জ্বীন হল metaphysical প্রকৃতির (PLASMA Beings/ being from shadow world/ beings of other dimensions or spiritual realms)।
মানুষ সৃষ্টির পূর্বেই জ্বীনরা ছিল “পৃথিবী” নামক গ্রহের বাসিন্দা। জ্বীনজাতিকে আল্লাহ প্রতিনিধিত্ব করতে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলেন কিন্তু তারা বেশির ভাগই নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছিল তাই পরবর্তীতে আল্লাহর মানুষকে পৃথিবীতে প্রতিনিধিত্ব করতে পাঠান।
আয়িশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ফেরেশতাগণকে সৃষ্টি করা হয়েছে নূর থেকে আর জ্বীন সম্প্রদায়কে সৃষ্টি করা হয়েছে ধোঁয়া বিহিন আগুনের শিখা হতে এবং আদম (আলাইহিস সালাম) কে সৃষ্টি করা হয়েছে তোমাদের নিকট বর্ণিত বস্তু (মাটি) হতে”। (সহীহ মুসলিম, হাদিস নম্বরঃ ৭২২৫)
ইসলাম ধর্মে ‘অদৃশ্য’ বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করা মুসলমানদের উপর ফরজ। আল্লাহ বলেছেন-“এ সেই কিতাব (পবিত্র কুরআন) যাতে কোনই সন্দেহ নেই। পথ প্রদর্শনকারী পরহেযগারদের জন্য। যারা অদেখা বিষয়ের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে এবং নামায প্রতিষ্ঠা করে। আর আমি তাদেরকে যে রুযী দান করেছি তা থেকে ব্যয় করে।” (সূরা আল-বাকারা, ২-৩) "ভূত" বলে কিছু নেই। সাধারনত মানুষ "জ্বীন" প্রজাতিকেই ভূত বলে সিনেমা আর গল্পে চিত্রিত করে থাকে। প্রাচীনকাল থেকে সব সভ্যতাতে জ্বীন সম্পর্কিত supernatural ভিন্ন ঘটনার প্রচলন ছিল।যদিও একেক সম্প্রদায়ে জ্বীনরা একেক নামে পরিচিত ছিল যেমন spirits, demigods, guardians, demons, monsters, sky gods, gods, deities, প্রেতাত্মা, অশুভ আত্মা ইত্যাদি। পাগান-পৌওোলিকরা (দেবদেবীপূজারী ও মূর্তিপূজারী), Wicca, Celtic, Satanitis, Gnosticরা জ্বীন-শয়তানদের “দেবদেবী” হিসেবে পূজা করে।
আরবি জ্বীন (Hidden one) শব্দটির অর্থ অন্তরালে বসবাসকারী গুপ্ত, আবরিত, লুকায়িত কিছু। অধিকাংশ মানুষ বিশ্বাস করে জ্বীন হল metaphysical প্রকৃতির (PLASMA Beings/ being from shadow world/ beings of other dimensions or spiritual realms)। অনেক ইসলামিক স্কলারদের মতে অগ্নিশিখার শেষ প্রান্ত থেকে জ্বীনরা সৃষ্টি, আবার কেউ বলে বিশুদ্ধ আগুন থেকে জ্বীন সৃষ্টি। জ্বীন কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে সে সম্পর্কে একমাত্র আল্লাহই ভালো জানেন! মানুষের সীমিত জ্ঞান দিয়ে আল্লাহর জ্ঞান আর কুরআনকে যাচাই বাছাই করা যাবে না। তবুত্ত এযুগে বিজ্ঞানপ্রেমী তরুণ-তরুণীরা "জ্বীন" সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা আর গবেষকরা কি বলে তা জানতে আগ্রহী। শক্তির নিত্যতা সূত্র অনুযায়ী মহাবিশ্বে particle ত্রর সমপরিমাণ অদৃশ্য antiparticle আছে। প্রশ্ন হল এই antiparticleকে জ্বীন বলা যায়? পদার্থবিদ্যা আর বর্তমান বিজ্ঞান কি জ্বীনের ব্যাখ্যা দিতে পারে? ইব্রাহিম বি. সৈয়দ, আমেরিকার কেনটাকিতে লুইসভিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন পারমাণবিক ঔষধ বিশেষজ্ঞ, তার মতে, আমাদের সূর্যের মতো নক্ষত্রে অবিশ্বাস্যভাবে গরম তাপের state of matterকে বলা হয় “প্লাজমা” যা থেকে জ্বীনদের জন্ম হয়। কোরআনের বর্ণিত ধোঁয়াহীন আগুন হিসাবে প্লাজমাটি ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। আর প্লাজমা থেকে তৈরি জ্বীন 'ভিন্ন' স্পন্দনশীল হারে ' হয়। অনেকেই হয়তো জানে প্লাজমা বিদ্যুৎ সঞ্চালন করতে সক্ষম। বিশ বছর আগে, 'জ্বীন সম্পর্কে একটি বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ' নামে একটি প্রবন্ধে, UFO বিষয়ে লেখক ক্রিস লাইন লিখেছিল জ্বীন সম্পর্কিত কিছু তথ্য। তার তত্ত্বটি হচ্ছে, জ্বীন হচ্ছে এমন এক সৃষ্টি যা মানুষ থেকে ভিন্ন স্পন্দনশীল হারে (vibratory rate) থাকার কারণে তারা সাধারণত মানুষের কাছে খালি চোখে দৃশ্যমান নয় অথবা আমাদের দ্বারা detectable হয় না। কেননা সাধারনভাবে মানুষ তার বাহ্যিক চোখ দিয়ে ততটুকুই দেখতে বা কান দিয়ে শুনতে পারে যতটুকু তাকে দেখা কিংবা শোনার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। তবে “সব জ্বীনই অদৃশ্য”- ভাবাটা ভুল কারণ কিছু জ্বীন মানুষের জগতে বসবাস করে। কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করে জ্বীন যদি শক্তির পরিবর্তন করে কোনো প্রাণীর আকার ধারন করে তবে বিজ্ঞানীরা তত্ত্বগতভাবে ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পদ্ধতিতে তাদের পরিমাপ করতে পারে। দর্শন শক্তি, শ্রবন শক্তি, ঘ্রান শক্তি, জিহ্বায় স্বাদ ও ত্বকে অনুভূতি শক্তি-এসব কাজ করে পাঁচটি ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে। পঞ্চ ইন্দ্রিয় ছাড়াও একটি ইন্দ্রিয় রয়েছে যে ইন্দ্রিয়টিকে অনেকে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় বলে যা দিয়ে তাই দেখা যায় যা বাহ্যিক চোখ দেখে না; তাই শোনা যায় যা বাহ্যিক কান শোনে না এবং তাই উপলব্ধি করা যায় যা সাধারন ভাবে মানুষ উপলব্ধি করে না। আপনার কি মনে হয় মানুষের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় দিয়ে অদৃশ্য জ্বীনের জগত দেখা বা উপলব্ধি করা সম্ভব?
কুরআনে জ্বীনকে বলা হয়েছে ‘ধোঁয়াহীন শিখা থেকে তৈরি (bodies of essential flame’, ‘smokeless flame’, or ‘smokeless fire’)। অনুরূপভাবে, ক্রিস লাইনের মতে জ্বীনের শরীর ইনফ্রারেড অংশের শক্তি বিকিরণ থেকে তৈরি (radiate energy from the infrared part of the spectrum) আর অন্যদিকে ফেরেশতাদের দেহ বর্ণের বিপরীত দিকের অদৃশ্য শক্তি থেকে তৈরি হয় - অর্থাৎ, বিজ্ঞানীদের মতে অতিবেগুনী (ultraviolet) থেকে ফেরেশতারা তৈরি; এ কারনে ফেরেশতারা সাধারণত মানুষের কাছে অদৃশ্য। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বর্ণালীতে (electromagnetic spectrum) ইনফ্রারেডের নীচে মাইক্রোওয়েভ বিকিরণ পাওয়া যায়। পৃথিবীর বৃষ্টির সময় আয়োনাজাইশেন, বজ্রপাত ও বায়ুমন্ডলে মাইক্রোওয়েভের প্রসারের ফলে জ্বীনদের অসুবিধার সৃষ্টি হতে পারে।কিছু জ্যোতিষশাস্ত্রবিদের মতে, সোলার সিস্টেমের কিছু অংশে extraterrestrial beings "extremophile microorganisms" আকারে থাকে। আর নাসার তথ্য অনুযায়ী অন্যান্য জগতের species "microbes" ধরনের। ক্রিস লাইনের তথ্য অনুযায়ী, জ্বীনরা বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন প্রজাতি এবং তাদের বুদ্ধিমত্তা অন্তত দুটি স্তরের কাজ করে: (1) ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক শক্তি ব্যবস্থার মধ্যে, এবং (2) একটি সূক্ষ্ম আধ্যাত্মিক (psychic) শক্তি হিসাবে। আল্লাহর অবাধ্য জাদু অনুশীলনকারী ক্বারিন জ্বীন মানুষের মনের কিছু দিক নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে যেমনঃ খারাপ স্বপ্ন দেখানো, পার্থিব বিভ্রম তৈরি করা, কল্পনা এবং অভিজ্ঞতা তৈরি করা ইত্যাদি যেমনটা বর্তমান প্রযুক্তি হোলিগ্রাম (holograms) তৈরি করতে পারে।তবে অবশ্যই জ্বীন-শয়তান মুসলমানদের কোন ক্ষতি করতে পারে না আল্লাহর হুকুম ব্যতীত। জন্মগ্রহণের সময় প্রত্যেক মানুষের সাথে চারজন ফেরেশতা (Quran 82:10-12) এবং একজন ক্বারিন জ্বীন নিয়োগ করা হয় (Muslim, 2814) । Parallel relam এ বাস করা ক্বারিন জ্বীন হল প্রতিটি মানুষের জন্ম থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত immaterial ছায়াসঙ্গী যে বেশির ভাগ সময়েই তাদের নেতা ইবলিসের জন্য কাজ করে। এই আল্লাহর অবাধ্য ক্বারিন জ্বীনের কাজ হল মানুষকে মানুষের কণ্ঠস্বর অনুকরন করে ফিসফিস করে মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা বা খারাপ পরামর্শ দেয়া আর পাপকে আকর্ষণীয় করে দেখানোর মাধ্যমে পাপ কাজ করতে উৎসাহিত করা। যারা অতিসহজেই রেগে যায় ত্রবং যারা তাদের ইন্দ্রিয়কে মূল্যহীন অপবিত্র কাজে বেশি ব্যস্ত রাখে তাদের ক্বারিন জ্বীন সহজেই কুমন্ত্রণা দিতে পারে কিন্তু যারা কুরআন পড়ে-শুনে এবং আল্লাহ তা'আলাকে স্মরণ তাদের সর্তক করার জন্য আল্লাহ তাদের জন্য সুপরামর্শদাতা ফেরেশতা নিয়োজিত করেন। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন: “কাজেই তোমরা আমাকে স্মরণ কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করব।” ক্বারিন জ্বীনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হল অহংকারী, দুষ্টপ্রকৃতির ও একগুঁয়ে এবং সে তার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য মানুষের মধ্যে নিয়ে আসার চেষ্টা করে। ক্বারিন জ্বীন মানুষের জীবনের ঘটে যাওয়া ঘটনার সাক্ষী তাই কিছু গণক মানুষের সাথে ক্বারিন থাকা জ্বীনের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে সে ব্যক্তির অতীত বা জীবনের কিছু তথ্য বলতে পারে।
