ডাইনোসর নিয়ে যত জল্পনা কল্পনা:

 

 


ডাইনোসর নিয়ে তর্ক বিতর্কের শেষ নেই আজ আমরা বিষয়টাকে ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে পর্যালোচনা করে দেখবো ইনশাআল্লাহ প্রথমেই ব্যাপারে নাস্তিকদের একটি কমন প্রশ্ন এবং তার উত্তরে এক মুমিন ভাইয়ের দালীলিক আলোচনা দেখবো 

নাস্তিক প্রশ্নঃ ডাইনোসররা এই পৃথিবীেত রাজত্ব করে গেছে ১৩৫ মিলিওন বছর; যাদের অস্তিত্ত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে মাটির তলদেশে ফসিল আকারে! এতো বড় একটা প্রানীর ব্যাপারে কুরআন বা হাদিসের কোথাও বলা নাই কেন?

উত্তর: প্রথমে বলে রাখা ভালো যে, কুরআন কোনো বিজ্ঞানের বই নয়। তবে এতে রয়েছে বিভিন্ন চিহ্ন বা আয়াত। কুরআনে যদি সকল প্রাণীর বর্ণনা থাকতো তবে তা বিশাল এনসাইক্লোপিডিয়া হতো! কুরআনে ডাইনোসরের কথা প্রত্যক্ষভাবে নেই মানে এই না যে আল্লাহ তাদের সৃষ্টি করেননি বা উল্লেখ করতে ভুলে(!) গেছেন। (নাউজুবিল্লাহ)

এখন, প্রথমে আপনারা সূরা বাকারার ১৬৪ নং আয়াতটি খেয়াল করুন, "নিশ্চয়ই আসমান জমীনের সৃষ্টিতে, রাত দিনের বিবর্তনে এবং নদীর নৌকাসমূহের চলাচলে মানুষের জন্য কল্যাণ রয়েছে। আর আল্লাহ আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেন এবং তদ্দরা মৃত জমীনকে সজীব করে তুলেছেন এবং তাতে ছড়িয়ে দিয়েছেন সবরকম 'জীবজন্তু'...."

'ডাইনোসর' একটি নতুন শব্দ যা বৃহৎ সরীসৃপজাতীয় প্রাণী এবং জুরাসিক যুগে রাজত্ব করতো। আল্লাহ সকল প্রাণীকে বা জীবজন্তুকে (beast) বুঝাতে 'দা-ব্বাহ' শব্দটি ব্যবহার করেছেন যাদের মধ্যে 'ডাইনোসর' যার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। 'ডাইনোসর' একটি প্রাণীই নতুন কোনো সত্ত্বা নয় যে একে আলাদাভাবে উল্লেখ করতে হবে। এই বিষয় নিয়ে জল ঘোলা করার মানে হয়না

এবার আরেকটি আয়াত লক্ষ্য করুন:"আল্লাহ প্রত্যেক জীবকে পানি দ্বারা সৃষ্টি করেছেন। তাদের কতক বুকে ভর দিয়ে চলে,কত দুইপায়ে ভর দিয়ে চলে,কতক চারপায়ে;আল্লাহ যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন।নিশ্চয়ই আল্লাহ সব করতে সক্ষম।"

(সুরা নূর : ৪৫)

এই আয়াতের মধ্যে সরীসৃপ ডাইনোসরের কথাও আসর, কারণ জুরাসিক যুগের কিছু ডাইনোসর ছিলো দ্বিপদী (যেমন: ওর্নিথোপস) কিছু ছিলো চতুষ্পদী(যেমন: ট্রাইসেরাটপস) বহুপদী, ষষ্ঠপদী বা অষ্টপদী কোনো ডাইনোসরের অস্তিত্ত্ব ফসিল রেকর্ডে নেই

এছাড়া ডাইনোসর বাদে আরো অনেক অদ্ভূত জীব প্রাগৈতিহাসিক যুগে ছিল যেমন: Sabre toothed cat, Baiji white dolphin, Mamoth, Stellers sea cow ইত্যাদি। এরাও কম আশ্চর্যজনক প্রাণী নয়! এদেরও ইউনিক কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা বর্তমান প্রজাতির প্রাণীতে পাওয়া যায়না। এদের কথাও যদি বলতে হয় তবে কুরআনকে হয়তো ত্রিশ পারায় পাওয়া যেত না! পাওয়া যেতো বিল্ডিং আকারে

কুরআন হলো 'শর্ট টেলিগ্রাফিক মেসেজ' প্রয়োজনীয় দরকারি বিষয়গুলো শর্টকাটে বর্ণিত হয়েছে। আর যদি কুরআনেই সকল কিছুর নাম-ধাম, বর্ণনা দেয়া থাকতো তবে মানুষের উন্নত মস্তিষ্কের কি প্রয়োজন ছিলো!! কুরআনের উদ্যেশ্য তো সেটা না। কুরআন হচ্ছে বিশ্বজগতের জন্য এক উপদেশস্বরূপ

শেষে কুরআনের একটা আয়াত দিতে চাই:

" বলুন, তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ কর এবং দেখ, কিভাবে তিনি সৃষ্টিকর্ম শুরু করেছেন। অতঃপর আল্লাহ পুর্নবার সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সবকিছু করতে সক্ষম।"

(আনকাবুত : ২০)

ব্যাপারে এই লেখাটিও পড়া যেতে পারেঃ

"Did the dinosaurs really exist - IslamQA - Shaykh Muhammad Saalih al-Munajjid"

