ash-Shifa, 1:362; Khafaji, Sharhu’sh-Shifa, 3:287; Ali al-Qari, Sharhu’sh-Shifa, 1:738; Ibn Kathir, al-Bidaya wa’n-Nihaya, 4:316; al-Haythami, Majmau’z-Zawaid, 6:176.)
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-"বান্দার প্রতি আল্লাহর হক হচ্ছে তারা তাঁর ইবাদত করবে এবং তাঁর সঙ্গে কোন কিছুকে শরীক করবে না৷" (মুসলিম, ইফাবা/৫০)
আল্লাহ আরত্ত বলেছেনঃ “আর মহান হজ্বের দিনে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের পক্ষ থেকে লোকদের প্রতি ঘোষণা করে দেয়া হচ্ছে যে, আল্লাহ মুশরেকদের থেকে দায়িত্ব মুক্ত এবং তাঁর রসূলও। অবশ্য যদি তোমরা তওবা কর, তবে তা, তোমাদের জন্যেও কল্যাণকর, আর যদি মুখ ফেরাও, তবে জেনে রেখো, আল্লাহকে তোমরা পরাভূত করতে পারবে না। আর কাফেরদেরকে মর্মান্তিক শাস্তির সুসংবাদ দাও।”[সূরা আত তাওবাহ, আয়াত ৩]
ইসলামে কোন ধরনের প্রতীক ব্যবহার নিষিদ্ধ। জ্বীনউপাসক মুশরিক ও জাদুচর্চাকারী কাফেররা তাদের কর্মস্থলে, প্রতিষ্ঠানে, রাজ্যের সবস্থানে বিভিন্ন ধরনের প্রতীক, প্রতিমা, আকৃতি ও সংখ্যা ব্যবহার করে জ্বীনদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে।যেমনঃ বাঘ, ঈগল, সিংহ, হাতি, চাঁদ, তারা, সূর্য, সাপ, পদ্মফুল, শাপলা, ড্রাগন, ত্রক চোখ, ত্রিভুজ, ত্রুস, বৃওাকার, ধানের শীষের ন্যায়, ইত্যাদি। প্রত্যেক নবী প্রতিমা ধ্বংস করেছিলেন। যে স্থানে ত্র ধরনের প্রতীক বা পশু পাখি সম্বলিত লোগো থাকে সেখানে ফেরেশতা আসতে পারে না।নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ত্রর সময় মুসলমানরা প্রতীকবিহীন কালো পতাকা ব্যবহার করত আর পাগান-পৌওলিক জ্বীনউপাসকরা পতাকার উপর নানা পাখি, প্রাণী বা প্রতীক ব্যবহার করত।প্রত্যেক নবী প্রতিমা ধ্বংস করেছিলেন। হযরত আয়েশা (রাদ্বিআল্লাহুতা’লা আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবীজী (সল্লাল্লাহু ’আলাইহি ওয়া সাল্লাম) নিজের ঘরের এমন কিছুই না ভেঙ্গে ছাড়তেন না, যাতে কোনো (প্রাণীর) ছবি থাকত। (বুখারী শরীফ, ৯ম খন্ড, হাদীছ নং ৫৫২৮)কেয়ামতের আগে ঈসা আলাইহিস সালাম ত্রসে খ্রিস্টানদের ব্যবহৃত ত্রুস ভাঙ্গবেন। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন- “কিয়ামতের দিন মানুষ একটি স্বচ্ছ চেপটা রুটির মত সাদাপ্রান্তরে একত্রিত হবে। সেখানে কারো কোন প্রতীক বা চিহ্ন থাকবে না”। (বুখারী ও মুসলিম।) সুতরাং তা হয়ে যাবে প্রতীকহীন একটি প্রান্তর।
পৌওোলিকদের ধর্মশাস্ত্রগুলো আল্লাহর প্রেরিত কোন কিতাব নয়; বরং তাদের শাস্ত্রগুলো তাদের পন্ডিতদের লেখা যা তাদের শেখায় কিভাবে জ্বীন-শয়তানের উপাসনা করা যায়। তাদের ধর্ম শাস্ত্রে অল্প কিছু ভালো কথাও পাওয়া যায় কারন শয়তান সত্যের সাথে মিথ্যা মিলিয়ে বিভ্রান্ত করে।