পৃথিবীতে দুটি জগত রয়েছে। আল্লাহ পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করেছেন তিনি সবকিছু জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন। জ্বীনের জগত মানুষের জগত সৃষ্টির আগেই পৃথিবীতে ছিল। “সুরা ফাতিহা” যদি আরবি থেকে অনুবাদ করা হয় তবে প্রথম লাইনটির অর্থ হবে “সকল প্রশংসা আল্লাহর যিনি জগতসমূহের মালিক”। এই লাইনটি লক্ষ্য করলেই বুঝতে পারবেন এই জগত ছাড়াও আরো জগত আছে। মানুষের জগতের মত আরেকটা জগত তৈরি করতে সক্ষম আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা। আল্লাহ বলেছেনঃ”যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন, তিনিই কি তাদের অনুরূপ সৃষ্টি করতে সক্ষম নন? হ্যাঁ তিনি মহাস্রষ্টা, সর্বজ্ঞ।” (সূরা ইয়াসীন) জ্বীন-শয়তান আল্লাহর কছে বিশেষ ক্ষমতা চেয়েছিল যার মাধ্যমে তারা মানুষকে দেখবে এবং তারা মানুষের সাথে থাকবে কিন্তু মানুষ সাধারণভাবে তাদের দেখতে পারবে না যা ইঙ্গিত করে প্যারালাল জ্বীন জগতকে। আল্লাহ বলেছেনঃ … “সে (শয়তান) এবং তার দলবল তোমাদেরকে দেখে, যেখান থেকে তোমরা তাদেরকে দেখ না। আমি শয়তানদেরকে তাদের বন্ধু করে দিয়েছি, যারা বিশ্বাস স্থাপন করে না।” … (সূরা আল-আরাফ; আয়াত: ২৭) আল্লাহ বলেছেনঃ “পবিত্র তিনি যিনি যমীন থেকে উৎপন্ন উদ্ভিদকে, তাদেরই মানুষকে এবং যা তারা জানে না (জ্বীন), তার প্রত্যেককে জোড়া জোড়া করে সৃষ্টি করেছেন” (সূরা ইয়াসীন, 36)। দু’জগতেই আল্লাহ নিয়ামত দান করেছেন। জ্বীন ও মানুষের উভয় জগতে ভিন্ন চন্দ্র, সূর্য, সাগর, আকাশ ইত্যাদি রয়েছে। আল্লাহ বলেছেনঃ“অতএব, তোমরা উভয়ে (জ্বীন ও মানুষ) তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অনুগ্রহকে অস্বীকার করবে?”(সূরা আর রহমান) জ্বীন ও মানুষের জগতে রয়েছে দুটি পৃথক পূর্ব ও পশ্চিম দিক। আল্লাহ বলেছেনঃ “আল্লাহ দুই উদয়াচল ও দুই অস্তাচলের মালিক।”(সূরা আর রহমান) রসায়নবিদ William Crooks আবিষ্কার করে আমাদের চারপাশে অদৃশ্য ইলেকট্রিক অবজেক্ট আছে যা প্যারালাল জগত থাকার প্রমাণ দেয়। আইনস্টাইন, Stephen Hawking এবং অন্যান্য বিজ্ঞানীদের তত্ত্ব (quantum particles, quantum mechanics, photon and wave–particle duality, PLASMA world ইত্যাদি) থেকে প্যারালাল জগত থাকার ধারণা পাওয়া যায়। অনেক পর্দার্থবিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করে জ্বীনরা Parallel Universe-এ বাস করে; মানব এবং জ্বীন জগতের মধ্যে একটি পর্দা (barrier) আছে। কুরআনে উল্লেখ আছে “উভয়ের মাঝখানে আল্লাহ তৈরি করেছেন এক অন্তরাল (barrier বা veil/পর্দা), যা তারা অতিক্রম করে না।”( সূরা আর রহমান) পৃথিবীতে এমন নদীর নির্দেশন দেখতে পাওয়া যায় যা পাশাপাশি বয়ে যায় কিন্তু একসাথে মেশে না যেমন Rio Negro ও আমাজন নদী। এই নির্দশন আমাদের বুঝতে শেখায় জ্বীন ও মানুষের জগত পাশাপাশি কিন্তু তাদের মধ্যে আছে পর্দা (barrier/partition)। জ্বীন ও মানুষ উভয় জগতের বাসিন্দাকে সৃষ্টি করা হয়েছে শুধুমাত্র তাদের স্রষ্টা আল্লাহর ইবাদাত করার জন্য। তাদেরকে একে অন্যের জগতের সাথে যোগাযোগ করার অনুমতি দেয়া হয়নি। যেসব জ্বীন মানুষের জগতে এসে মানুষকে পথভ্রষ্ট করার চেষ্টা করে এবং যেসব মানুষ আল্লাহর অনুমতি ছাড়া জ্বীনদের জগতের সাথে যোগাযোগ করে তারা উভয়ই সীমালঙ্ঘনকারী। আল্লাহ উভয় জগত পাশাপাশি সৃষ্টি করেছেন পরীক্ষা করার জন্য জ্বীন ও মানুষের মধ্যে কে কর্মে শ্রেষ্ঠ? আল্লাহ বলেছেনঃ “যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন-কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়।” (সূরা মূলক) অনেক বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করে প্যারালাল জগতে প্রতিটি মানুষের মত দেখতে যমজের ন্যায় other self/dark energy আছে যা ইঙ্গিত করে ক্বারিন জ্বীনকে। জ্বীনদের আয়ু মানুষের চেয়ে বেশি তাই অনেক ক্ষেত্রে মানুষ মারা গেলেও তার মত দেখতে তার সাথে থাকা ক্বারিন জ্বীন কি প্যারালাল জগতে বেঁচে থাকতে পারে? অনেক সময় psychic mediumরা মৃত মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারে দাবি করে; তারা কি আসলে মৃতের ক্বারিন জ্বীনের সাথে যোগাযোগ করে ? “I see dead people” - এটা কতটুকু সত্য? সঙ্গীতশিল্পী জন লেননের মৃত্যুর পর তাকে নাকি অনেকে দেখেছে। মৃত মানুষ এর বেশে জ্বীনকে দেখা কিন্তু অসম্ভব কিছুই নয়। ত্রকটি হাদিস ইঙ্গিত করে জ্বীন-শয়তানরা মৃত মানুষের রূপ ধারণ করতে পারে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ "দাজ্জাল মানুষের কাছে গিয়ে বলবেঃ আমি যদি তোমার মৃত পিতা-মাতাকে জীবিত করে দেখাই তাহলে কি তুমি আমাকে প্রভু হিসেবে মানবে? সে বলবে অবশ্যই মানব। এ সুযোগে (দাজ্জালের সহযোগী) শয়তান তার মৃত পিতা-মাতার আকৃতি ধরে সন্তানকে বলবেঃ হে সন্তান! তুমি তার অনুসরণ কর।"
আল্লাহ মানুষ ও জ্বীনকে পরীক্ষা করার জন্য আধ্যাত্মিক জগতের কিছু ক্ষমতা দেয়া হয়েছে যার মাধ্যমে মানুষ ও জ্বীন ত্রকে অন্যের সাথে যোগাযোগ করতে পারে ত্রবং একে অন্যের জগতে প্রবেশ করতে পারে (they can shift/transfer the energy from one realm to another realm/transcend mental or spiritual barriers)। যারা এই আধ্যাত্মিক বা মানসিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে তারা আল্লাহর অবাধ্য ও সীমালঙ্ঘনকারী। সীমালঙ্ঘনকারী জ্বীনরা ত্রক শক্তি থেকে অন্য শক্তিতে রূপান্তরিত করার মাধ্যমে অনেক কিছুকে স্থানান্তরণ করতে পারে। জ্বীন-উপাসকরা বিশ্বাস করে মানুষের দুইটা আত্মা থাকে যাকে তারা বলে “Twin flame” বা “যমজ আত্মা” (two souls/ mirror souls) আর এই দুটি আত্মার মাঝে আধ্যাত্মিক যোগাযোগ থাকে। আসলে মানুষের আত্মা একটাই থাকে তাহলে এই “যমজ আত্মা” কে? “যমজ আত্মা” না বরং এই সত্ত্বাটি হল মানুষের সাথে থাকা ক্বারিন জ্বীন যে ইবলিসের পরিকল্পনা অনুযায়ী মানুষের নফসকে প্রলুব্ধ করে। আল্লাহ জ্বীন-শয়তানদের মানুষের জগত দেখার আর তাদের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়ার ক্ষমতা দিলেও মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করার অনুমতি দেননি। ক্বারিন জ্বীন মূলতঃ আল্লাহর অবাধ্য শয়তান তবে মানুষের সাথে থাকা জ্বীন মুসলমান হতে পারে। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে থাকা ক্বারিন জ্বীন আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করেছিল তাই সে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে কুমন্ত্রণা দিত না। মানুষের সাথে থাকা ফেরেশতা ভালো কাজ করার পরামর্শ দেয়। কিন্তু আপনি কি ভালো কাজের সিদ্ধান্ত নেবেন না খারাপ কাজের সিদ্ধান্ত নেবেন - তা আপনার উপর। বেশির ভাগ সময় দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় মানুষ শয়তানের প্ররোচনায় ভুল সিদ্ধান্ত নেয়। আল্লাহ বলেছেন: মানুষ বড়ই দ্রুততা প্রিয়। [বনী ইসরাঈল, আয়াত: ১১] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,“ধীরস্থিরতা আল্লাহর পক্ষ থেকে আর তাড়াহুড়া শয়তানের পক্ষ থেকে”। কিছু মানুষ বলে “আমার মন যা বলে আমি তাই করি।” সে তার মনের দাস নয়, সে শয়তানের দাস! নিজের মনের ইচ্ছাকে আল্লাহর আদেশের কাছে আত্মসমর্পণ করাই মুসলমানের বৈশিষ্ট্য। জেনেশুনে আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে যারা শয়তানের কুপরামর্শ ও নিজের মনের ইচ্ছা অনুযায়ী চলে তারাই পথভ্রষ্ট। আল্লাহ বলেছেনঃ “আপনি কি তার প্রতি লক্ষ্য করেছেন, যে তার খেয়াল-খুশীকে স্বীয় উপাস্য স্থির করেছে? আল্লাহ জেনে শুনে তাকে পথভ্রষ্ট করেছেন, তার কান ও অন্তরে মহর এঁটে দিয়েছেন এবং তার চোখের উপর রেখেছেন পর্দা। অতএব, আল্লাহর পর কে তাকে পথ প্রদর্শন করবে? তোমরা কি চিন্তাভাবনা কর না?” ইন্দ্রিয়কে অপবিত্র ও অপ্রয়োজনীয় কাজে বেশি নিয়োজিত করলে ফেরেশতা মানুষের সাথে থাকতে পারে না সেক্ষেত্রে ক্বারিন জ্বীনের কুমন্ত্রণায় মানুষ বেশি পাপ কাজে লিপ্ত হয়। নিজের মন্দ চিন্তাভাবনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা হচ্ছে জিহাদ। আল্লাহ বলেছেন: "আল্লাহর হেদায়েতের পরিবর্তে যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির (মনের কামনার) অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে? নিশ্চয় আল্লাহ জালেম সম্প্রদায়কে পথ দেখান না।" (সূরা আল কাসাসঃ ৫০) যখন শয়তান খলিফা হযরত ওমর (রাঃ) কে খারাপ পরামর্শ দেওয়ার চেষ্টা করত, তখন তিনি শয়তানের পরামর্শের ঠিক বিপরীত কাজ করতেন। কোরআন আর হাদিস পুড়ুন। তাহলে বুঝতে পারবেন কোনটা সঠিক কাজ এবং কোনটা ভুল সিদ্ধান্ত। মুমিন চেনে শয়তান আর ফেরেশতার কণ্ঠস্বরের পার্থক্য। ফেরেশতা বেশির ভাগ সময় পাপ কাজ থেকে সর্তক করার জন্য মানুষকে তার নাম ধরে ডাকে কিন্তু শয়তান যখন মানুষকে পাপ করতে উৎসাহ দেয় তখন তার কণ্ঠস্বর নিজের কণ্ঠস্বরের মতই মনে হয় যেন নিজের মন নিজের সাথে কথা বলছে। “যদি শয়তানের পক্ষ থেকে আপনি কিছু কুমন্ত্রণা অনুভব করেন, তবে আল্লাহর শরণাপন্ন হোন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।” [সূরা হা-মীম আস সাজদাঃ ৩৬] যে ব্যক্তি আল্লাহকে স্মরণ করে আল্লাহও তাকে স্মরণ করে। আল্লাহ আদমকে বলেছিলেন: "আল্লাহর বাক্যই ফেরেশতা আপনার হৃদয়ে প্রকাশ করে।" আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বলেছেন: "নিশ্চয় তিনি (জিবরাঈল) আল্লাহর নির্দেশে আপনার অন্তরে তা প্রকাশ করেছেন।" '(২7: 97)
মানুষের সাথে থাকা জ্বীন কি মানুষের মনের কথা পড়তে পারে? না।মানুষের মনের কথা এক আল্লাহ ব্যতীত কেউ জানেন না। তবে মানুষের ইন্দ্রিয় দিয়ে ক্বারিন জ্বীন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে। যেমনঃ আপনি কি ফোনে ম্যাসেজ পাঠালেন তা ক্বারিন জ্বীন পড়তে পারে আপনার চোখ দিয়ে; আপনি যা দেখছেন টিভিতে তা ক্বারিন জ্বীন আপনার চোখ দিয়ে দেখতে পারে; আপনি আয়নায় নিজেকে দেখলে ক্বারিন জ্বীনও আপনাকে দেখতে পারে; আপনি যা শুনছেন তা ক্বারিন জ্বীনও শুনতে পারে এ কারনে আপনি যা দেখছেন ও শুনছেন সে অনুযায়ী সে কুমন্ত্রণা দিতে পারে তবে আপনি কি সিদ্ধান্ত নেবেন তা সে জানে না। অনেকসময় মিডিয়ায় “একচক্ষু বিশিষ্ট” বা “all seeing eye” লোগো দেখতে পাওয়া যায় কারন এই লোগো আপনাকে স্মরণ করিয়ে দেয় ক্বারিন জ্বীনও আপনাকে দেখছে আপনারই ইন্দ্রিয়ের মাধ্যমে (Those Eyes Are Watching You)। মানুষের শরীরের বেশিরভাগ অণু ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ক্ষেত্রের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির সাথে দুর্বলভাবে যোগাযোগ করে। বিভিন্ন কারনে মানুষের দেহের জীবন্ত কোষে বৈদ্যুতিক, চৌম্বকীয় বা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক শক্তি উৎপন্ন হতে পারে যা Bioelectromagnetism (bioelectricity) নামে পরিচিত। বর্তমানের ডিজিটাল প্রযুক্তি এবং ইলেকট্রনিক্স যেমন টেলিভিশন, ল্যাপটপ, মোবাইল, ইন্টারনেট ইত্যাদির ব্যবহারে Tissue heating, মস্তিষ্কের electrical activity ত্রর উপর প্রভাব বিস্তার ত্রবং radiofrequency ও Ionizing radiation ত্রর কারনে ক্যানসার হয়। তাছাড়া আধুনিক ইলেকট্রনিক্স ও ডিজিটাল প্রযুক্তি স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নানা ধরনের রেডিয়েশন আছে যেমনঃ রেডিও ওয়েভ, মাইক্রোওয়েভ, ইনফ্রারেড, এক্সরে, গামা রে, ত্রবং Radiofrequency তরঙ্গ যা electromagnetic ক্ষেত্র তৈরি করে- যার মাধ্যমে জ্বীন-শয়তান মানুষের ডিজিটাল জীবনকে বেশি প্রভাবিত করে কারন জ্বীন-শয়তান ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক তরঙ্গ ব্যবহার করে যোগাযোগ করতে পারে। মানুষের auric ক্ষেত্রে কম্পন তরঙ্গের সৃষ্টি হয় ত্রমন কাজগুলো বেশি করলে জ্বীন-শয়তানের মানুষের কাছাকাছি আসে যেমনঃ বাদ্যযন্ত্র। Aura বা জীবের প্লাজমা ক্ষেত্রের (Phantom Field Effect-high-energy electric field) ছবি তুলতে সক্ষম বর্তমানের Kirlian Photography যা জ্বীনেরও ছবি তুলতে পারে।
