সূর্যের মঞ্জিল চাঁদের মত নয় বিধায় সূর্যদোয়ের দেশ আছে, কিন্তু চন্দ্রদোয়ের নির্দিষ্ট কোন দেশ নেই:
খালিক,
মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-
وَجَعَلْنَا اللَّيْلَ
وَالنَّـهَارَ اٰيَتَيْنِ. فَمَحَوْنَا اٰيَةَ اللَّيْلِ وَجَعَلْنَا اٰيَةَ النَّـهَارِ مُبْصِرَةً لّتَـبْتَغُوا فَضْلًا مّن رَّبّكُمْ وَلِتَعْلَمُوا عَدَدَ السّنِينَ وَالْـحِسَابَ. وَكُلَّ شَيْءٍ فَصَّلْنَاهُ تَـفْصِيلًا
অর্থ
: “আমি রাত্রি ও দিনকে দুটি নিদর্শন করেছি। অতঃপর নিষ্প্রভ করে দিয়েছি
রাতের নিদর্শন এবং দিনের নিদর্শনকে দেখার উপযোগী করেছি, যাতে তোমরা তোমাদের মহান
রব তায়ালার অনুগ্রহ অন্বেষণ কর এবং যাতে তোমরা জানতে পারো বছরসমূহের গণনা ও হিসাব
এবং আমি সব বিষয়কে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছি।” (পবিত্র সূরা বনী
ইসরাঈল: আয়াত ১২)
অত্র
আয়াতের মধ্যে রাত ও দিনের আবর্তনের মাধ্যমে বছর হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। আর
রাত ও দিনের আবর্তনের বিষয়টি সূর্যের আবর্তনের সাথে সংশ্লিষ্ট। অর্থাৎ এখানে
সৌরবর্ষের বিষয়টি বর্ণিত হয়েছে।
আবার
মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-
هُوَ الَّذِىْ
جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَاءً وَالْقَمَرَ نُوْرًا وَقَدَّرَهُ مَنَازِلَ لِتَعْلَمُوْا عَدَدَ السّنِيْنَ وَالْـحِسَابَ ۚ
অর্থ
: “মহান আল্লাহ পাক যিনি সূর্যকে সৃষ্টি করেছেন উজ্জ্বল আলোকময় করে আর
চাঁদকে স্নিগ্ধ আলো বিতরণকারীরূপে। অতঃপর নির্ধারণ করেছেন এর জন্য মঞ্জিলসমূহ যাতে
তোমরা জানতে পারো বছরগুলোর সংখ্যা ও হিসাব।” (পবিত্র সূরা ইঊনুস:
আয়াত ৫)
অত্র
আয়াতের দ্বারা সৌরবর্ষের পাশপাশি চন্দ্রবর্ষের বিষয়টিও বর্ণিত হয়েছে।
কিন্তু
সৌরবর্ষ ও চন্দ্রবর্ষ গণনার মধ্যে একটি পার্থক্য পরিলক্ষিত হচ্ছে। আর তা হলো-
সূর্যের মঞ্জিল চাঁদের মত নয়।
সূর্যের
আকৃতি সারা মাসব্যাপী একই থাকে। কিন্তু চাঁদের আকৃতি মাসের শুরুতে ধনুকের মতো
বাঁকা (হিলাল) থাকলেও, আকৃতি বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে মাসের মাঝামাঝি সময়ে জ্যোসনা আসে।
আবার জ্যোসনা হতে চাঁদ ক্রমান্বয়ে হ্রাসপ্রাপ্ত হয়ে এক সময় অমাবস্যায় পৌঁছায়।
আর
তাই দেখা যায় সূর্য সারাবছরব্যাপী একই দেশ থেকে প্রথম উদিত হলেও চাঁদ প্রত্যেক
মাসে একই দেশে উদিত হয় না। বরং যে দেশে বা অঞ্চলে প্রথম অমাবস্যা দশায় পৌঁছায় তার
কাছাকাছি দেশ বা অঞ্চল থেকে চাঁদ উক্ত মাসে প্রথম দেখা যায়। কেননা শরীয়ত অনুযায়ী
আকাশে খালি চোখে বাঁকা চাঁদ দেখার মাধ্যমে মাসের শুরু হয়। আর অমাবস্যা দশা থেকে
খালি চোখে দৃশ্যমান উপযোগী হিলাল দশায় পৌঁছাতে প্রায় ১৭-২৪ ঘণ্টা সময় লেগে যায়।
সুতরাং
সউদী আরব থেকে প্রথম চাঁদ দেখা যায় কিংবা পৃথিবীর কোন নির্দিষ্ট দেশ থেকে প্রথম
চাঁদ দেখা যায়, ইত্যাদি ইত্যাদি বক্তব্যগুলো সঠিক নয়।
মহান
আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে সঠিক ইলম ও সমঝ দান করুন। আমীন!
Comments
Post a Comment