ফেসবুক মুজাহিদ / কীবোর্ড মুজাহিদ বলে কটাক্ষকারী মুরতাদ।
আমি মুফতি আতাউর রহমান বিক্রমপুরী (হাফিঃ)-এর নিচের ফতোয়াটি নিয়ে অনেক দিন ভেবেছি, ভুল পাইনি। আপনারা পেলে জানাবেন ইনশাআল্লাহ্।
ফতোয়া-
"ফেসবুকে যদি কেউ সিয়াম সাধনার দাওয়াত দেয় এবং শরঈ ওজর বশত নিজে আমল করতে না পারে তাকে যদি কেউ ফেসবুক সিয়ামী বলে কটাক্ষ করে তার বিধান কী?
ফেসবুকে যদি কেউ হজের দাওয়াত দেয় এবং অক্ষমতার কারণে যদি নিজে হজ করতে না পারে তাকে যদি কেউ ফেসবুক হাজী বলে কটাক্ষ করে তাহলে তার বিধান কী?
ফেসবুকে যদি কেউ যাকাতের দাওয়াত দেয় এবং নেসাব পরিমাণ মাল না থাকায় যাকাত না দেয় তাকে ফেসবুক যাকাতি বলে যদি কেউ কটাক্ষ করে তাহলে তার বিধান কী?
সবগুলো প্রশ্নের এক কথায় উত্তর হল: যে কোন মুসলমান এভাবে কাউকে কটাক্ষ করলে সে মুরতাদ হয়ে যাবে।
সুতরাং কেউ যদি ফেসবুকে জিহাদের কথা লেখে এবং অক্ষমতার কারণে নিজে জিহাদ না করে তাকে ‘ফেসবুক মুজাহিদ’, ‘ফেসবুক জিহাদী’, ‘কিবোর্ড মুজাহিদ’, ‘কম্বল মুজাহিদ’ বলে কটাক্ষকারীও মুরতাদে পরিণত হবে।
আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ
وَلَئِن سَأَلْتَهُمْ لَيَقُولُنَّ إِنَّمَا كُنَّا نَخُوضُ
وَنَلْعَبُ ۚ قُلْ أَبِاللَّهِ وَآيَاتِهِ وَرَسُولِهِ كُنتُمْ تَسْتَهْزِئُونَ
অর্থঃ আর যদি তুমি তাদের কাছে জিজ্ঞেস কর, তবে তারা বলবে, আমরা তো কথার কথা বলছিলাম এবং কৌতুক করছিলাম। আপনি বলুন, তোমরা কি আল্লাহর সাথে, তাঁর হুকুম আহকামের সাথে এবং তাঁর রসূলের সাথে ঠাট্টা করছিলে?
(সুরা: তাওবা আয়াত: ৬৫)
বিশেষ_দ্রষ্টব্যঃ
কোন নির্দিষ্ট মুসলিম যদি কুফরি করে বসে তাহলে তিনটি বিষয়ের অনুপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তাকে নির্দিষ্টভাবে কাফের বলা যাবেনা।
ক) ইকরাহ (জবরদস্তি) কোন মুসলিম যদি কাফেরদের হাতে বন্দী থাকাবস্থায় প্রাণহানি কিংবা অঙ্গহানির আশঙ্কায় কুফরি করে বসে এবং তার অন্তর ঈমানে ভরপুর থাকে তাহলে তাকে কাফের বলা যাবে না। তবে সে যদি অন্তর থেকেই কুফরি করে কিংবা আশঙ্কা দূর হয়ে যাওয়ার পরও কুফরি থেকে ফিরে না আসে তাহলে সে মুরতাদ বলে গণ্য হবে।
খ) জাহালাত (মূর্খতা) যদি কোন নির্দিষ্ট মুসলিম এমন কোন কুফরি করে যা কুফরি হওয়ার বিষয়টি সমাজে অপ্রসিদ্ধ হওয়ায় তার জানা থাকে না তাহলে এমতাবস্থায় সরাসরি তাকে কাফের বলা যাবে না। বরং তাকে বোঝাতে হবে যে সে কুফরী করছে। যাতে সে তওবা করে ফিরে আসে।
গ) তাবীল (দলিল বুঝতে ভুল করা) যদি কোন নির্দিষ্ট মুসলিম এমন কোন কুফরি করে যা কুফরি হওয়ার বিষয়টি সমাজে অপ্রসিদ্ধ হাওয়ায় তার কাছে অস্পষ্ট হয়ে যায় এবং দলিল তার সামনে উপস্থাপিত হওয়ার পরও সে কোনো ব্যাখ্যা দাঁড় করায় তাহলে এমতাবস্তায় উক্ত মুসলিমকে নির্দিষ্টভাবে কাফের বলা যাবে না। আবার উক্ত কুফরীর ক্ষেত্রে সে সাপোর্ট পায় এমন কোনো কথা কিংবা কাজও তার পক্ষে বলা বা করা যাবে না।
আল্লাহ তাআলা সমগ্র মানব ও জিন জাতিকে সত্যকে সত্য হিসেবে জেনে সত্যের অনুসরণ করার এবং মিথ্যাকে মিথ্যা হিসেবে জেনে তা বর্জন করার তৌফিক দান করুন। আমীন।"
- মুফতি আতাউর রহমান বিক্রমপুরী (হাফিঃ)
জেলে যাবার কিছুদিন আগের ফতোয়া এটি।
আল্লাহ তাকে দ্রুত মুক্ত করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দিন। আমিন।
Comments
Post a Comment