গবেষকরা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল এবং তার বাস্তব কাঠামোর একটি পর্যবেক্ষণ পরিচালনা করে জানিয়েছে যে পৃথিবীর চারপাশে অদৃশ্য বিভিন্ন ধরণের planes রয়েছে যা ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক শক্তি দিয়ে সংযুক্ত হতে পারে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উল্লেখ করেছিলেন যে ভূমিকম্প আসে শয়তানের মাথা থেকে। গবেষকরা আবিষ্কার করেছে এই ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক প্রভাবের কারনে ভূমিকম্পের সৃষ্টি হয়। ভূমিকম্পের একটি বিশেষ কারন জ্বীন-শয়তানের আধ্যাত্মিক শক্তির ব্যবহার তাই যখন কোন জাতিতে ভূমিকম্পের সংখ্যা বেড়ে যাবে তখন বোঝা যাবে তাদের মধ্যে গোপনে ও প্রকাশ্যে জাদুচর্চা ও জ্বীন-শয়তান সাধনাও বেড়েছে।
তাহলে যেসব মানুষ জাদুচর্চা করে কিংবা জ্বীনদের সাথে যোগাযোগ করে সাহায্য প্রার্থনা করে তারা কিভাবে জ্বীনদের সাথে যোগাযোগ করে? মানুষের মস্তিষ্কে থাকা চোখের ন্যায় "পিনাইনাল গ্রন্থি" (pineal gland) আধ্যাত্মিক জগত এবং ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের সাথে জড়িত বলে বিশ্বাস করা হয় যা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের কাছে বিভিন্ন নামে পরিচিত যেমনঃ হিন্দুদের কাছে তৃতীয় চক্ষু, অন্তচক্ষু, প্রাচীন মিশরীয়দের The Eye of Horus ইত্যাদি। ক্বারিন জ্বীনেরও তৃতীয় চক্ষু আছে। যেসব ক্বারিন জ্বীন ইবলিসের আদেশে তৃতীয় চক্ষু সক্রিয় করে, তারাই মূলতঃ তৃতীয় চক্ষু সক্রিয়কারী মানুষের সাথে সাধনার মাধ্যমে যোগাযোগ করে। কেন পিনাইনাল গ্রন্থিকে চোখের ন্যায় বুঝানো হয়? কারন চোখের retina আর pineal gland এর মধ্যে biological সাদৃশ্য আছে। মনের দেখা আধ্যাত্মিক জগতকে এই পিনাইনাল গ্রন্থির সাহায্যে দেখা যায় বলে পাগানরা একে "মনের চোখ" বা "অন্তর চোখ" (mind’s eye) বলে অভিহিত করে। কিন্তু পাগান ও পৌওোলিকদের মত ইসলাম বলে না মস্তিষ্কের ভেতরে আছে অন্তর চোখ। আল্লাহ Al-Qareeb- القريب; তিনি নিকটেই আছেন। মস্তিস্কের তৃতীয় চক্ষুর সাথে (পিনারাল গ্রন্থি) সংযুক্ত হওয়ার সাধনার চেয়ে বরং আল্লাহের কাছাকাছি আসার জন্য Sadr- صدر(বক্ষ বা অন্তর) দিয়ে উপলব্ধি করা প্রয়োজন। আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাসী দার্শনিক আর চিকিৎসকরা বলে মন বা অন্তরচোখ থাকে মস্তিষ্কে (পিনাইনাল গ্রন্থি)। কুরআন আর হাদিস মস্তিষ্কের চেয়ে গুরুত্ব দিয়েছে Sadr- صدر(বক্ষ বা অন্তর)কে। আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: তাকওয়া হচ্ছে- এখানে, তিনি নিজের বুকের দিকে তিনবার ইশারা করেন। [মুসলিম: ২৫৬৪] বক্ষের অন্তর চোখ না খুললে যতই পাগান আর পৌওোলিকরা মাথার ভেতরে তৃতীয় চক্ষু (পিনাইনাল গ্রন্থি) খুলুক না কেন তারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে পারবে না! কারন তৃতীয় চক্ষুকে সক্রিয় করে সীমালঙ্ঘনকারী মানুষ যখন জ্বীন-শয়তানের সাথে যোগাযোগ করে তখন জ্বীন-শয়তানেরা তাদের আল্লাহর পথের বদলে ভুল পথে পরিচালিত করে।আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাসীদের অন্ধতা বাহ্যিক চোখের নয়, আল্লাহ বলেছেনঃ “বস্তুতঃ চক্ষু তো অন্ধ হয় না, কিন্তু বক্ষ স্থিত অন্তরই অন্ধ হয়।” [সূরা হাজ্জ, আয়াতঃ ৪৬] নবী সা: বলেছেন: “মুমিনের সাথে কাফেরের পার্থক্য হল নামায।” নামাযের বদলে যারা শয়তানের সাধনায় মন্ত্র পড়ে মস্তিষ্কের তৃতীয় চোখকে সক্রিয় করার চেষ্টা করে তারা আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাসী আর তাদের অপবিত্র অন্তরের সঙ্গী হয় শয়তান। আল্লাহ বলেছেনঃ "আপনি কি লক্ষ্য করেননি যে, আমি কাফেরদের উপর শয়তানদেরকে ছেড়ে দিয়েছি। তারা তাদেরকে বিশেষভাবে (মন্দকর্মে) উৎসাহিত করে"।(Maryam: 83) যারা শয়তানকে ডাকে তারা তাদের অন্তরে শয়তানকে আমন্ত্রণ জানায় আর যারা আল্লাহকে চায় তারা আল্লাহকে ডাকে এতে শয়তান মুমিনদের অন্তর থেকে দূরে থাকে। মুসলমানরা মস্তিষ্কের তৃতীয় চক্ষুকে সক্রিয় করে জ্বীন থেকে আধ্যাত্মিক ক্ষমতা লাভের চেষ্টা করে না বরং তারা মাথার তৃতীয় চক্ষুকে মাটিতে রেখে সেজদার মাধ্যমে আল্লাহ তায়া’লার কাছে নিজেকে আত্মসমর্পণ করে। আল্লাহ তায়া’লা এবং তাঁর বান্দার মধ্যে যোগাযোগের সূত্র হচ্ছে নামায। প্রাচীন মিশরের ফেরাউনের মত আল্লাহর সব অবাধ্য জাতিই এই "তৃতীয় চক্ষু" সক্রিয় করে শয়তান সাধনার মাধ্যমে অমর হতে চেয়েছিল। পিনাইনাল গ্রন্থিটি মস্তিষ্কের তৃতীয় ভ্যান্টিকেলের উপরিভাগে যা নাকের পিছনে উপরিভাগে cerebrospinal fluid এ ভাসমান। 166২ খ্রিস্টাব্দে ডেসকার্টস পিনাইনাল গ্রন্থিকে "আত্মার আসন"( the seat of the soul) হিসেবে অভিহিত করে। আসলে কি এটা আত্মার আসন নাকি শয়তানের আসন? রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেনঃ "তোমাদের মধ্যে কেউ যখন ঘুম হতে জাগ্রত হয়ে উযূ করে, সে যেন তিনবার নাক ঝেড়ে নেয়। কেননা শয়তান নাকের (মস্তক সংলগ্ন) ছিদ্রের উপরিভাগে রাত্রি যাপন করে।" (সুনানে আন-নাসায়ী:90) দেবদেবী ও মূর্তিপূজারীদের (পাগান ও পৌওোলিক) বিশ্বাস অনুযায়ী গভীর সাধনার (the seventh chakra, বা crown chakra; the awakening state বা তৃতীয় চক্ষু) মাধ্যমে মানুষের মস্তিষ্কের “তৃতীয় চক্ষু” খুলে গেলে তাদের দেবতাদের (জ্বীনদের) দেখা যায় এবং গভীর সাধনার মাধ্যমে তারা পৃথিবী থেকে অন্য জগতে স্থানান্তর এবং ভ্রমণ করতে পারে। তাই যারা জাদুবিদ্যা চর্চা করে কিংবা জ্বীনদের উপাসনা করে তারা তৃতীয় চক্ষু বা পিনাইনাল গ্রন্থিকে সক্রিয় করার জন্য সাধনা করে যেন তারা জ্বীনদের সাথে আধ্যাত্মিক জগতে যোগাযোগ করতে পারে। তাদের বিশ্বাস এই মস্তিষ্কে থাকা তৃতীয় চক্ষু/পিনাইনাল গ্রন্থি খুলে গেলে মানুষের মধ্যে শ্রবণ ক্ষমতা, দৃষ্টিশক্তি ইত্যাদি ক্ষমতার বৃদ্ধি পায় আর মানুষের সাথে থাকা ক্বারিন জ্বীন থেকে জ্ঞান লাভ করতে পারে। তারা এই জ্ঞান লাভের মাধ্যমে নিজেদের “আলোকিত”(so-called enlightenment) মনে করে। শয়তানের সাথে যোগাযোগকৃত এইসব আলোকিত ব্যক্তিরা অধিকাংশ সময় জ্বীন-শয়তানের আদেশে চলে। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে- “আর এই যে মানুষের মধ্যের কিছু লোক জ্বীন জাতির কিছু লোকের আশ্রয় নিত, ফলে ওরা তাদের পাপাচার বাড়িয়ে দিত।” (সূরা জ্বীন, ৬) গভীর সাধনার মাধ্যমে তাদের তৃতীয় চক্ষু খুলেছে বলে দাবি করে তারা নানা ধরনের geometric shapes, পশু, স্পেসশীপ ইত্যাদি দেখতে পায়, ভবিষ্যদ্বাণী ও জ্বীনদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন secret society ও অরগানাইজেশনেও এমন জ্বীনসাধনা করা হয়। ইদানীং দেশে-বিদেশে মিডিয়া আর অরগানাইজেশনগুলোর লোগোতে বিভিন্ন ধরনের পাগান ও পৌওোলিকদের জ্বীনদের সাথে যোগাযোগের প্রতীক, চিহ, সংখ্যা, ভঙ্গি ইত্যাদি ব্যবহার করতে দেখা যায় , যেমনঃ ট্রায়াঙ্গল, এক চোখের ন্যায় ইত্যাদি। এই প্রতীক ব্যবহার ইঙ্গিত করে যে বর্তমান বিশ্বের শাসক, শীর্ষধনী, বিজ্ঞানী, সেলিব্রিটিরা পাগান ও পৌওোলিকদের মত পার্থিব লাভের জন্য গোপনে ও প্রকাশ্যে জাদুচর্চা ও জ্বীন-শয়তানের সাধনা করছে। জ্বীনদের কাছে সাহায্য প্রার্থনা ইসলামে “শির্ক” হিসেবে গণ্য। আল্লাহ বলেন: “নিশ্চয়ই শির্ক একটি মস্ত বড় অন্যায়” (সুরা লোকমান: ১৩)“নিশ্চয়ই আল্লাহ তা’আলা তার সাথে শির্ক করার অপরাধ ক্ষমা করবেন না। এ ছাড়া অন্য সকল গুনাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করে দিবেন” (সুরা নিসা: ৪৮)। “নিশ্চয় যে আল্লাহ’র সাথে শির্ক করবে আল্লাহ তার উপর জান্নাত হারাম করে দেবেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। জালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই।” (সূরা মায়িদাহ: ৭২) তাই মুসলমানরা প্রতি নামাযে “সুরা ফাতিহা”তে বলে “আমরা শুধুমাত্র এক আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি”। মুসলমানরা কেবল এক আল্লাহর উপর ভরসা করে; আল্লাহর পরিবর্তে জ্বীন-শয়তানের সাহায্য প্রার্থনা করে না। আল্লাহর ধ্বংসপ্রাপ্ত সভ্যতা যারা জ্বীন-শয়তানের পূজা করত সেসব সভ্যতার ধ্বংসাবশেষে ত্রখনো অভিশপ্ত জ্বীন-শয়তানেরা অবস্থান করে।ফেরাউনের মত প্রাচীন সভ্যতার কাফের শাসক যারা বিচারদিবসে বিশ্বাস করত না, তাদের মৃত্যুর পর তাদের মৃতদেহের সাথে প্রচুর পরিমাণে ধন-সম্পদ দিয়ে দেয়া হত যেন তারা পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসলে তা ভোগ করতে পারে।সেসব অভিশপ্ত মৃতদেহের সাথে রাখা সম্পদগুলো ত্রখনো পাহারা দেয় কিছু জ্বীন-শয়তানেরা। তাই যারা জ্বীন-শয়তানের উপাসনা করে তারা সমস্ত অভিশপ্ত স্থানে গিয়ে জ্বীনদের সাথে যোগাযোগের জন্য গভীর সাধনা করে যেখানে তাদের তৃতীয় চক্ষুর সক্রিয়তা বেশি থাকে। যেমনঃ জ্বীনসাধকরা গিজার পিরামিডে গিয়ে জ্বীনদের সাথে যোগাযোগের জন্য ধ্যান করে। আল্লাহ বলেছেনঃ “তারা কি এই উদ্দেশ্যে দেশ ভ্রমণ করেনি, যাতে তারা সমঝদার হৃদয় ও শ্রবণ শক্তি সম্পন্ন কর্ণের অধিকারী হতে পারে? বস্তুতঃ চক্ষু তো অন্ধ হয় না, কিন্তু বক্ষ স্থিত অন্তরই অন্ধ হয়।” মানুষের জ্বীনদের সাহায্যের নেয়ার প্রয়োজন নেই। বরং জ্বীনদের আল্লাহ আদমকে সেজদা করার আদেশ দিয়েছিলেন। সাহায্যকারী হিসেবে ত্রকমাত্র আল্লাহই যথেষ্ট। বেশির ভাগ জাদুবিদ্যাচর্চাকারী, জ্বীন উপাসকরা বিশ্বাস করে জ্বীনরা গায়েব ও ভবিষ্যত জ্ঞানের অধিকারী যা শির্ক।আল্লাহ ব্যতীত কেউ পুরোপুরি গায়েবের খবর জানে না, ত্রমনকি নবীরাসূলদেরও ততটুকুই জ্ঞান দেয়া হয়েছে যতটুকু আল্লাহ দিতে চেয়েছেন। কুরআনে বর্নিত আছে যে নবী সুলাইমান (আলাইহি-আস-সালাম) ত্রর অধীনসহ জ্বীনরা নবীর মৃত্যুর পরও বুঝতে পারেনি যে সুলাইমান (আলাইহি-আস-সালাম) বহু আগেই মারা গেছেন সুতরাং জ্বীনরা সব গায়েবের যদি গায়েবের খবর জানত তবে আগেই বেহেশতে প্রবেশের দরজা দিয়ে প্রবেশ করত!