আল্লাহ বলেছেনঃ “এ কারণে যে, শয়তান যা মিশ্রণ করে, তিনি তা পরীক্ষাস্বরূপ করে দেন, তাদের জন্যে, যাদের অন্তরে রোগ আছে এবং যারা পাষাণহৃদয়। গোনাহগাররা দূরবর্তী বিরোধিতায় লিপ্ত আছে।” (Al-Hajj: 53)”তাদের উপর শয়তানের কোন ক্ষমতা ছিল না, তবে কে পরকালে বিশ্বাস করে এবং কে তাতে সন্দেহ করে, তা প্রকাশ করাই ছিল আমার উদ্দেশ্য। আপনার পালনকর্তা সব বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক”। (Saba: 21) অন্যদিকে, আল্লাহ পবিত্র কুরআন সম্পর্কে বলেছেনঃ “এটা বিতাড়িত শয়তানের উক্তি নয়।” (At-Takwir: 25) এই কোরআন শয়তানরা অবতীর্ণ করেনি। (Ash-Shu'araa: 210) এবং তাকে সংরক্ষিত করেছি প্রত্যেক অবাধ্য শয়তান থেকে। (As-Saaffaat: 7)
“বুদ্ধ” মানে আলোকিত বা জাগ্রত (enlightened)। বৌদ্ধধর্মের মধ্যে কোন ঈশ্বরের ধারণা নেই। হিন্দুদের মত বৌদ্ধরাও তৃতীয় চোখ সক্রিয় করার মাধ্যমে ক্বারিন জ্বীনের সাথে যোগাযোগ করে ঈশ্বরের মত শক্তি লাভ করার উপায়কে বলে “বুদ্ধের আলোকিত পথ”। যদিও গণমাধ্যম অনেক সময় বৌদ্ধধর্মকে অহিংস ধর্ম বলে আজকে জানবো সেই বৌদ্ধধর্ম সম্পর্কে কিছু তথ্যঃ
গৌতম বুদ্ধ নেপালে জন্মগ্রহণ করে আর বৌদ্ধরা বিশ্বাস করে জন্মের সাথে সাথে বুদ্ধ সাত পা হাটে আর তারপর সেই সাত স্থানে পদ্মফুল ফোটে। বুদ্ধের কিছু সুপারপাওয়ারের কথা উল্লেখ করে বৌদ্ধরা যেমনঃ বুদ্ধ পানির উপর হাটতে পারত, বুদ্ধ পৃথিবী থেকে মহাকাশে যাতায়াত করত, বুদ্ধ বিশাল বড় কিংবা পিপড়ারঁ মত ছোট আকার ধারন করতে পারত যা ইঙ্গিত দেয় যে, বুদ্ধ ছিল মানুষের বেশে জ্বীন-শয়তান বা তাদের বংশধর। Mahasihanada সূত্র অনুযায়ী মানুষের চেয়ে বেশি শ্রবণক্ষমতা, টেলিপ্যাথি, psychic power ইত্যাদি। বৌদ্ধ ধর্মশাস্ত্র হল Saddharma Pundarika বা the Lotus of the True Law। গৌতম বুদ্ধ নিজে 563 খ্রিস্টপূর্বাব্দের জন্ম নেয়, সুতরাং লোটাস ধর্মশাস্ত্র বা সূত্রটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা তাদের গৌতম বুদ্ধের মৃত্যুর প্রায় আট শতাব্দী পরে ৩00 খ্রিস্টাব্দে লেখে। বৌদ্ধধর্মে অন্যান্য জগতের (জ্বীনজগত) অস্তিত্বকে স্বীকার করা হয়। প্রকৃতপক্ষে, প্রত্যেক প্রজন্মের জগতে তার নিজের একটি বুদ্ধ (ক্বারিন জ্বীন) আছে বলা হয়। একটি বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থে আছে পৃথিবীতে মৌখিক ভাষা প্রচলন থাকলেও অন্যান্য জগতে (জ্বীনজগতে) আলো বা অন্যান্য অ-মৌখিক(ভাষাহীন) পদ্ধতিতে দ্বারা যোগাযোগ করা যায়। Capers Jones এর তথ্য অনুযায়ী হিন্দুধর্মের মত আধুনিক বৌদ্ধধর্মেও আছে যে মহাবিশ্ব অনেক লক্ষ বছর ধরে বিদ্যমান আছে আর বিশ্বের সময়কাল "kalpas" দিয়ে পরিমাপ করা হয়। বৌদ্ধধর্মের লেখা সৃষ্টিতত্ত্ব আর জ্বীন থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান আধুনিক কোয়ান্টাম তত্ত্বের মধ্যে সাদৃশ্য আছে। বুদ্ধ নাকি মানব ও deva (মানুষ নয় এমন আধ্যাত্মিক সত্ত্বা - ক্বারিন জ্বীন) এর মধ্যে তার ধর্মমত প্রচার করেছিল, deva এর জীবনবৃত্তান্ত মানুষের মতো, ইসলামিক ধারণা