সূর্যের সিজদা দেয়ার সম্ভাব্য ব্যাখ্যা:
সূর্য আদৌ কোন নক্ষত্র নয়, যেমনটা কাফিররা শেখায়। নক্ষত্র আল্লাহর সম্পূর্ন ভিন্ন সৃষ্টি। আল্লাহ কুরআনের সবস্থানে চাঁদ সূর্য ,দিন-রাত্রি এবং তারকারাজিকে আলাদাভাবে উল্লেখ করেন। এরা প্রত্যেকেই স্বাধীন সৃষ্টি।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'য়ালা আরশের আলোকে সূর্যালোকের উৎস বানিয়েছেন। এ সংক্রান্ত হাদিস চাঁদের আলোচনায় পূর্বেই উল্লেখ করেছি। সূর্য আকারে চাঁদের চেয়ে কিছুটা বড়, কিন্তু নূনের পৃষ্ঠে সমতলে বিছানো যমীনের তুলনায় অনেক ছোট।আল্লাহ এর জন্য একটি কক্ষপথ নির্দিষ্ট করে রেখেছেন। সূর্য সত্যিই উদিত হয় এবং অস্ত যায়। এটা পার্স্পেক্টিভের ইল্যুশন না আদৌ, যেমনটা কাফিররা বলে থাকে।
সারা আসমান একবার প্রদক্ষিন করে পশ্চিম দিকের কালো পানিতে সেটা অস্ত যায়। সূর্য ডুবে যাবার পর সেটা যমীনের তলদেশে চলে যায়। অতঃপর, তা এক আসমান থেকে অপর আসমানে যেতে থাকে, এর পর সর্বোচ্চ আসমানে পৌছে আল্লাহর প্রতি সিজদাবনত অবস্থায় উদিত হবার জন্য অনুমতি প্রার্থনা করতে থাকে। অতঃপর যমীনের বিপরীত পূর্বে গিয়ে উদিত হয়। হয়ত, পুরো বিষয়টা অনেক দ্রুত হয়, তাই আমরা একদিকে অস্ত অন্যদিকে উদীত হবার মাঝে সময়ের তেমন কোন পার্থক্য অনুভব করিনা। ওয়া আল্লাহু আ'লাম। যা উল্লেখ করলাম এসব কুরআন সু্ন্নাহ ভিত্তিক তথ্য, কোন কাফির মুশরিকদের মনগড়া বানীভিত্তিক কিছু নয়।
আবূ যার (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর পিছনে একই গাধার পিঠে বসা ছিলাম, তখন সূর্য অস্ত যাচ্ছিল। তিনি আমাকে বললেনঃ তুমি কি জানো, এটা কোথায় অস্তমিত হয়? আমি বললাম, আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ভালো জানেন। তিনি বলেনঃ “এটা উষ্ণ পানির এক ঝর্ণায় অস্তমিত হয়” (সূরাহ কাহ্ফঃ ৮৬)। [৪০০২]
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৪০০২
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
আবু যর (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
তিনি বলেনঃ আমি একটি গাধার ওপর নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)ের সাথে ছিলাম। তখন তার উপর একটি পাড়যুক্ত চাদর ছিল। তিনি বলেনঃ এটা ছিল সূর্যাস্তের সময়, তিনি আমাকে বলেনঃ “হে আবু যর তুমি জান এটা কোথায় অস্ত যায়?” তিনি বলেনঃ আমি বললামঃ আল্লাহ এবং তার রাসূল ভাল জানেন। তিনি বলেনঃ সূর্যাস্ত যায় একটি কর্দমাক্ত ঝর্ণায়, সে চলতে থাকে অবশেষে আরশের নিচে তার রবের জন্য সেজদায় লুটিয়ে পড়ে, যখন বের হওয়ার সময় আল্লাহ তাকে অনুমতি দেন, ফলে সে বের হয় ও উদিত হয়। তিনি যখন তাকে যেখানে অস্ত গিয়েছে সেখান থেকে উদিত করার ইচ্ছা করবেন আটকে দিবেন, সে বলবেঃ হে আমার রব আমার পথ তো দীর্ঘ, আল্লাহ বলবেনঃ যেখান থেকে ডুবেছে সেখান থেকেই উদিত হও, এটাই সে সময় যখন ব্যক্তিকে তার ঈমান উপকার করবে না”। [আহমদ]
সহিহ হাদিসে কুদসি, হাদিস নং ১৬১
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
আধুনিক (অপ)বিজ্ঞান অনুযায়ী যেহেতু সূর্য ৯৩মিলিয়ন মাইল দূরে অবস্থিত এবং পৃথিবী সূর্যের তুলনায় ১৩ লক্ষগুন ছোট ,তাই সূর্যের পক্ষে ১৩ লক্ষগুন ক্ষুদ্র যমীনে অস্তমিত হওয়া অসম্ভব ব্যপার। বিষয়টা একেবারেই কল্পনারও অযোগ্য ও অযৌক্তিক। এজন্য কাফিরদের সাথে সুর মেলানো মুসলিমরা বলে,এ আয়াতের দ্বারা অবজারভারের পার্স্পেক্টিভ থেকে সূর্যকে অস্ত হতে দেখার বিষয়টি এখানে বলা হয়েছে।কিন্তু সূর্য কখনোই ফিজিক্যালি অস্তমিত হয় না, সূর্য তার অবস্থানে স্থির রয়েছে। পৃথিবীই বরং ঘূর্ননের দরুন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের ইল্যুশন তৈরি করছে!
এখন প্রশ্ন হচ্ছে এ যুগের মুসলিমরা যেভাবে নিজেদের মত ব্যাখ্যা তৈরি করে নিয়েছে , সাহাবীগন(রাঃ) এ আয়াতের ব্যাখ্যায় কি বলেছিলেন? নিশ্চয়ই সাহাবীরা(রাঃ) হচ্ছেন হক্কের মাপকাঠি। তাদের আকিদা ও ব্যাখ্যাই সর্বাধিক বিশুদ্ধ এবং সত্য।
for detaiks: https://aadiaat.blogspot.com/2019/03/url.html
Comments
Post a Comment