বেশ কিছু পশুপাখির পিনাইনাল গ্রন্থি সক্রিয় থাকে যেমনঃ ব্যাঙ, কুকুর, ঠান্ডা রক্ত বিশিষ্ট সরীসৃপ ও অন্যান্য। তৃতীয় চক্ষু সক্রিয় থাকা সত্ত্বেও এই প্রাণীরা “আশরাফুল মাখলুকাত” (সৃষ্টির সেরা জীব) নয়। যেসব পশুপাখির তৃতীয় চক্ষু সক্রিয় থাকে শয়তান তাদের উপর ভর করতে পারে সহজেই। এ কারণে ঘরে কুকুর ও কিছু বিশেষ পশু ঘরে রাখলে ফেরেশতারা প্রবেশ করতে পারে না। অনেক পশুপাখি অন্যান্য জগত অনুভব করতে পারে, শ্রবণ করতে পারে ত্রবং দেখতে পারে যা সাধারন মানুষ দেখতে অথবা অনুভব করতে পারে না। যেমনঃ অনেক পশু কবরের আযাব শুনতে পায়। Al-Barzakh বলতে বুঝানো হয় শারীরিক ও আত্মিক জীবনের মধ্যে পৃথকীকৃত পর্দাকে। মৃত্যুর পর মানুষ যে (Barzakh) জগতে যায় সে জগত ও পৃথিবীর মধ্যেও একটি পর্দা থাকে যেখানে রুহ অপেক্ষা করে বিচারদিবস পর্যন্ত। সেই (Barzakh) জগতে এ রূহ দেখতে পায়; শুনতে পায় ও তার ইন্দ্রিয় থাকে তাই কবরের আযাব পৃথিবীর মানুষেরা না বুঝলেও তা মৃতরা অনুভব করতে পারে। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ “তোমরা গভীর রাতে খুব কম বাইরে বের হবে। কেননা আল্লাহ তাআলা তার কতক (ক্ষতিকর শয়তান) জীবজন্তুকে এ সময় স্বাধীনভাবে বিচরণ করতে ছড়িয়ে দেন। তোমাদের কেউ কুকুরের ঘেউঘেউ এবং গাধার ডাক শোনলে যেন আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে। কারণ এরা (এমন কিছু) দেখতে পায় যা তোমরা দেখো না।” (আবু দাউদ, আহমাদ) সব কুকুর বা সব পশু জ্বীন-শয়তান না, তবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন কালো কুকুর শয়তান। সব জ্বীন তাদের নিজের আকৃতি পরিবর্তন করে অন্য প্রাণীর আকার ধারন করতে পারে না ত্রবং তাদের জগত থেকে মানুষের জগতকে দেখতে পারে না, কেবল আল্লাহর অবাধ্য জ্বীন-শয়তান যারা ইবলিসের কথা মেনে চলে এবং জাদুবিদ্যা চর্চা করে তারাই কেবল নিজেদের তৃতীয় চক্ষু ব্যবহার করে তৃতীয় চক্ষু সক্রিয় থাকা কিছু বিশেষ প্রাণী যেমনঃ বাঘ, কালো কাক, সিংহ, হাতি, সরীসৃপ, কালো কুকুরের দেহে ভর করে মানুষের জগতে বিচরণ করে। এজন্য অনেক পাগান-পৌত্তলিকরা নানা ধরনের জীবজন্তু পূজা করে। প্রাচীন মিশরীয় ফেরাউন মৃত কুকুর আর বিড়ালকে মামিফিকেশনের মাধ্যমে সংরক্ষিত রাখত। কারন তারা বিশ্বাস করত কুকুর আর বিড়ালের সক্রিয় তৃতীয় চক্ষু ব্যবহার করে তাদের দেবতারা (জ্বীন-শয়তান) সেসব প্রাণীর উপর ভর করে পৃথিবীতে পুনরায় আসতে পারবে।
যদিও বর্তমানে অনেক মনোচিকিৎসকরা জ্বীন-শয়তানের প্রভাবকে "মনের রোগ" বলে অভিহিত করে একগাদা ওষুধ প্রেসক্রাইভ করে কিন্তু বেশ কিছু Functional MRI ও Positron Emission Tomography (PET) রিপোর্ট ইঙ্গিত করে মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক আচরণের জন্য দায়ী external কিছু বা outside force (জ্বীন)।যেমনঃ alien hand syndrome যেখানে রোগীর হাত নিজের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায় যেখানে জ্বীনরা রোগীর motor activityকে ও nerve cell activity নিয়ন্ত্রণ করে; আবার কিছু ব্যক্তির শরীর অনিয়ন্ত্রিতভাবে কাপতে থাকে; Seizures (epilepsy) যেখানে অস্বাভাবিক electrical activity হয় ফলে মানুষের electrolyte imbalances হয়ে পড়ে; অনেকে অবেচতন হয়ে যায়, jinn possession এর কারনে multiple personality disorder হয়; schizophonia, মিথ্যা স্মৃতি, hallucinations, delusions ও স্মৃতিভ্রম হয় জ্বীনের কারনে; Foreign accent syndrome হয় যেখানে ব্যক্তি জ্বীন ভর করার কারনে বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে পারে ইত্যাদি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একবার জ্বীন ভর করেছিল তখন তারঁ নানা মিথ্যা কল্পনা বা স্মৃতির তৈরি হত যা তিনি করেননি।এ ধরনের মিথ্যা স্মৃতি মানুষকে হতাশ ও আত্মহত্যাপ্রবণ করে তোলে। তখন নবীজী কোন তাবিজ কিংবা ওষুধের উপর নির্ভর করেননি বরং এক আল্লাহর উপর ভরসা রেখেছিলেন। আল্লাহই নবীজীকে সাহায্য করেছিলেন শয়তানকে দূর করতে। নবী সুলাইমান (আলাইহি-আস-সালাম) ব্যতীত আর কোনো নবীকে জ্বীনদের দিয়ে কাজ করার ক্ষমতা দেননি আল্লাহ ত্রমনকি নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকেও জ্বীন নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা দেয়া হয়নি। ধর্মহীনতা ও দুর্বল ঈমান সকল রোগের উৎস। আল্লাহ বলেন“আমি কোরআনে এমন বিষয় নাযিল করি যা রোগের সুচিকিৎসা এবং মুমিনের জন্য রহমত। গোনাহগারদের তো এতে শুধু ক্ষতিই বৃদ্ধি পায়।” (সূরা আল-ইসরা; আয়াত: ৮২) জ্বীন-শয়তানের আসরে মানুষ মোহাবিষ্ট হয়। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার একটি অসুস্থ বালকের সাক্ষাত পেয়েছিলেন যার ওপর জ্বীনের ভর ছিল। রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছেলেটির দিকে ফিরে জোরে বলেন- “ও আল্লাহর শত্রু, বের হয়ে আসো। ও আল্লাহর শত্রু, বের হয়ে আসো। ছেলেটি দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।” (ইবনে মাজাহ, ৩৫৪৮। আহমদ ৪/১৭১, ১৭২) ইমাম আহমদের ছেলে আব্দুল্লাহ থেকে বর্ণিত, “আমি আমার বাবাকে বললাম- কিছু মানুষ মানুষের শরীরে জ্বীনের ভর করাকে বিশ্বাস করে না। তিনি বলেন- ও আমার সন্তান, তারা মিথ্যা বলছে। আসর করা অবস্থায় অসুস্থ লোকের মুখ দিয়ে জ্বীন কথাও বলতে পারে।” (মাজমু আল-ফাতাওয়া আল-কুবরা, ইবনে তাইমিয়াহ ১৯/১২) শয়তান মানুষের কল্পনাকে কলুষিত করে আর তা সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেনঃ “আমি আপনার পূর্বে যে সমস্ত রাসূল ও নবী প্রেরণ করেছি, তারা যখনই কিছু কল্পনা করেছে, তখনই শয়তান তাদের কল্পনায় কিছু মিশ্রণ করে দিয়েছে। অতঃপর আল্লাহ দূর করে দেন শয়তান যা মিশ্রণ করে। এরপর আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহকে সু-প্রতিষ্ঠিত করেন এবং আল্লাহ জ্ঞানময়, প্রজ্ঞাময়”। (Al-Hajj: 52) যদিও বর্তমানের মনোবিজ্ঞানীরা স্বীকার করতে চায় না যে অনেক সময় মানুষের সাথে থাকা ক্বারিন জ্বীন-শয়তান তার বিপরীত লিঙ্গ হতে পারে সেক্ষেত্রে সেই শয়তানের কুমন্ত্রণায় মানুষ সমকামী হয়।
যা কিছু আত্মাহীন (soulless) তাতেই জ্বীন-শয়তানেরা ভর করতে পারে যেমনঃ মূর্তি। খালিদ বিন ওয়ালিদ এর জ্বীন সংক্রান্ত ঘটনা রয়েছে। যখন 'Uzza নামক মূর্তিটি ধ্বংস করা হয়েছিল, তখন মূর্তির ভেতর থেকে একটি জ্বীন এক কালো মহিলার আকারে বেরিয়ে এসেছিল। খালিদ তার তলোয়ার দিয়ে দুই ভাগে তাকে ভাগ করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: "তারা এই জ্বীনকে Uzza হিসেবে এবাদত করত। এখন আর তারা জ্বীনকে পূজা করবে না। " (Qadi Iyad, ash-Shifa, 1:362; Khafaji, Sharhu’sh-Shifa, 3:287; Ali al-Qari, Sharhu’sh-Shifa, 1:738; Ibn Kathir, al-Bidaya wa’n-Nihaya, 4:316; al-Haythami, Majmau’z-Zawaid, 6:176.) জ্বীন কখন সহজে একজন ব্যক্তির উপর ভর করে? যারা সহজে রাগ করে তাদেরকে জ্বীন-শয়তান সহজেই ভর করে। তাছাড়া যারা জ্বীনসাধনা, জাদুবিদ্যা চর্চা বা এ ধরনের ধ্যান অনুশীলনের মাধ্যমে তৃতীয় চক্ষু সক্রিয় করে তারা তাদের জাগ্রত সত্ত্বাকে বাস্তবতা থেকে সরিয়ে এমন state নিয়ে যায় যেখানে তারা ঘুম ও জাগ্রত-এর মাঝামাঝি অবস্থায় অবস্থান করে। নফসের (Unconscious mind ) ত্ররূপ অসজাগ, অসর্তক ও অবচেতন অবস্থায় জ্বীন-শয়তান ভর করে। মদ ও নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবনে মানুষ তার জাগ্রত মনকে অবচেতন অবস্থায় নিয়ে যায় যখন মানুষের ভালো-মন্দ এর পার্থক্য, বুদ্ধিবিবেচনা ও যুক্তি ক্ষমতা লোপ পায় আর ত্ররূপ অসচেতন অবস্থায় (thought and visual/auditory changes in an altered state of consciousness) জ্বীন-শয়তান মানুষকে পাপ কাজে উদ্বুদ্ধ করে। ত্র কারনে ইসলামে মদ ও নেশাজাতীয় দ্রব্য সেবন করা নিষিদ্ধ। যারা জাদু অনুশীলন করে তারা বিশ্বাস করে যে চন্দ্র ও সূর্য (রাত ও দিন) মানুষের মানসিক কার্যকলাপে প্রভাব বিস্তার করে। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করেছেন তিনি রাতকে সৃষ্টি করেছেন মানুষের ঘুমের জন্য। শয়তান রাতে ছড়িয়ে পড়ে। রাতে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মস্তিষ্কের electrical activity তে অসামঞ্জস্যতা দেখা যায় সুতরাং রাত জাগলে বা নিদ্রাহীন অবস্থায় জ্বীন-শয়তান কুমন্ত্রণা দেয় বেশি।ত্রছাড়া অলস ও আল্লাহর স্মরণে বিমুখ ব্যক্তি যখন মিউজিক শুনে, টিভি দেখে অহেতুক নিজের ইন্দ্রিয়কে অপবিত্র কাজে ব্যস্ত করে রাখে আর নিজের বিচারবুদ্ধিকে কাজে লাগায় না জ্বীন-শয়তান এই ধরনের মানুষ পাপ কাজ করতে উৎসাহিত করে। যেমনঃ টিভিতে আপনার চোখ যা দেখে যে তথ্য আপনার মস্তিষ্কে পাঠাচ্ছে তা ক্বারিন জ্বীন মস্তিষ্কের কোড হ্যাক এবং এনকোড ও ডিকোড করে আপনাকে পাপ কাজকে "ভাল" ভাবতে উৎসাহিত করতে পারে। এটা অনেকটা আয়নার মত। অধিকাংশ সময় বাদ্যযন্ত্রযুক্ত গান ও টিভিতে চলমান ভিডিওচিত্রগুলো এত দ্রুত শোনানো ও দেখানো হয় যে মানুষ তার মস্তিষ্কের বিচার ও যুক্তি ক্ষমতা সে সময় ব্যবহার করতে পারে না আর তাই মানুষ টিভিতে মিথ্যা বা পাপ কাজ দেখলে তা স্বাভাবিক বলে মনে করে। যে ব্যক্তি জেনে শুনে গানবাজনা আর টেলিভিশনের মিথ্যা জগতে নিজেকে ব্যস্ত রাখে সে নিজেই জ্বীনকে কুমন্ত্রণা দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানায়। ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো, জ্বীন যেমন মানুষের মস্তিষ্কের মেমরির কোডকে crack করতে পারে তেমনি জ্বীনউপাসক বিজ্ঞানীরাও নতুন প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছে যা দিয়ে মানুষের মস্তিষ্কের কোডকে bypass করতে সক্ষম। মানুষ তার ইন্দ্রিয়কে ব্যবহার করে টিভি দেখলে, মিউজিকের লিরিকস শুনলে, বা ভিডিও গেমস খেললে তাদের মস্তিষ্কের কোষে মিথ্যা স্মৃতি ভুলে যায় যে আসলে বাস্তবে ঘটে নি। Dr. Robert Hampson এবং Ted Berger ত্রর মত অনেক neuroscientist ও neural engineerরা মস্তিষ্কে নতুন "মিথ্যা" স্মৃতি সংযোজন করতে পারে mathematical model এর মাধ্যমে। এ ক্ষেত্রে মানুষ এমন একটি জীবনের স্মৃতিকে মনে করবে যা তার জীবনে আসলে হয়নি কিন্তু তা কৃত্রিমভাবে মস্তিষ্কে সংযোজন করা হয়েছে। ক্ষুদ্র pacemaker সংযোজন করার মাধ্যমে মস্তিষ্কে ইচ্ছামতন স্মৃতি আপলোড করে নেয়া যায় আর মস্তিষ্ককে রিপ্রোগাম করা যায়। প্রযুক্তির মাধ্যমে এখন একজন মানুষের পুরো স্মৃতিকে সম্পূর্ণ মুছে ফেলা সম্ভব যা অনেক সময় দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে পূর্বের স্মৃতি হারিয়ে ফেলা মানুষের ক্ষেত্রেও ঘটে।সেক্ষেত্রে এই স্মৃতিহীন মানুষকে নতুন করে কৃত্রিম স্মৃতি তৈরি করে দেয়া যায়। AI ও আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্যে algorithm দিয়ে মস্তিষ্কের নিউরনের electrical signals কে অনুবাদ করে নেয়া যায় এবং জানা যায় আগের কিছু স্মৃতি ও তথ্য। মানুষের মনের সিদ্ধান্ত জ্বীন জানে না তবে মানুষ যখন তা প্রকাশ করে তখনই তা জ্বীন জানতে পারে।