অনুযায়ী তাদের deva হল ক্বারিন জ্বীন, যারা মানুষের সাথে অবস্থান করে। ২৩ অধ্যায়ে আছে যখন বুদ্ধ একটি ধর্মোপদেশ প্রদান করত, তখন তার দুই ব্রু এর মধ্যবর্তী একটি বৃত্ত থেকে আলোর রশ্মি দেখা যেত যা তার শিষ্য দেখেছিল। বৌদ্ধধর্মের লোটস সূত্রের ২৩ অধ্যায়ে Gadgadasvara ছিল স্পেসশীপে আসা এলিয়েন (জ্বীন-শয়তান)। গভীর ধ্যানের মাধ্যমে (space-travel meditation technique) Gadgadasvara বুদ্ধ এবং তার শিষ্যদের সামনে psychically উপস্থিত হয়। Manjusri সেসময় বুদ্ধের কাছে সেই জ্বীন-শয়তান সম্পর্কে জানতে চাইলে বুদ্ধ বলে সেই জ্বীন-শয়তান এসেছে অন্য জগত থেকে। বুদ্ধ তখন বলেছিল ভিন্ন জগতের বাসিন্দা (জ্বীন-শয়তান) ভিন্ন রূপে ভিন্ন বেশে আসতে পারে। শিষ্যকে গৌতম বুদ্ধ বলে “On coming to earth you must not conceive a low opinion of it. The earthly Buddha Lord Sakyamuni will seem small compared to you, as are his disciples. He looks different from us and he and his followers will seem to be ugly, so do not behave rudely. The earth itself has parts that are ugly like sewers, so do not form a low opinion of it.” এর অর্থ সহজভাবে বললে, Gadgadasvara নামের জ্বীন-শয়তানটি ছিল খাটো প্রকৃতির ও কদাচিৎ চেহারার। Gadgadasvara এর ঘটনাটি ইঙ্গিত করে যে সে interplanetary travel এর মাধ্যমে জ্বীন জগত থেকে আসা শয়তান যার প্রমাণ পাওয়া যায় তাদের শাস্ত্রের লেখায়: “he again mounted the tower and with the noise of hundreds of thousands of musical instruments he returned to his own world.” তাদের শাস্ত্রে এই শয়তান জ্বীনের চেহারার বর্ণনা করা হয় “His face showed eyes resembling blue lotuses, his body was gold colored…and sparkled with a luster.” সেই শয়তানের ছিল নীলপদ্ম এর মত নীলবর্ণের চোখ, তার শরীরের রঙ ছিল স্বর্ণাভ ... এবং একটি শরীরে এক প্রকার দ্যুতি ছিল। সে যখন এসেছিল তখন অনেক বাদ্যযন্ত্রের শব্দের সাথে large tower দিয়ে এসেছিল আর এই large tower ইঙ্গিত করে শয়তানের চলাচলকারী যানকে (UFO)। তারপর শয়তান জ্বীন বুদ্ধের উপদেশ প্রদান শেষে চলে যায় তার জগতেঃ “he again mounted the tower and with the noise of hundreds of thousands of musical instruments he returned to his own world.” বৌদ্ধধর্মে জ্বীন জগতের যোগাযোগের কথা ইঙ্গিত করে যেমনঃ পৃথিবীতে মানুষ ব্যতীত ভিন্ন জগতের বাসিন্দারা আছে; সেই ভিন্ন জগতের বাসিন্দারা মানুষের বেশে আসতে পারে, তারা বিশ্বাস করে উভয় জগতের মধ্যে সাধনার মাধ্যমে মানসিক এবং শারীরিকভাবে ভ্রমণ সম্ভব; যোগাযোগের জন্য শব্দ ছাড়া অন্য যোগাযোগের মাধ্যম (ভঙ্গি বা চিহ্ন) ব্যবহার করা যায় জ্বীন জগতের যোগাযোগের জন্য, তাদের শাস্ত্রে অধ্যায় ২৩ আছে -এ শয়তান জ্বীনের কাছে বুদ্ধ মানুষ এবং পৃথিবী সম্পর্কে খারাপ ধারনা