(collected)

উপরের আলোচনাটি সংগৃহিত এবার আমার পক্ষ থেকে কিছু কথা শেয়ার করা হলো

৬ দিনে পৃথিবী সৃষ্টির পর আল্লাহ গাছ, নদী, সাগর, পাহাড়, এবং জীবজন্তু সৃষ্টি করেছেন। পৃথিবীতে মানুষ আসার আগে এই দুনিয়াতে জিনদের বসবাস ছিল।  মানুষের সমাজে যেমন পশু পাখি আছে। জিনদের জগতেও আছে। তখনকার সব কিছুই ছিল দৈত্যাকার। তাদের (জীন জগতের পশু পাখি) নাম দেয়া হয়েছে ডাইনোসর (নিরীহ তৃণভোজী, ঠিক আমাদের গরু, ছাগল ইত্যাদির মতো) এবং ড্রাগন ( হিংস্র মাংশাসী, ঠিক আমাদের বাঘ, সিংহ ইত্যাদির মতো) একই ব্যাপার পাখি এবং জলজ প্রাণীর ক্ষেত্রেও। এমন কি পোকা মাকড়গুলোও ছিল বিশাল আকারের। দীর্ঘদিন পর জিনেরা যখন আল্লাহর অবাদ্ধতায় লিপ্ত হলো তখন আল্লাহ একদল মুমিন জীন ফেরেস্তার দলকে দুনিয়াতে পাঠিয়ে দিলেন এদেরকে শায়েস্তা করার জন্য

দুই দলের ভিতরে চরম যুদ্ধ হলো। নূর(ফেরেস্তা) আগুনের (জীন) যুদ্ধ। তাদের অস্ত্র গুলোও ছিল আলোকরশ্মির অস্ত্র, ঠিক বর্তমানের সাইফাই মুভিগুলোতে যেমনটা দেখায়। এটাই হলো প্রাচীন নিউক্লিয়ার যুদ্ধ। আর হিন্দুরা এটাকেই তাদের ভগবান বা দেবতাদের (অবাদ্ধ জীন) যুদ্ধ বলে আখ্যায়িত করে। যুদ্ধের একপর্যায়ে ফেরেস্তারা বদ জিনদের উপর তারকা (উল্কা) নিক্ষেপ করা শুরু করলো। আর এটাকেই কাফেররা নাম দিয়েছে ষ্টার ওয়ার (তারকা যুদ্ধ / উল্কা ঝড়) এতে জিনরা তো মারা পড়লোই সাথে জীবজন্তুও (ডাইনোসর/ ড্রাগন) নিঃশেষ হয়ে গেলো। জিনদের অপকর্মের ফল সবাইকেই ভোগ করতে হলো। বেশিরভাগ জীন মারা পড়লো। কিছু জীন বিভিন্ন দ্বীপ সমুদ্রে পালিয়ে বেঁচে গেলো

বর্তমানে গবেষকরা এসবেরই ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পাচ্ছে কিন্তু আসল ঘটনাকে চাপিয়ে যাচ্ছে। কারণ এতে তো তাদের প্রভুদের (জীন) লাঞ্ছনার কথা উন্মোচিত হয়ে যাবে।

আগেকার সবকিছুই যে দৈত্যাকার ছিল তা আমরা জানতে পারি আদম (:) এর ৯০ ফিট উচ্চতা থেকে।

আব্দুল্লাহ ইবনে মুহাম্মদ বর্ণনা করেন…… আবূ হোরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত নবী (সা) থেকে, তিনি (সা) বলেন, আল্লাহ তায়ালা আদম () সৃষ্টি করেছেন এই অবস্থায় যে তার উচ্চতা ছিল ষাট হাত / ৯০ ফিট ………… অতঃপর প্রত্যেক ব্যক্তি যে জান্নাতে প্রবেশ করবে আদমের আকৃতিতেই হবে তবে আদম সন্তানের দেহের দৈর্ঘ সর্বদা কমতে কমতে বর্তমান পরিমাপ পর্যন্ত পৌঁছেছে

[সহীহ বুখারী (ইঃফাঃ)--> অধ্যায় ৫০-->

পরিচ্ছদ ২০০০ --> হাদিস নং ৩০৯১]

 

এছাড়াও আদ সামুদ জাতিও আরো বিশালাকার ছিল। সুতরাং প্রাচীন কালের পশু পাখিও অবশ্যই বিশালাকৃতির ছিল। আল্লাহু আলম।

বর্তমানে ডাইনোসর নিয়ে যে তর্ক হচ্ছে, তা হলো একদল মানুষ এটাকে ইসলাম দিয়ে প্রমান করতে চাচ্ছে, আরেকদল মানুষ এটাকে ভুয়া বলে উড়িয়ে দিতে চাচ্ছে। আমি উড়িয়েও দিচ্ছিনা আবার অন্ধভাবে বিশ্বাসও করে নিচ্ছিনা। মধ্যপন্থা অবলম্বন করছি। তবে যেভাবে মুভি কিংবা গল্পতে ডাইনোসরকে উপস্থাপন করা হয়েছে। তেমনটা না হলেও বিশালাকৃতির পশু পাখিতো অবশ্যই ছিল। বাকি তো আল্লাহ তাআলাই ভালো জানেন।








 

Comments

Post a Comment

Popular posts from this blog

পোলিও টিকাতে মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহৃত হয় বানরের কিডনি:

আপনার শিশুকে টিকা দিতে চান? তার আগে সত্য জানুন!