আলফ্রেড দাবি করে যে, মানুষের শরীরের জৈবিক কোষের মতো জ্বীনদের জৈবিক শরীর আছে যাতে জটিল প্লাজমা একটি তরল-স্ফটিক অবস্থায় বিদ্যমান থাকে। মানুষের কার্বন-ভিত্তিক শরীরের একটি মস্তিষ্ক যা কোটি কোটি নিউরন এবং নিউরোলজিক্যাল নেটওয়ার্কগুলির দ্বারা গঠিত হয় যা বিপুল সংখ্যক তথ্য এনকোড করতে পারে, অন্যদিকে জ্বীনদের বায়োপ্লাজমস শরীরটি অত্যাধুনিক হ্যালোগ্রাফিক মেমরি সিস্টেমের (holographic memory systems) অধিকারী হতে পারে যা রক্তরস তরল স্ফটিকের (plasma liquid crystal) কাজ করে। অস্ট্রেলিয়ান পদার্থবিজ্ঞানী পল ডেভি এবং কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞান গবেষক হিউম্যান ওল্ড ফিল্ডের মতে জ্বীনদের মানুষের মত শারীরিক অস্তিত্ব আছে। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)কে এক জ্বীন-শয়তান উত্ত্যক্ত করতে আসলে তিনি শয়তানের গলা চেপে ধরেন এবং তখন তার থুথুর শীতলতা নিজের হাতে অনুভব করেন। (মুসনাদে আহমাদ) ত্রই হাদিস থেকে জ্বীন-শয়তানের শারীরিক অস্তিত্বের প্রমাণ পাওয়া যায়। জ্বীনরা তাদের শক্তিকে এক রূপ বা আকার থেকে পরিবর্তন বা রূপান্তর করতে সক্ষম। যেমনঃ কিছু জ্বীন মানুষের বেশ ধারন করতে পারে আবার কিছু জ্বীন পশুর আকার ধারন করতে সক্ষম। জ্বীন অনেক ধরনের হতে পারে: বায়ুর মধ্যে চলাচলকারী একটি প্রকার, একটি সাপের মতো প্রকার, স্কর্পিয়ানস টাইপের, পৃথিবীর পোকামাকড়ের মতো এবং মানবজাতির মতো; মহানবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, ‘তিন ধরনের জ্বীন রয়েছে, একদল যারা সর্বদা আকাশে উড়ে বেড়ায়, আরেক দল যারা সাপ ও কুকুরের আকার ধারণ করে থাকে এবং তৃতীয় দল পৃথিবীবাসী যারা কোনো এক স্থানে বাস করে বা ঘুরে বেড়ায় (বায়হাকি ও তাবরানী)। এক ধরনের জ্বীন পানির নিচে থাকে যারা আল্লাহর আদেশে নবী সুলাইমান (আলাইহি-আস-সালাম) ত্রর জন্য কাজ করত।
জ্বীনদের গায়ের রং, আকার আকৃতি আর গঠন একেক জনের ত্রকেক রকম। এক প্রকার জ্বীন খাটো ও ছোট আকৃতির। ত্রক প্রকার জ্বীন-শয়তানের গায়ের রং নীলচে। কিছু জ্বীন অর্ধেক মানুষ ও অর্ধেক পশু/পাখির ন্যায় (Humanoid/human-animal hybrid)। কিছু জ্বীন উট বা সাপের আকৃতিতে থাকে। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নব্যুয়তের খবর পৌঁছানোর পর মদীনায় জ্বীনরা মুসলমান হয়েছিল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এবং তার কিছু সাহাবীরা একটি গাছের নিচে বসেছিলেন। সাহাবীরা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর দিকে ধীরগতির একটি সাপকে এগিয়ে আসতে দেখেছিলেন এবং সাপটি নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কানের কাছে আসে এবং সেখানে কিছুক্ষণের জন্যই সাপটি হঠাৎ অদৃশ্য হয়ে যায় । নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের বলেছিলেন যে সাপটি একটি জ্বীন ছিল এবং নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে পাঠানো আয়াতগুলোর সর্বশেষ আয়াতটি জিজ্ঞাসা করতে সাপটি এসেছিল কারণ জ্বীনেরা তা ভুলে গিয়েছিল। এখনত্ত মদিনার কিছুটা দূরে অবস্থিত “ওয়াদিউল জ্বীন” যাকে “জ্বীনের আবাসভূমি” বলা হয়।
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন,' নবী মুহাম্মদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ত্রর সাহাবীদের মধ্যে একজন লোক জ্বীনের মধ্যে থেকে একজন লোকের সাথে সাক্ষাত করেছিলেন। তারা লড়াই করে, এবং মানুষ জয়ী হয়। মানুষ তাকে বলল, 'তোমাকে আমার কাছে ছোট ও শুকনা বলে মনে হচ্ছে, এবং তোমার বাহুগুলি কুকুরের সম্মুখ প্যাডের মত দেখাচ্ছে। তোমরা সব জ্বীন কি দেখতে এমন, নাকি কেবল তুমি দেখতে ত্রমন? 'জ্বীন বলল,' না, আল্লাহর কসম, আমি তাদের মধ্যে শক্তিশালী, তবে আমাদেরকে আবার লড়াই করতে দাও, আর যদি আমি আবার পরাজিত হই তবে আমি তোমাকে এমন কিছু শিক্ষা দেব যা তোমার ভাল করবে। 'মানুষ বলল,' উত্তম। 'জ্বীন বলল,' শোন, 'আল্লাহ ব্যতীত কেউই এবাদত করার অধিকার রাখে না। তিনি চিরঞ্জীব, যিনি সকলকে রক্ষা করেন ... '[আয়েত আল কুরসী - আল বাকারাহ ২: ২55]। মানুষ বলল, 'উত্তম।' জ্বীন বলল, 'তুমি তোমার ঘরে এই কথা পাঠ করলে শয়তান বেরিয়ে যাবে যেমন গর্দভ বাতাসের মধ্যে যায়, আর শয়তান আগামীকাল ভোর পর্যন্ত আর ফিরে আসবে না।' (আল-দারিমি দ্বারা, 3247)।
কিছু জ্বীন (Ghouls) আবার খানিকটা মানুষের মত। ইবনে মাসউদ বলেছেন: "আমি সে রাতে জ্বীনকে দেখেছি যে রাতে তারা বাটন আন-নাহলে ত্রসে আল্লাহর রসূলের মাধ্যমে ইসলাম গ্রহণ করেছিল। আমি তাদের Zut ( লম্বাকৃতির সুদানী উপজাতি) এর মত দেখতে ছিল (Musnad (tahqiq: Ahmad Shakir), 6:165, no. 4353; Suyuti, al-Khasaisu’l-Kubra, 1:343, 2:361) । বিভিন্ন দেশে জ্বীনরা মানুষের বেশে থাকে তারা জাতি অনুযায়ী সাধারন মানুষের মত কথা বলে মানুষের ভাষায় আর তাদের গায়ের রং মানুষের মতই।
মানুষের মতই জ্বীনদের মধ্যে বিভিন্ন ধর্ম, প্লাজমা ভিত্তিক সভ্যতা, সমাজ, সম্প্রদায় ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা আছে। জ্বীনের নফস (প্রবৃত্তি) এবং অন্তর আছে। মানুষের মতই জ্বীনদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা আছে, তারাও বিচারের সম্মুখীন হবে এবং কর্ম অনুযায়ী তারা জান্নাত বা জাহান্নাম যেতে পারে। জ্বীনদের একটি দল ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছে তবে তাদের মধ্যে অনেকেই আল্লাহর প্রতি অবিশ্বাসী। জ্বীনরাও বিবাহ করতে পারে, তাদের সন্তান আছে, তাদের মধ্যে নারী-পুরুষ আছে, খাওয়া, খেলা, ঘুম ইত্যাদির প্রয়োজন তাদেরও হয়। জ্বীনদের বংশবিস্তারের হার মানুষের তুলনায় বেশী। শয়তানের ১০ টা সন্তান হলে আদমের ১টা সন্তান হয়। তাদের জগতে নিজস্ব প্রাণী এবং পাখি আছে। প্রাচীন যুগে বিশ্বাস করা হত নাসনাস হল অর্ধেক মানুষ এবং অর্ধেক জ্বীন।তারা “শিক” নামের এক জ্বীন (দানব) ও এক মানুষের বংশধর।
সব জ্বীন শয়তান নয় তবে শয়তান জ্বীনের সংখ্যাই বেশি। মানুষের মত জ্বীনদের মধ্যে ভাল-মন্দ উভয়ই থাকতে পারে। জ্বীনরা মিথ্যা কথা বলতে পারে এবং আল্লাহর কথার অবাধ্য হতে পারে। জ্বীনদের মধ্যেও আল্লাহ জ্বীন-সর্তককারী প্রেরণ করেছেন যারা তাদের আল্লাহর আদেশ মেনে চলার জন্য উপদেশ দিয়েছেন। কিন্তু যেসব জ্বীনরা আল্লাহর অবাধ্য হয়ে ইবলিসের কথা মেনে নিজেদের জগত ও মানুষের জগতকে পরিচালিত করে তারাই “জ্বীন-শয়তান”। তাদের বন্ধু মানুষের জগতের মানুষ-শয়তানেরা। উভয় শয়তানেরা তাদের নেতা ইবলিসের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন ও তার আদেশ পালন করে কারন ইবলিস তার সহযোগী ও জ্বীন মানুষদের নানা মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। যেসব কাফের জ্বীন মানুষকে আল্লাহর পথ থেকে পথভ্রষ্ট করে আর মুসলিমদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী হতে মানুষ-শয়তান, কাফের-মুশরিকদের সাহায্য করে তারাই জ্বীন-শয়তান। মুসলমান জ্বীনেরা মানুষকে অকারনে উত্ত্যক্ত করে না।
জ্বীন বিশালাকৃতির স্থাপত্য তৈরি করতে সক্ষম। বর্তমানের ঐতিহাসিকবিদরা বিশ্বাস করে প্রাচীন সভ্যতার পিরামিড, stoneheng ইত্যাদি ত্রলিয়েনদের (জ্বীনদের) তৈরি। জ্বীনদের আছে ক্ষেপণাস্ত্র, জাহাজ বা সাবমেরিনের মত উন্নত প্রযুক্তি। বর্তমানের বেশির ভাগ আবিষ্কারগুলো জ্বীনদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমেই পেয়েছে বিখ্যাত বিজ্ঞানীরা। জ্বীনরা খুব কম সময়ে দ্রুত গতিতে ভ্রমণ করতে পারে। জ্বীনরা কি মানবসম্প্রদায়ের সাথে যোগাযোগ করতে পারে? মানুষের জগতের কিছু স্থানে জ্বীন জগত থেকে যাতায়াত করার জন্য পোর্টাল রয়েছে। এইসব পোর্টাল ব্যবহার করে সীমালঙ্ঘনকারী জ্বীনরা মানুষের জগতে আসতে পারে।প্রাচীন সুমেরীয়, ইনকা, ব্যাবিলনীয়, মিশরীয় ও ধ্বংসপ্রাপ্ত অনেক জাতি বিশ্বাস করত তাদের দেবতা জ্বীন-শয়তানেরা তারা(star) থেকে পৃথিবীতে আসে আবার তারায় ফিরে যায়। বর্তমানের ufologistদের মতে জ্বীনরা (alien) নিজেদের জগত থেকে বিশেষ ধরনের যান (UFO) দিয়ে পৃথিবীতে যাতায়াত করতে সক্ষম। ধ্বংসপ্রাপ্ত মায়ান সভ্যতার দেবতারা ছিল অন্য জগত থেকে আসা জ্বীন-শয়তান যারা স্পেসশিপ ও স্পেসস্যুট ব্যবহার করত যা তাদের প্রাচীন কাঠে খোদাই করা তথ্য ও হায়ারোগ্লাফিক থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়। বর্তমানে মহাকাশ প্রযুক্তির মত পূর্বের ধ্বংসপ্রাপ্ত উন্নত সভ্যতার শাসকরা তাদের দেবতাদের জ্বীন জগতের সাথে যোগাযোগের জন্য মহাকাশ প্রযুক্তি ব্যবহার করত ও মহাকাশ ভ্রমণ করত।অনেক সময় শোনা যায় জ্বীনরা মানুষকে অপহরণ করে এবং তাদের যানে করে তাদের জগতে নিয়ে যায় আবার পরবর্তীতে কিছু মানুষকে জ্বীনরা পৃথিবীতে ফেরত দিয়ে যায়। Shaykh al-Islam বলেছেন : জ্বীন মানুষকে নিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যেতে পারে কিন্তু বেশির ভাগ সময় সেসব মানুষদের মনে থাকে না কিভাবে তাদের নেয়া হয়েছিল (An-Nubuwwaat 2/804) কিন্তু এই অন্য জগত থেকে জ্বীন-শয়তানের আসার সহজ পথ কোনটি? পৃথিবীর বিভিন্ন মরুভূমি, সমুদ্র ইত্যাদিতে বেশ কয়েকটি পোর্টাল (প্রবেশপথ) ছড়িয়ে আছে যা ব্যবহার করে অন্য জগত থেকে আসা যায় এবং হিমায়িত সমুদ্রের গভীরে, মাটির গভীরে ইত্যাদি স্থানে আছে তাদের ঘাঁটি। যেমনঃ মিশরের পিরামিড, বারমুডা ট্রায়াঙ্গল/ডেভিলস ট্রায়াঙ্গল, মেক্সিকোর Zone of Silence ইত্যাদিতে আছে জ্বীন-শয়তানের আসার পথ এবং তাদের ঘাঁটি।
মুহাম্মদ ইবনুল মূসান্না (রহঃ) ... আমির থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি আলকামাকে জিজ্ঞাসা করলাম জ্বীন-এরজনী (অর্থাৎ যে রজনীতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জ্বীনদের সহিত সাক্ষাৎ হয়েছিল) কি ইবনু মাসউদ (রাঃ) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলেন? তিনি বললেন, আমি ইবনু মাসঊদ (রাঃ) কে জিজ্ঞাসা করেছি, জ্বীন-রজনী তে কি তোমাদের মধ্য হতে কেউ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিল? তিনি বললেন, না! কিন্তু একরাত্রি আমরা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে ছিলাম। হঠাৎ আমরা তাঁকে হারিয়ে ফেললাম। এবং তাঁকে পর্বতের উপত্যকা ও ঘাঁটিসমূহে খোঁজাখুজি করলাম। আমরা ভাবলাম জ্বীনেরা তাকে উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছে কিংবা শুপ্ত ঘাতক তাকে মেরে ফেলেছে। আমরা রাত্রটি দ্বারুন উদ্বেগে কাটালাম। ভোরবেলা আমরা (দেখলাম যে,) তিনি হিরা পর্বতের দিক হতে আসছেন। রাবী বলেন, তখন আমরা বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আপনাকে আমরা হারিয়ে বহু খোঁজাখুঁজি করেছি। কিন্তু কোথাও পাইনি। ফলে দারুন উদ্বেগের মধ্যে আমরা রাত কাটিয়েছিা তিনি বললেন, জ্বীনদের একজন প্রতিনিধি আমাকে নেওয়ার জন্য এসেছিল। আমি তার সঙ্গে গেলাম এবং তাদের নিকট কুরআন পাঠ করলাম। এরপর তারা আমাকে তাদের সঙ্গে করে নিয়ে গেল এবং তাদের নিদর্শন ও তাদের আগুনের নিদর্শনগুলো দেখাল।