দেয়। বৌদ্ধধর্মের লোটস সূত্রের ২৩ অধ্যায়ে (Chapter XXIV – Bodhisattva Gadgadasvara) স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, মানুষ এবং অ-মানবীয় জ্বীন-শয়তানের মধ্যে বিনয়ী আলোচনার কথা। আরো উল্লেখ আছে অন্য জগত থেকে আসা জ্বীন-শয়তানেরা পৃথিবীতে আসে এবং বিশেষ আলোকিত ব্যক্তির সাথে তারা instantaneous mental communication এর মাধ্যমে যোগাযোগ করে। তাদের ভাষায় এই “বিশেষ আলোকিত” ব্যক্তি হল জ্বীন-শয়তানের উপাসক। তাদের এই “entanglement” এর ধারণাটি আধুনিক physics-এর সাদৃশ্যপূর্ণ। কাফের জাদুকর ও জ্বীনসাধকদের ডাকে সাড়া দিতে জ্বীন-শয়তানরা তাদের কাছে আসে -তা সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেনঃ “আমি আপনাকে বলব কি কার নিকট শয়তানরা অবতরণ করে?” (Ash-Shu'araa: 221) “আপনি কি লক্ষ্য করেননি যে, আমি কাফেরদের উপর শয়তানদেরকে ছেড়ে দিয়েছি। তারা তাদেরকে বিশেষভাবে (মন্দকর্মে) উৎসাহিত করে” (Maryam: 83) “কতক মানুষ অজ্ঞানতাবশতঃ আল্লাহ সম্পর্কে বিতর্ক করে এবং প্রত্যেক অবাধ্য শয়তানের অনুসরণ করে।” (Al-Hajj: 3)”শয়তান সম্পর্কে লিখে দেয়া হয়েছে যে, যে কেউ তার সাথী হবে, সে তাকে বিভ্রান্ত করবে এবং দোযখের আযাবের দিকে পরিচালিত করবে।” (Al-Hajj: 4) প্রাচীন বুদ্ধের মূর্তির গায়ে পরানো পোশাকটি ছিল কিছুটা মহাকাশযাত্রীদের স্পেসস্যুট এর মতন। উত্তর ভারতের ধর্মশালায় হার্ভার্ড সাইকিয়াট্রিস্ট জন ই ম্যাক যখন দালাই লামার সঙ্গে এলিয়েন(জ্বীন-শয়তান) সম্পর্কে একটি কথোপকথন করেছিল তখন দালাই লামাও পৃথিবীতে এলিয়েন থাকার কথা স্বীকার করেছিল। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হল, লন্ডনের Aetherius সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা 1955 সালে ডগার জর্জ কিং এলিয়েনের সাথে যোগাযোগ করার পর জানিয়েছে বুদ্ধ ছিল অন্য জগত থেকে আসা “এলিয়েন,” (জ্বীন-শয়তান) যে মানবজাতিকে ত্রক আল্লাহর ইবাদাতের বদলে পথভ্রষ্ট করতে এসেছিল। “জীব হত্যা মহাপাপ”- কথাটা গৌতম বুদ্ধের তাই বলে ভাবার দরকার নাই পৌওোলিকরা খুব উদার প্রকৃতির। জীবকে যদি ত্রতই ভালোবাসে তাহলে গাছেরও তো জীবন আছে। গাছ কেটে আসবাবপত্র আর বাড়ি করার কি দরকার! নিরামিষভোজীদের গাছকে হত্যা করার প্রয়োজন কি হয় না? আল্লাহ প্রকৃতিতে সুশৃঙ্খলভাবে তৈরি করেছেন যেখানে ত্রক প্রাণী আরেক প্রাণী খেয়ে জীবনধারণ করে। জীবকে বাঁচিয়ে রাখা প্রয়োজন তাদের জন্য যারা পুনর্জন্মে বিশ্বাস; জীবনানন্দ দাশের মত যারা স্বপ্ন দেখে “আবার আসিব ফিরে ... হয়তো মানুষ নয়- হয়তো বা শংখচিল শালিখের বেশে,হয়তো ভোরের কাক হয়ে...” জীবদের মেরে ফেললে জীবের দেহের কোষ দিয়ে ক্লোনিং প্রক্রিয়ায় আবার মৃতকে কিভাবে জীবিত করবে! মুসলমানরা গরু কুরবানী দিলে মুসলমানদের উপর হত্যাযজ্ঞ চালায় পৌওোলিকরা আর বাঘ যখন গরু মেরে খায় তখন পৌওলিকরা বাঘকে করে পূজা!