এই পৃথিবীতেও কিছু জ্বীন দ্বীপে, পানির নিচে, মরুভূমিতে, পাতালে, গর্তের মধ্যে, কবরস্থানে ও জনশূন্য স্থানে স্থায়ীভাবে বসবাস করে। যেসব অপবিত্র স্থানে ফেরেশতাদের বিচরণ নেই সেখানে জ্বীনদের অবাধ বিচরণ, যেমন: কিছু খারাপ জ্বীন (Ifrit) নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন, পরিত্যক্ত স্থানে কিংবা প্রস্রাব করার জায়গায় থাকে যাদের কাছ থেকে দূরে থাকার জন্য মুসলমানরা টয়লেটে যাওয়ার পূর্বে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করে। আলী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ জ্বীন ও মানুষের গোপন অঙ্গের মাঝখানের পর্দা (barrier) হল পায়খানায় প্রবেশকালে তার “বিসমিল্লাহ” বলা [সুনানে ইবনে মাজাহ , হাদিস নাম্বার:২৯৭ ] রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) যখন পায়খানা—পেশাবের স্থানে প্রবেশের ইচ্ছা করতেন তখন পড়তেনঃ (আরবি) “হে আল্লাহ্! আমি আপনার আশ্রয় প্রার্থনা করছি – পুরুষ শয়তান ও নারী শয়তান থেকে।” (সুনানে আন-নাসায়ী:19) যারা আয়নায় নিজেকে বেশি দেখে; বা বেশিরভাগ সময় নগ্ন থাকে কিংবা বাথরূমে জোরে গান গায় তাদের প্রতি কিছু খারাপ জ্বীন আকৃষ্ট হতে পারে। কিছু জ্বীন-শয়তান মানুষের ঘরে প্রবেশ করে ত্রবং তাদের সাথে পানাহার করে (বিশেষ করে যাদের ঘরে মূর্তি থাকে)।
মানুষ নামায পরতে শুরু করলে কিছু জ্বীন-শয়তান তার চারপাশে ভীড় করে এবং তাকে অপ্রাসঙ্গিক পার্থিব বিষয় স্মরণ করিয়ে নামায থেকে বিমুখ করতে চায়। শয়তান সাধারনতঃ রাতে ছড়িয়ে পড়ে তাই রাতে ভ্রমন এড়িয়ে চলাই ভালো। যদি কেউ “বিসমিল্লাহ” বলে কোন ভালো কাজ শুরু করে তবে শয়তানের প্রভাব থাকে না। প্রিয় বান্দাদের সাথে আল্লাহ ফেরেশতাদের প্রহরী হিসেবে নিযুক্ত করেন।
জ্বীন ও মানবসম্প্রদায়কে বিপথগামী করতে আর পৃথিবীকে নেতৃত্ব দিতে হলে ইবলিসের প্রয়োজন তাদের সম্প্রদায়ে তার অনুগত শাসক বা নেতা নিয়োগ করা যারা সেই জাতিকে পরিচালিত করবে ইবলিসের পরিকল্পনামাফিক। এর একটি উদাহরন হল প্রাচীন মিশর। অন্যান্য ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতির মত প্রাচীন মিশরে জ্বীন-শয়তানেরা যাতায়াত করত এবং প্রাচীন মিশরের ফেরাউনের বদৌলতে সেসময় বনী ইসরায়েলরা পৃথিবীকে নেতৃত্ব দেয়ার কথা ভুলে গিয়ে শয়তানের দেয়া বিনোদন আর প্রযুক্তি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিল। অনেক সময় কাফের জ্বীন-শয়তান মানুষের বেশে শাসকের স্থানে বসে মানবজাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে পথভ্রষ্ট করতে চায়। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলছেন, “আমার পরে এমন সব নেতার উদ্ভব হবে, যারা আমার হেদায়েতে হেদায়েতপ্রাপ্ত হবে না এবং আমার সুন্নাতও তারা অনুসরণ করবে না। তাদের মধ্যে এমন মানুষ থাকবে যাদের দেহ হবে মানুষের আর অন্তর হবে শয়তানের।” (সহীহ মুসলিম, অধ্যায়ঃ ৩৪/ রাষ্ট্রক্ষমতা ও প্রশাসন, হাদিস নম্বরঃ ৪৬৩২] নবী সুলাইমান আঃ এর শাসনামলে এক জ্বীন-শয়তান নবী সুলাইমানের বেশে সিংহাসনে বসে মানুষকে জাদুচর্চা করা শিখিয়েছিল। ত্র ধরনের জ্বীন-শয়তান মূলতঃ “জাদুকর জ্বীন” যারা প্রাচীন মিশরে ফেরাউনের সময়, প্রাচীন ব্যাবিলনে নিমরুদের সময় ও অন্যান্য আল্লাহর অবাধ্য সম্প্রদায়কে জাদুবিদ্যা চর্চা করা শিখিয়েছিল। আল্লাহ বলেন, “তারা ঐ শাস্ত্রের অনুসরণ করল, যা সুলায়মানের রাজত্ব কালে শয়তানরা আবৃত্তি করত। সুলায়মান কুফর করেনি; শয়তানরাই কুফর করেছিল। তারা মানুষকে শিক্ষা দেয় জাদু ....। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১০২] এ ধরনের জাদুবিদ্যা আধ্যাত্মিক জগত, জ্বীন ও মানুষের জগতের ভিন্ন ভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্র, তারকা, stargate, জ্যোর্তিবিদ্যা, horoscope, knot, প্রতীক, অঙ্গভঙ্গি, সংখ্যা ইত্যাদির সাথে জড়িত। হারুত ও মারুত নামে আল্লাহর পাঠানো ফেরেশতারা জাদুকরদের জন্য পরীক্ষাসরূপ যে ফেরেশতারা নিজেরা কখনোই জাদুবিদ্যা শিক্ষা দেয় না তবে যারা শয়তানের কাছ থেকে জাদুবিদ্যা শেখে তারা সেসব ফেরেশতাদের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে শক্তি লাভ করে। জাদুবিদ্যা চর্চায় আধ্যাত্মিক বা মনস্তত্ত্বিক জগতের উপর নক্ষত্র, চন্দ্র ও সূর্যের বিশেষ প্রভাব আছে বলে বিশ্বাস করে জাদুকররা। সূর্যগ্রহণ, চন্দ্রগ্রহণ, অর্ধচন্দ্র, সুপার মুন, নিউ মুন, রক্তিম চন্দ্র- জাদুচর্চার অংশ কারন জাদুচর্চাকারীরা জ্বীন ও মানুষের জগতের চন্দ্র আর সূর্য একত্রীকরণ ত্রর মাধ্যমে শক্তি লাভ করে।। রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন যে,” সূর্য এবং চন্দ্র হল আল্লাহ তা‘আলার নিদর্শনসমূহের দু’টি নিদর্শন, কারো মৃত্যু এবং কারো জন্মের জন্য তাদের গ্রহণ হয় না, এবং আল্লাহ তা‘আলা তাদের দ্বারা তাঁর বান্দাদের ভীতি প্রদর্শন করে থাকেন”। (সুনানে আন-নাসায়ী: 1459) জাদু ও ভাগ্যগণনা কুফর ও শির্ক। আল্লাহ বলেন, “তারা এমন জিনিস (জাদু) শিক্ষা করে, যা তাদের অপকারই করে, কোনো উপকার করে না”। [সূরা আল-বাকারা, আয়াত: ১০২]
আগেও উল্লেখ করেছি জ্বীনদের মধ্যে জাদুচর্চাকারী Shapeshifter জ্বীন-শয়তানরা তাদের অবয়ব পরিবর্তন করতে পারে। নবীজী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সময় এক জ্বীন-শয়তান মানুষের বেশে কুরাইশের মূর্তিপূজারীদের সাহায্য করে।Bani Mudlij গোত্রের প্রধান Suraqah ibn Malik ibn Ju’sham এর বেশে হাজির হয়েছিল শয়তান যে তাদেরকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে লড়াই করার জন্য উৎসাহিত করেছিল। এই ঘটনাটি বদর যুদ্ধের সময় ঘটেছিল। আরবের একটি মূর্তিপূজারী গোত্র নবী(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সাথে একসময় যুদ্ধ করতে নিরুসাহিত হয়ে পড়েছিল। তখন শয়তান মানুষের বেশে তাদের কাছে বলে: "আমি তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে রক্ষা করব যাতে তারা কোন ক্ষতি করতে পারবে না।" তাই আবার মূর্তিপূজারীরা তাদের যুদ্ধ করার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যায়। বদরের যুদ্ধে জ্বীন-শয়তানরা মূর্তিপূজারীদের সাথে যুদ্ধ অংশগ্রহণ করে আর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) ও তারঁ সাহাবীদের সহায়তা করে ফেরেশতারা। বদরের যুদ্ধে আল্লাহ মুসলমানদের জয় দেন। কোন ব্যক্তি যদি কোন জ্বীনকে ক্ষতিকর, আক্রমণাত্নক ও হিংস্র প্রাণীর বেশে মারে তাহলে তাতে দোষ নেই বলেই বিশ্বাস করেন অনেক ইসলামিক স্কলাররা। কারন যেসব জাদুকর জ্বীন নিজের প্রকৃত আকৃতি পরিবর্তন করে অন্য প্রাণীর অবয়ব ধারণ করে বা রূপান্তরিত হয় তারা সীমালঙ্ঘনকারী শয়তান।
জাদুচর্চাকারী জ্বীন-শয়তান ও মানুষ-শয়তান উভয়ই কাফের। তৃতীয় চক্ষু বা পিনাইনাল গ্রন্থির সংক্রিয়তার সাথে জাদুকর কাফের জ্বীন-শয়তানের সম্পর্ক আছে তাই এই সমস্ত “গ্রন্থিতে ফুঁৎকার দিয়ে জাদুকারিনীদের অনিষ্ট থেকে” রক্ষা পাওয়ার জন্য মুসলমানরা “সূরা ফালাক” পাঠ করে। এক প্রকার জাদুকর জ্বীন রয়েছে যারা মানুষকে পথ ভুলিয়ে দেয় এবং যাদের দেখলে নবীজী (সাঃ) আযান দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে। কিছু জাদুকর জ্বীন-শয়তান বয়সকে কমাতে পারে যেমনঃ বয়োজ্যেষ্ঠ থেকে তারুণ্য লাভ করা। তাই জ্বীনউপাসক স্রেলিবিটিরা বিশ্বাস করে জ্বীন সাধনার মাধ্যমে তারুণ্যতা ধরে রাখা সম্ভব। জাদুকর জ্বীন-শয়তানরা জাদুবিদ্যা ও প্রযুক্তিতে খুবই উন্নত। ত্র ধরনের কাফের জ্বীন-শয়তান কাফের মানুষ ও যারা জ্বীনদের উপাসনা করে তাদের প্রযুক্তি ও জ্ঞান দিয়ে সহযোগীতা করে। জাদুকর জ্বীন-শয়তানদের সহায়তায় ত্রখন বিজ্ঞানীরাও epigenetic reprogramming মাধ্যমে আল্লাহর সৃষ্টি কোষকে ম্যানুপুলেশন করে মানুষের বয়স কমাতে সক্ষম যা reverse aging নিয়ে নতুন গবেষণা “The Salk study” থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়। আল্লাহ বলেছেন: “..তাদের প্রত্যেকে কামনা করে, যেন হাজার বছর আয়ু পায়। অথচ এরূপ আয়ু প্রাপ্তি তাদেরকে শাস্তি থেকে রক্ষা করতে পারবে না। আল্লাহ দেখেন যা কিছু তারা করে।” (সূরা আল বাক্বারাহ) ইহুদি Arthur Welsh আর রাইট ব্রাদারসের মত উদ্ভাবকরা জাদুচর্চার মাধ্যমে জ্বীনদের থেকে পাওয়া তথ্য থেকে বিমান আবিষ্কার করেছিল। মহাকাশযান, বিমান, সাবমেরিন, নিউক্লিয়ার অস্ত্র - ত্রসব তৈরির জ্ঞান জ্বীন-শয়তানেরা প্রাচীন ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতিগুলোর জ্বীনউপাসকদেরও দিয়েছিল। জ্বীনরা সৃজনশীল হতে পারে। ত্রজন্য অনেক বিখ্যাত চিত্রশিল্পী, খেলোয়াড়, লেখক, নৃত্যশিল্পী, অভিনেতা, মিউজিশিয়ান, পরিচালক, ডিজাইনার ও অন্যান্য স্রেলিবিটিরা গোপনে জ্বীনসাধনা করে। তারা জ্বীন-শয়তানদের অনুমতি দেয় তাদের দেহে ভর করার। এজন্য জ্বীনউপাসক স্রেলেব্রিটিদের “ডেভিলস হর্ণ” এর মত নানা ধরনের অঙ্গভঙ্গি ত্রবং প্রতীক ব্যবহার করতে দেখা যায় যার মাধ্যমে তারা কারিন জ্বীনকে দেহে ভর করতে আহবান করে। কারণ তারা বিশ্বাস করে জ্বীন-শয়তানরা তাদের দেহে ভর করলে তারা আরো বেশি সৃজনশীল ও পারদর্শী হয়ে উঠে। পাশ্চাত্যে কিছু কাহিনীর প্রচলন আছে যে প্রথমদিকে মিউজিশিয়ান আর বাদ্যযন্ত্রের উদ্ভাবকরা পার্থিব লাভের জন্য শয়তানের উপাসনায় নিজের আত্মাকে নিয়োজিত করে পেয়েছিল বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্র তৈরির তথ্য যেমন Faust, Tartini, Johannes Sebastian Bach, Beethoven ও অন্যান্য। আল্লাহ বলেন: “যার (পার্থিব লাভের) বিনিময়ে তারা নিজেদের আত্মাকে বিক্রি করেছে, তা খুবই মন্দ।” জ্বীন-শয়তান ভর করা সংগীতশিল্পীর গানের কথা backwards করা হলে অনেক সময় Speech recognition systems মাধ্যমে শয়তানের কণ্ঠস্বর ও লুকানো ম্যাসেজ ডিকোড করা যায়। যেমন: Eagle band এর “hotel california” গানের backward করলে হয় "Yes, Satan organized his own religion!" জ্বীন-শয়তানের কণ্ঠস্বর আর মানুষের কণ্ঠস্বরের পার্থক্য বর্তমানের AI software মাধ্যমে বোঝা সম্ভব। জ্বীনসাধক Salvador Dali ও লিওনার্দো দা ভিঞ্চির চিত্রকর্মেও জ্বীন-শয়তানের লুকানো ম্যাসেজ থাকত যা বর্তমানের গবেষকরা ডিকোড করেছে।
মুসলমান জ্বীনেরা কি খায়? হাড়! রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, জ্বীনেরা তার নিকট খাদ্য প্রার্থনা করল। তিনি বললেন, যে সমস্ত প্রাণী আল্লাহর নামে যবেহ হবে, তাদের হাড্ডি তোমাদের খাদ্য। তোমাদের হস্তগত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তা গোস্তে পরিণত হয়ে যাবে, এবং সকল উষ্ট্রের বিষ্ঠা (গোবর) তোমাদের জীবজন্তুর খাদ্য। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমরা ঐ দুটি জিনিস (হাড় এবং গোবর) দ্বারা ইস্তিঞ্জা করবে না। কেননা, ওগুলো তোমাদের ভাই (মুসলমান জ্বীন ও তাদের জানোয়ারদের খাদ্য) [ সহীহ মুসলিম, হাদিস নাম্বার: ৮৯১) অন্যদিকে, ইবলিসের সহযোগী বিতাড়িত জ্বীন-শয়তানরা তাই খায় যা কিছু অপবিত্র, মৃত জীব ও যা কিছু আল্লাহর নামে উৎসর্গ করা হয়নি, যেমন: শূকরের মাংস, আল্লাহর নাম ব্যতীত যেসব মৃত পশু পাখি ইত্যাদি।আর আল্লাহ মুসলমানদের জন্য জ্বীন-শয়তানের খাবার হারাম করে দিয়েছেন কারণ এইসব অপবিত্র খাদ্য খেলে নানা রকমের রোগ হয়; উদাহরণ স্বরূপ, শূকরের মাংসে Yersinia bacteria এবং Trichinella spiralis worm থাকে। আল্লাহ বলেনঃ “মৃত প্রানী, রক্ত, শুকরের মাংস এবং যা আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে উৎসর্গ করা — শুধুমাত্র এগুলোই তিনি তোমাদের জন্য হারাম করেছেন” (আল-বাক্বারাহ ১৭৩) যারা জ্বীনদের মূর্তি বানিয়ে পূজা করে সেসব মূর্তিতে জ্বীন-শয়তানেরা প্রবেশ করে প্রসাদ ও তাদের জন্য উৎসর্গ করা খাদ্য খায়। আরেক ধরনের জাদুকর জ্বীন-শয়তান মৃত মানুষের হাড় আর রক্তপান করে। ত্র ধরনের জ্বীন-শয়তান সুদর্শন পুরুষ বা নারীরূপে রূপান্তরিত হতে পারে যারা গল্প-সিনেমায় "ভ্যাম্পায়ার" নামে পরিচিত। জাদুবিদ্যার (magic, necromancy, sorcery) সাথে যারা জড়িত তারা এই রক্তপায়ী জ্বীন-শয়তানকে উপাসনা করে যেমনঃ Lilith, Hecate দেবী, প্রাচীন মিশরীয় দেবতা Osiris, গ্রীক ভ্যাম্পায়ার Vrykolatios, Ba’al of Ba’al Moloch ইত্যাদি। এই জ্বীনের সাহায্য কামনার উদ্দেশ্যে জাদুচর্চাকারীরা মানুষ বলিদান করে তাদের কাজ হাসিল করে। ত্রসব জাদুবিদ্যা চর্চাকারীরাও তাদের রক্তপায়ী জ্বীন-দেবীর (Blood drinking deity) মত মানুষের রক্তপান করে কারন তারা বিশ্বাস করে রক্তপানে তারা ক্ষমতাশালী হবে ত্রবং তারুণ্য ধরে রাখতে পারবে। ত্র কারনে জাদুচর্চাকারী ওয়ালাচিয়ার শাসক ড্রাকুলা আর মঙ্গোল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা চেঙ্গিস খান ও তাদের বংশধরের মত শাসকরা মানুষের রক্ত পান করত।
অনেক মানুষ বলে জ্বীনের সাথে মানুষের প্রেম হতে পারে। যদি এমন দাবি সত্যি হয় তবে জ্বীনের সাথে মানুষের সম্পর্ক স্থাপন কতটুকু গ্রহণযোগ্য? মানুষ আর জ্বীন ভিন্ন প্রজাতি (species)। সৃষ্টির পূর্বেই আল্লাহ মানুষের জন্য উপযুক্ত জীবনসঙ্গী নির্বাচন করে রেখেছেন যেন সবসময় তারা একে অন্যের অনুভূতি ভাগ করে নেয়। জ্বীনের জন্য জ্বীনসঙ্গী আর মানুষের জন্য মানবসঙ্গী নির্বাচন করা উচিত কেননা আল্লাহ স্ত্রীকে স্বামীর পাজর থকে তৈরি করেছেন তাই স্বামী বা স্ত্রী তাকে ব্যতীত অন্য কারো সান্নিধ্যে প্রশান্তি লাভ করবে না। আল্লাহ বলেছেনঃ “আর এক নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্যে তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের সঙ্গীনীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তিতে থাক এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল লোকদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে। [সূরা আর-রূম, 21]
এখন প্রশ্ন হল জ্বীনদের সাথে মানুষের কি সন্তান থাকতে পারে? আল্লাহই ভালো জানেন! ডিএনএ ম্যাপিং এর মাধ্যমে বর্তমান গবেষকরা জানিয়েছে যে পৃথিবীর অনেকের ডিএনএ সাধারন মানুষের মত নয়; এরাই জ্বীন ও শয়তানের বংশধর যারা Star children, Human-alien hybrid, শয়তানের বংশধর ইত্যাদি নামে পরিচিত। কুরআনে আর হাদিসে “এলিয়েন” বলে কিছু নেই। কিন্তু গবেষণা অনুযায়ী এলিয়েন (an advanced extraterrestrial civilization-GREYS, REPTOIDS : ELs,DRACONIANS, E.T.) আছে। Ufologistরা প্রাচীন hieroglyphics ও অন্যান্য প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিসে প্রমাণ পেয়েছে কিছু ত্রিভুজাকৃতির যান এবং কিছু জ্বলন্ত ডিস্ক (fiery disc - এলিয়েন/ জ্বীনদের যান) ধ্বংসপ্রাপ্ত জাতির কাছে আসা-যাওয়া করত যা এখনো অনেক দেশেই আসা-যাওয়া দেখা যায়। আমাদের জানা উচিত বিজ্ঞানীরা কাদের “এলিয়েন” নাম দিয়েছে? ” এলিয়েন” মানে ভিন্ন জাতি বা ভিন্ন species। মানুষ এবং পশুপাখি থেকে ভিন্ন জাতি হতে পারে জ্বীন এবং ফেরেশতা। আল্লাহর দৃশ্য আর অদৃশ্য অনেক সৃষ্টি আছে। অনেকের মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে মাটির নিচে, পানির নিচে, পৃথিবীতে আর নভোমণ্ডলে দৃশ্যমান এলিয়েন যদি মানুষের চোখের সামনে ঘুরাঘুরি করে বা নাসার হাবল টেলিস্কোপে ধরা পড়ে তাহলে তার কথা কেন কুরআন বা হাদিসে উল্লেখ করা হয়নি? কেমন হবে যদি জানেন যে কুরআনে বর্ণিত জ্বীন আর ফেরেশতাদের বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন নামের এলিয়েন হিসেবে ডাকে। তথ্য অনুযায়ী প্রাচীনকাল থেকেই এইসব extraterrestrial beings বা এলিয়েনরা মানবসভ্যতায় আসা-যাওয়া করত এবং বংশবিস্তার করত। ফেরেশতাদের মানুষের সাথে সন্তান তৈরির প্রয়োজন নেই। গবেষণা অনুযায়ী এসব “মানব এলিয়েন হাইব্রিড” হল অবাধ্য জ্বীন- শয়তানের বংশধর। এইসব শয়তানের বংশধররা পৃথিবীতে শীর্ষ স্রেলিবিটি, খেলোয়াড়, শীর্ষ বিজ্ঞানী, শাসক, শীর্ষ ধনী হওয়ায় মিশনে আসে যেন মানুষ তাদের অনুসরন করে পথভ্রষ্ট হয়। কুইয়ের সুইস বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক জিনোমিক্সের একজন সহকারী প্রফেসর স্টুয়ার্ট ফ্লাইচম্যান এবং তাঁর দল সম্প্রতি একটি দীর্ঘ ৭-বছর প্রাচীন মিশরীয় ফারাওদের জিনোমগুলি ম্যাপ করেছে জানিয়েছে যে আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণকারী প্রাচীন মিশরের ফারাওরা ছিল মানব-জ্বীন হাইব্রিড।আল্লাহ বলেছেনঃ “অতএব তোমরা কি আমার পরিবর্তে তাকে (শয়তানকে) এবং তার বংশধরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করছ? অথচ তারা তোমাদের শত্রু। এটা জালেমদের জন্যে খুবই নিকৃষ্ট বদল” (সুরা কাহফ)। এধরনের মানব-জ্বীন হাইব্রিডদের সাথে শয়তানের যোগাযোগ থাকে ত্রবং তারা ইবলিসের পরিকল্পনায় গোটা মানবজাতিকে পথভ্রষ্ট করে। ত্রসব মানব- জ্বীন হাইব্রিডদের পরবর্তী বংশধররাও DNA, gene ও রক্তের মাধ্যমে জ্বীন-শয়তানের বৈশিষ্ট্য ধারন করে। রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, ‘আদম সন্তানের শরীরে শয়তান রক্তের মত প্রবাহিত হয়।” [সহীহ আল-বুখারী, খন্ড ৫, ৫৭৭৮] মায়ান সভ্যতার মত পূর্বের ধ্বংসপ্রাপ্ত অনেক শক্তিশালী সভ্যতার রাজা ছিল মানব-জ্বীন হাইব্রিড; যারা নিজেদের দেবতার(জ্বীন-শয়তানের) সন্তান বলে বিশ্বাস করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “সাবার রানী বিলকিসের পিতা-মাতার মধ্যে একজন ছিল জ্বীন।"
জ্বীন-শয়তানেরা কিভাবে মানুষের সাথে বংশবিস্তার করতে পারে? কিছু abductee যাদের জ্বীন অপহরণ করে নিয়ে গিয়েছিল কিছু দিনের জন্য তারা তথ্য দিয়েছিল যে তাদের সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করা হয়েছিল।David Huggins, Jose Inacio Alvaro, Pamela Stonebrooke এর মত অনেকেই ত্রমন দাবী করেছে। তবে অনেক জীব শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন ছাড়াই বংশবিস্তার করতে সক্ষম যেমন: yeast। অন্য তথ্য বলছে জ্বীনরা পুরুষদের থেকে শুক্রাণু সংগ্রহ করে, তারপর তা তাদের ডিএনএ এর সাথে মিশ্রিত করে; পরে অনেক নারী অপহরণ করে তাদের মধ্যে গর্ভে কৃত্রিম উপায়ে তা প্রবেশ করায় এতে অনেকে নিজের অজান্তেই গর্ভবতী হয়। এই প্রক্রিয়া বর্তমানের "ক্লোনিং" প্রযুক্তির মত যার মাধ্যমে অনেক বেশি মানব-জ্বীন হাইব্রিড তৈরি করা সম্ভব। ক্লোনিং প্রক্রিয়ায় মৃত মানুষ বা জীবিত মানুষ থেকে কোষ নিয়ে হুবহু তার মতন আরেক জন মানুষের জীবন দেয়া সম্ভব। ক্লোনড ব্যক্তি অনেকটা যমজের ন্যায় যাকে সাধারনভাবে দেখে বুঝার উপায় নাই কিন্তু খুব সূক্ষ্মভাবে দেখলে তফাত পাওয়া যায়। এছাড়া ক্লোনিং প্রক্রিয়ায় এক ব্যক্তির কোষের সাথে জ্বীনজাতির কোষ মিলিয়ে তৈরি যেতে পারে ক্লোনড সে ক্ষেত্রে মানুষের মত চেহারা হলেও ভেতরে থাকে আত্মাহীন শয়তান! আজকাল বিজ্ঞানীরা ক্লোনিং, gene therapy, টেস্টটিউব বেবি, ডিজাইনার বেবি, Genome editing বা genome engineering ইত্যাদি কৃত্রিম উপায়ের মাধ্যমে মানুষের ডিএনএ, gene ও জেনেটিক কোড ম্যানিপুলেশন ও পরিবর্তন করচ্ছে। এতে মানব-জ্বীন হাইব্রিড এর সংখ্যা বাড়ছে!
জ্বীন-শয়তানের জাদুচর্চা থেকে প্রাপ্ত বিশেষ জ্ঞানের আধুনিক নাম “বিজ্ঞান” আর প্রযুক্তি হল সেই জ্ঞানের প্রয়োগ। কি অবাক হচ্ছেন? বিজ্ঞান কম জানলে এই তথ্য শুনে মজা পাবেন আর বিজ্ঞান বেশি বুঝলে বিজ্ঞানকে ভয় পাবেন! বর্তমানে প্রযুক্তির নামে জাদুর উপকরনগুলো মানুষকে মোহাচ্ছন্ন করে রেখেছে। ইংল্যান্ডের লর্ড চ্যান্সেলর Francis Bacon যে ছিল আধুনিক বিজ্ঞানের একজন প্রতিষ্ঠাতা সে জাদুবিদ্যা চর্চা করত। Galileo Galilei, Newton, Nicola tesla, Aristotle, Archimedes, Galileo, Stephen Hawking, Albert Einstein এর মত জনপ্রিয় বিজ্ঞানীরা জাদুবিদ্যা চর্চার মাধ্যমে পেয়েছিল তাদের জ্ঞান। জ্বীন-শয়তানের সাথে যোগাযোগ হওয়া প্রাচীন সব সভ্যতায় উন্নত প্রযুক্তির প্রচলন ছিল। যেমন: প্রথম রোবটিক ড্রোন তৈরি হয় ৩৫০বি.সি. তে।যদিও আপনার বই আপনাকে শেখায় ইহুদি টমাস আলভা এডিসন ছিল বাল্বের আবিষ্কারক কিন্তু প্রাচীন মিশরে ফেরাউনের সময় বিদ্যুৎ ছিল। 2,000 বছর আগেও বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম ছিল প্রাচীন ব্যাবিলন (বর্তমান ইরাক) যা পরে 1938 সালে জার্মান পুরাতত্ত্ববিদ উইলহেম ম্যানিং আবিষ্কার করে।২০০০ বছর আগে ছিল উড়োজাহাজের নকশা।শয়তানের যোগাযোগের পর জুল ভার্ন, বাবাভাঙ্গা, নস্ট্রডেমাস ভবিষ্যত সম্পর্কে কিছু তথ্য পেয়েছিল আর তা জানিয়ে তারা পেয়েছে সমাজে পরিচিতি। পবিত্র কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছেঃ “অনেক মানুষ অনেক জ্বীনের আশ্রয় নিত, ফলে তারা জ্বীনদের আত্নম্ভরিতা বাড়িয়ে দিত।” জ্বীনজাতির কাছে সাহায্য নিতে আল্লাহ বলেননি, সাহায্যকারী হিসেবে এক আল্লাহই যথেস্ট। শুধুমাত্র জ্বীন-শয়তানেরা মানুষ-শয়তানদের সহযোগীতা করে মানবজাতিকে বিপথগামী করে। আল্লাহ বলেছেনঃ “যেদিন আল্লাহ সবাইকে একত্রিত করবেন, হে জ্বীন সম্প্রদায়, তোমরা মানুষদের মধ্যে অনেককে ভুল পথে চালিত করেছ। তাদের মানব বন্ধুরা বলবেঃ হে আমাদের পালনকর্তা, আমরা পরস্পরে পরস্পরের মাধ্যমে ফল লাভ করেছি। আপনি আমাদের জন্যে যে সময় নির্ধারণ করেছিলেন, আমরা তাতে উপনীত হয়েছি। আল্লাহ বলবেনঃ আগুন হল তোমাদের বাসস্থান। তথায় তোমরা চিরকাল অবস্থান করবে; কিন্তু যখন চাইবেন আল্লাহ। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তা প্রজ্ঞাময়, মহাজ্ঞানী”। (সূরা আল-আনাম; আয়াত: ১২৪)