আল্লাহ বলেছেনঃ “.... আমি আপনার পূর্বে বিভিন্ন সম্প্রদায়ে রাসূল প্রেরণ করেছি, অতঃপর শয়তান তাদেরকে কর্ম সমূহ শোভনীয় করে দেখিয়েছে। আজ সেই তাদের অভিভাবক এবং তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি”। (An-Nahl: 63) “আর তুমি যদি তাদেরকে সুপথে আহবান কর, তবে তারা তা কিছুই শুনবে না। আর তুমি তো তাদের দেখছই, তোমার দিকে তাকিয়ে আছে, অথচ তারা কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। আর তোমরা যদি তাদেরকে আহবান কর সুপথের দিকে, তবে তারা তোমাদের আহবান অনুযায়ী চলবে না। তাদেরকে আহবান জানানো কিংবা নীরব থাকা উভয়ই তোমাদের জন্য সমান।” (সূরা আল আ’রাফ)
সকল শিশুই মুসলমান হয়ে জন্মগ্রহণ করে কিন্তু বড় হয়ে পরিবার আর পরিবেশ তাকে আল্লাহর বদলে অন্যের উপাসনায় নিয়োজিত করে। সে যে পরিবারেই জন্মগ্রহণ করুক না কেন, পৃথিবীর প্রতিটি ব্যক্তির দায়িত্ব প্রকৃত স্রষ্টা কে তা খুঁজে বের করা ত্রবং সেই স্রষ্টার কাছে নিজের সকল ইচ্ছাকে আল্লাহর আদেশের কাছে আত্মসমর্পণ করা। নবী ইব্রাহীম (আলাইহি-আস-সালাম) ত্রর পিতা ছিলেন মূর্তিপূজারী কিন্তু ইব্রাহীম (আলাইহি-আস-সালাম) ছিলেন আল্লাহর বন্ধু। ইব্রাহীম আলাইহি-আস-সালাম তার মুশরিক পিতাকে বলেছিলেনঃ “হে আমার পিতা, শয়তানের এবাদত করো না। নিশ্চয় শয়তান দয়াময়ের অবাধ্য”। (Maryam: 44) মুসলিম পরিবারে জন্ম নিলেই বেহেশতে যাবে ত্রমন ধারণা ঠিক নয়। কারন অনেক মানুষ মুসলিমে জন্মগ্রহণ করার পরে সালাত কায়েম করে না কিংবা আল্লাহর নির্দেশ পালন করে না। তবে যদি কেউ আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে ত্রবং আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে আল্লাহর আদেশ মেনে চলে তবে সেই হবে পার্থিব জীবনে সফলকাম।আল্লাহ্ সুবহান আল্লাহু তায়ালা বলেন, যারা শয়তানী শক্তির পূজা-অর্চনা থেকে দূরে থাকে এবং আল্লাহ অভিমুখী হয়, তাদের জন্যে রয়েছে সুসংবাদ। অতএব, সুসংবাদ দিন আমার বান্দাদেরকে। (Az-Zumar: 17) "যখন কেহ অশ্লীল কাজ করে কিংবা স্বীয় জীবনের প্রতি অত্যাচার করে অতঃপর আল্লাহকে স্মরণ করে এবং অপরাধসমূহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করে, এবং আল্লাহ ব্যতীত কে অপরাধসমূহ ক্ষমা করতে পারে? "[সূরা আল-'ইমরান, ১৩৫]. “নিশ্চয় তিনি আল্লাহ, ক্ষমাশীল, পরম ক্ষমাপরায়ণ”। (সূরা: হজ্ব, আয়াত: ৬০)
“আপনি বলে দিনঃ আমাকে তাদের এবাদত করতে নিষেধ করা হয়েছে, তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে যাদের এবাদত কর। আপনি বলে দিনঃ আমি তোমাদের খুশীমত চলবো না। কেননা, তাহলে আমি পথভ্রান্ত হয়ে যাব এবং সুপথগামীদের অন্তর্ভুক্ত হব না।”(সূরা আল আন-আম)
© Book: AD-DAJJAL: The World is Full of Lies and Deception -এর অনুবাদ, লেখিকাঃ ফারহানা আকতার, পিএইচডি
Comments
Post a Comment