জ্বীনরা মানুষের সাথে কিভাবে তথ্য আদান প্রদান করে? গণিত হল জ্বীনের সাথে কথা বলার সর্বোত্তম উপায়।এলিয়েন বিশেষজ্ঞ আর গবেষকরা দাবি করে যে মানুষের ভাষার পরিবর্তে বৈজ্ঞানিক সূত্র ও গাণিতিক সমীকরণগুলির সাথে extraterrestrial beings (জ্বীনদের) পরিচিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। বর্তমান রেডিও আবিষ্কারের আগে Carl Friedrich Gauss জ্বীনদের সাথে যোগাযোগের জন্য সিগন্যাল পাঠাতে একটি বড় ত্রিভুজ (triangle), তিনটি স্কয়ার সাইবেরিয়ার তুন্দ্রার উপর আঁকার প্রস্তাব দেয়। পরবর্তীতে জ্বীনদের সাথে যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম আবিষ্কার করে বিজ্ঞানীরা।প্রতীকের সাহায্যে জ্বীনদের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব যাকে Symbol Based Language (SBL-the Micro-Macro Cosmic Universal language) বলে। প্রাচীন হিয়েরোগ্রাফি ও বর্তমানে অরগানাইজেশনে ব্যবহৃত প্রতীকগুলো জ্বীনদের সাথে যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত হয়। IMAGE DATA COMPRESSION SYSTEMS ত্রর মাধ্যমে জ্বীন ও মানুষের যোগাযোগের প্রতীকের অর্থ বের করে গবেষকরা। Denise Herzing গবেষণা ইঙ্গিত দেয় যে পশুপাখির ভাষা বুঝতে পারলে জ্বীনের সাথে যোগাযোগ সহজ। আমাদের নবী সুলাইমান (আঃ) কে আল্লাহ ক্ষমতা দিয়েছিলেন জ্বীন এবং পশুপাখির ভাষা বুঝতে পারার। প্রাণী আচরণবিদগণ একটি ডিভাইস (পোষা প্রাণীর অনুবাদক ডিভাইস) আবিষ্কার করেছে যে ডিভাইস দিয়ে মানুষ তাদের পোষা প্রাণীদের সাথে কথা বলতে পারবে। ইতালীয়, ব্রিটিশ ও স্প্যানিশ গবেষকদের একটি গ্রুপ উদ্ভিদের সাথে তথ্য আদান প্রদানের জন্য একটি মাইক্রোসেন্সার নেটওয়ার্ক আর সেন্সিং ডিভাইস তৈরি করেছে, যা দিয়ে গাছ পরিবেশের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বায়ু দূষণ, রাসায়নিক এবং অন্যান্য পরিবেশে পরিবর্তনের প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে তথ্য পাঠাতে পারে। এখন গাছে লাগানো সেন্সরগুলি দিয়ে মানুষ শুনতে পাবে গাছ কি বলছে! বিভিন্ন মাধ্যম, আকৃতি, গণিত ইত্যাদির মাধ্যমে পশুপাখি এবং জ্বীনের সাথে তথ্য আদান-প্রদান করা যায়।যেমনঃ Paul Fitzpatrick এর CosmicOS, Brian McConnell এর LGM ভারচুয়াল মেশিন ইত্যাদির মত কিছু মেশিন জ্বীনদের radio waves আর তথ্য ডিকোড করে।ডাচ কম্পিউটার বিজ্ঞানী Alexander Ollongren “Lincos” নামক একটি যোগাযোগ মাধ্যম তৈরি করে যার মাধ্যমে জ্বীনদের সাথে যোগাযোগ করা যেত। এখন the University of Arizona in Tucson এর গনিতবিদ Carl DeVito একটি নতুন যোগাযোগের মাধ্যম খুঁজে পেয়েছে তার নাম 'plausibly universal scientific concepts' যা দিয়ে এলিয়েনের সাথে আরো বেশি যোগাযোগ করা সম্ভব। Pseudoscientist Semir Osmanagić বসনিয়ায় খুঁজে পেয়েছিল ৩৪০০০ বছর আগের অনেক এিভুজাকৃতির পাহাড় (triangular-shaped hills) যেগুলো কৃত্রিম পিরামিড।বসনিয়ার এই Pyramid of the Sun নামক পিরামিড প্রাচীন মিশরের চেয়েও বড়। পিরামিড হল শক্তিবৃদ্ধকারী (energy boosters) যা সূর্যের মাধ্যমে তথ্য প্রেরণ ও গ্রহণ করতে পারে জ্বীনদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে।। নিকোলা টেসলার একটি তত্ত্ব অনুযায়ী এলিয়েন (জ্বীন) আলোকে তুলনায় দ্রুত ভ্রমণ করে, যার মানে তারা "শক্তি নষ্ট না করে অন্য মহাজাগতিক বস্তুগুলি অতিক্রম করে"। ১৮৮৮ সালে নিকোলা টেসলার "torison fields of standing energy" অনুযায়ী কৃত্রিম পিরামিড ব্যবহার করে জ্বীনদের সাথে যোগাযোগ করতে যায়। জ্বীনদের সাথে যোগাযোগ এবং সনাক্তকরনে Communication with extraterrestrial intelligence (CETI) ব্যবহার করে গাণিতিক ভাষা, pictorial systems যেমন: the Arecibo message, Lincos, Astraglossa, Carl Sagan approach, algorithmic communication systems (ACETI), Carl Devito & Richard Oehrle’s approach, Algorithmic messages এবং computational approaches ; worldwide network এবং scalar-wave প্রযুক্তির ব্যবহার করা হয়। বর্তমান বিশ্বের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়ন দেখে বোঝা যায় জ্বীন-শয়তানদের সাথে মানুষ-শয়তানের সাথে যোগাযোগের সফলতা। তথ্য আদান-প্রদানের জন্য কথা বলার প্রয়োজন হয় না। সাংকেতিক মাধ্যমে কিংবা নেটওয়ার্ক সিস্টেমের মাধ্যমেও তথ্য আদান-প্রদান সম্ভব। তাহলে প্রাচীন মিশরের ফেরাউন ও প্রাচীন ব্যবলিয়নের নিমরুদ কিভাবে জ্বীনদের সাথে যোগাযোগ করত? সেসময়ও জ্বীন-শয়তানেরা কাফের ফেরাউন ও নিমরুদের মত মানুষ-শয়তানদের দিয়েছিল প্রযুক্তি। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের সংখ্যা, প্রতীক, অঙ্গভঙ্গি, তৃতীয় চক্ষু সক্রিয়তার জন্য আধ্যাত্মিক সাধনা হল জ্বীনদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যম। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) এর সময় ইসলাম ধর্মকে চিহ্নিত করার জন্য কোন সংখ্যা বা প্রতীকের ব্যবহার ছিল না। প্রাচীনকাল থেকে জাদুবিদ্যা চর্চার জন্য প্রতীক আর সংখ্যাকে নামের সাথে সংযুক্ত করা হত। আল্লাহর সৃষ্টি একেক সম্প্রদায় আর জাতির ভাষা ভিন্ন ধরনের হতে পারে কিন্তু সংখ্যা, চিহ্ন আর প্রতীকের সিগন্যাল পশুপাখি, জ্বীন আর অন্য সব প্রজাতির কাছে এক।এমনকি পৃথিবীর সব কম্পিউটার চালানোর প্রোগ্রামের কোড তৈরি 0 আর ১ সংখ্যা দিয়ে।সংখ্যা মানে শুধুমাত্র সংখ্যা নয়; এটি একটি অর্থবহ সিগন্যাল (Number symbolism)। বর্তমানের আবহাওয়ার পূর্বাভাস সম্পর্কিত খবরের মত প্রাচীন ব্যাবিলনীয়রাও যখন গ্রহ আর অন্যান্য জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত পূর্বাভাস পর্যবেক্ষণ করত, তখন তারা তা সংখ্যা হিসাবে রেকর্ড করত।প্রাচীন মিশরেও ছিল সংখ্যার ব্যবহার যা গ্রহ, জ্যোতির্বিদ্যা সংক্রান্ত তথ্য আর নীলনদের বন্যার ভবিষ্যদ্বাণী ইত্যাদির জন্য ব্যবহৃত হত।প্রাচীন গ্রিসের গণিতবিদ Pythagoras বিশ্বাস করত যে, সংখ্যাগুলিই সমগ্র মহাবিশ্বের ভিত্তি ছিল,আর সংখ্যা দিয়েই পৃথিবীকে চালানো হয়।এমনকি মিউজিকের(হারমোনি) সূচনা থেকেই তা সংখ্যার আর whole-number ratios এর সাথে জড়িত ছিল।যেমনঃ Amadeus Mozart এর মিউজিকে সংখ্যা ম্যাসেজ বহন করত।তারবিশিষ্ট বাদ্যযন্ত্র (যেমনঃ বেহালা, গিটার ইত্যাদি) একটি বিশেষ pitch সাথে মিউজিকাল নোট তৈরি করে যা octave নামে পরিচিত।এই ভিন্ন ধরনের নোট আর হারমোনি মানুষের ব্রেন আর শরীরে ভিন্নমাত্রার কম্পন (vibrating strings which move in patterns of waves) যা মানুষকে সাধারন ভাবে বিচারবুদ্ধি ব্যবহারে বাধা দেয়।যখন মিউজিকের সংখ্যাগুলি একটি সাধারণ অনুপাত তৈরি করে না, তখন সংশ্লিষ্ট নোটগুলি একটি বিশেষ "বিটস" তৈরি করে যা মানুষের মস্তিষ্ককে বিভ্রান্ত করে তোলে।আর এ কারনে ইসলামে তারবিশিষ্ট বাদ্যযন্ত্র নিষিদ্ধ। Plato আর Pythagoras দুজনেরই দাবি ছিল মিউজিক (হারমোনি) আর জোর্তিবিদ্যার জ্ঞান সংখ্যার সাথে জড়িত।আর Pythagoras এর মতবাদ আজকের আধুনিক বিজ্ঞানকে এগিয়ে নিয়ে গেছে।
জ্বীনদের সাহায্য অনেকেই (গণক, জ্যোতিষী, জ্যোতিষশাস্ত্র চর্চাকারী (zodiac signs), ভবিষ্যদ্বক্তা, ম্যাজিশিয়ান, fortune-teller, জ্যোতির্বিদ, রাশিফল নির্ণয়কারী ও অন্যান্য) নিয়ে থাকে যা ইসলামে শির্কসরূপ। আয়িশাহ রা: বলেন, “কয়েকজন লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট গণকদের (ভবিষ্যতবাণী) সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ওরা কিছুই না। তারা আবার বললে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বললেনঃ ওরা কিছুই না। তারা আবার বললঃ হে আল্লাহর রাসূল! তারা তো কোন সময় এমন কথা বলে দেয়, যা বাস্তবে ঘটে যায়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ তাদের কথা জ্বীন থেকে পাওয়া। জ্বীনেরা তা আসমানের ফেরেশতাদের থেকে) ছোঁ মেরে নিয়ে এসে তাদের বন্ধু গণকদের কানে তুলে দেয়, যেভাবে মুরগী তার বাচ্চাদের মুখে দানা তুলে দেয়। তারপর এ গণকরা এর সঙ্গে আরও শতাধিক মিথ্যা কথা মিলিয়ে দেয়।” [সহীহ বুখারী (তাওহীদ)৩২১০; মুসলিম ৩৯/৩৫, হাঃ ২২২৮,আহমাদ ২৪৬২৪] বর্তমানে বাংলাদেশেও কিছু লোক নিজেকে পীর বলে দাবি করে যারা জ্বীনের সাহায্যে মানুষের কাজ হাসিল করে যা বড় গোনাহের অন্তর্ভুক্ত। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, “যে ব্যক্তি গণক কিংবা ভবিষ্যদ্বক্তার নিকটে যায় এবং সে যা বলে তা বিশ্বাস করে, সে নিশ্চিতভাবেই মুহাম্মাদের ওপর যা নাযিল হয়েছে তা অস্বীকার করে।” (মুসনাদে আহমদ, হাদীস নং ৯৫৩২) আল্লাহ ব্যতীত জ্বীন বা মানুষকে ভাগ্য পরিবর্তন বা কোন কিছুতেই সাহায্যকারী হিসেবে গ্রহণ করা নিষিদ্ধ। নবী সুলাইমান (আলাইহি-আস-সালাম) কখনো নিজে জ্বীনদের আনার জন্য জ্বীনচর্চা বা কারো কাছে দারস্থ হননি, তিনি আল্লাহ থেকে একটি আংটি লাভ করেছিলেন যা দ্বারা জ্বীনদের আল্লাহর আদেশে তিনি কাজ করাতেন; উদাহরনসরূপ, জ্বীনদের দিয়ে নবী সুলাইমান (আলাইহি-আস-সালাম) মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। নবী সুলাইমান (আলাইহি-আস-সালাম) এর সেনাবাহিনীতে জ্বীন, মানুষ ও পশুপাখির ভিন্ন ভিন্ন দল ছিল। শুধুমাত্র কাউকে জ্বীন-শয়তান আক্রমণ করলে শয়তানকে তাড়ানোর জন্য রুকাইয়াসরূপ কুরআন পাঠ করা যায়। তবে অনেক পথভ্রষ্ট কবিরাজরা তাবিজকে রুকাইয়া বলে যা শির্ক কেননা তাবিজের ব্যবহার আসছে অমুসলিমদের রীতি থেকে।রাসূলুল্লাহ্ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি গিরা দিয়ে তাতে ফুঁক দেয়, সে যাদু করলো, আর যে যাদু করলো, সে মুশরিক হলো। আর যে ব্যক্তি গলায় কিছু ঝুলায় [তাবিজ], তাকে সেই জিনিসের উপর ন্যস্ত করা হয়। (সুনানে আন-নাসায়ী; হাদীস: ৪০৭৯) যদি কেউ প্রতিদিন সূরা বাক্কারা, সূরা ফালাক, সূরা নাস, সূরা ইখলাস, আয়তুল কুরসী তেলাওয়াত করে, আল্লাহর রহমতে জ্বীন কোন তাদের উপরে প্রভাব বিস্তার করতে পারে না। আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন: “তোমরা তোমাদের ঘরকে কবরস্থানে পরিণত করো না। নিশ্চয়ই ঐ ঘরে শয়তান প্রবেশ করে না যে ঘরে প্রতিদিন সূরা বাক্কারা তেলাওয়াত হয়।” (মুসলিম এবং আত-তিরমিযী)।
ইবন আবী আল-দুনয়া বর্নিত ত্রক মুজাহিদ বলেছিলঃ যখন সে নামায পড়তে শুরু করে তখন ত্রক বালকের বেশে জ্বীন-শয়তান নামাজের সামনে উপস্থিত হয়, মুজাহিদ তখন জ্বীন-শয়তানটিকে চেপে ধরে তখন জ্বীন-শয়তানটি আর বালকের বেশে উত্যক্ত করা বন্ধ করে। মুহাজিদ বললঃ মানুষ যেমন জ্বীনকে ভয় পায় জ্বীনও তেমনি মানুষকে ভয় পায়। ঈমানদার ব্যক্তিকে জ্বীনরা বেশি ভয় পায়। জ্বীনকে কোন ঈমানদারের ভয় পাওয়া উচিত নয় কারন ভয় পেলেই জ্বীন বেশি আসে....।(Waqayah al-Insan min al-Jinn wa al-Shaytan, Page: 33) ঈমানদাররা জানে আল্লাহর হুকুম ছাড়া জ্বীনরা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারে না। আল্লাহ বলেছেনঃ “এরা যে রয়েছে, এরাই হলে শয়তান, এরা নিজেদের সঙ্গীদের ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করে। সুতরাং তোমরা তাদের ভয় করো না। আর তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাক, তবে আমাকে ভয় কর।” (সূরা আলি-‘ইমরান; আয়াত: ১৭৫) আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, "লা- হাওলা ওয়ালাকুওয়াতা ইল্লা- বিল্লা-হ" অর্থাৎ- আল্লাহর সহযোগিতা ছাড়া কারো ভাল কর্ম করার এবং খারাপ কর্ম থেকে বিরত থাকার সামর্থ্য নেই।(সহীহ মুসলিম, ৬৭৫৭)
© Book: AD-DAJJAL: The World is Full of Lies and Deception -এর অনুবাদ, লেখিকাঃ ফারহানা আকতার, পিএইচডি
Comments
Post a Comment